জুন ১২, ২০২১, ০৬:২৫ পিএম
বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে সচরাচর দুই ধরনের শিক্ষার্থী দেখা যায়। কেউ আছে জীবনকে নিজের মত উপভোগ করে যাচ্ছে। তাদেরকে যদি আপনি জিজ্ঞেস করেন ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কি?
উত্তর আসে সময় আসুক কিছু একটা তো করতেই হবে, প্যারা নেয়া যাবে না। আসলে এদের পরিকল্পনা মতো কোন কিছুই নেই। মূল কথা হলো যা হবার তো হবেই। তাদের মধ্যে কিছু শিক্ষার্থী আছে যারা এক্সট্রা কারিকুলার এক্টিভিটির পাশাপাশি পড়ালেখা চালিয়ে যাচ্ছে।
এদের জীবনটা বেশ উপভোগ্যই বলা যায়।
অপরদিকে অন্য একটা দলের নাম হচ্ছে সিজিপিএ পাবলিক। তাদের সবকিছু ঘিরে রয়েছে সিজিপিএ। পরীক্ষায় যদি তারা আশানুরূপ ফল না পায় কে দেখবে এদের কান্না। আসলে পড়াশোনা নিয়ে খুব বেশি সিরিয়াস এসব শিক্ষার্থী। শুধুমাত্র পড়াশোনার ক্ষতি হবে, রেজাল্ট খারাপ হবে বলে কোন প্রকার সংগঠন, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, কোন কর্মকাণ্ডে এরা অংশগ্রহণ করে না।
আজ তুলে ধরার চেষ্টা করবো সিজিপিএ আসলে শিক্ষার্থীদের জন্য কতটা দরকার এসব বিষয়েই। বিশ্ববিদ্যালয়ে একাডেমিক সাফল্যের প্রমাণ হচ্ছে সিজিপিএ। বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় এটি অবশ্যই দরকার আছে।
আমরা মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়ে যখন কলেজে ওঠার ভর্তিযুদ্ধে প্রবেশ করি, সেসময় ভালো কলেজে ভর্তি হতে হলে এসএসসির রেজাল্ট দেখেই প্রাধান্য দেয়া হয়। আমরা জানি বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষার সময় এইচএসসির নম্বরটাও যোগ করা হয় ভর্তি পরীক্ষার ফলাফলের সাথে।
সিজিপিএ প্রথম চাকরির ক্ষেত্রেও অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কেননা তারা আমাকে সিজিপিএ দিয়েই মূল্যায়ন করবেন।
অনেকে আমার কথা শুনে ভাবতে পারেন সিজিপিএ তাহলে কি সব? আসলে বিষয়টি এমন নয় সিজিপিএ অবশ্যই দরকার, তবে দরকার আছে অভিজ্ঞতারও। অনেকের ভালো সিজিপিএ থাকা সত্বেও প্রতিকূল পরিবেশে নিজেকে সামলাতে পারে না।
বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থার প্রেক্ষাপটে চাকরির বাজারে অ্যাকাডেমিক সার্টিফিকেটকে প্রাধান্য বেশি দেয়া হয়। আমরা সবাই মোটামুটি জানি একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে কেউ যদি শিক্ষক হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত হতে চান তাহলে অন্তত স্নাতকোত্তর ডিগ্রী ও ৩.৫০ এর উপরে সিজিপিএ রাখা আবশ্যক।
অনেকে মনে করে মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিতে চাকরি করতে হলে সিজিপিএ অতটা গুরুত্বপূর্ণ নয় , তবে বর্তমানে দেখা যাচ্ছে হাই সিজিপিএ ধারীদের অগ্রাধিকার বেশি দেয়া হচ্ছে। সরকারি ব্যাংকগুলোতে আবেদনের সময় উল্লেখ থাকে ২.০০ এর উপর সিজিপিএ থাকতে হবে।
এমনকি সিভি জমা দেয়ার জন্য মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক এবং স্নাতক তিনধাপের কোনো এক ধাপেও তৃতীয় বিভাগ থাকলে তিনি আবেদনের জন্য গ্রহণযোগ্য হবেন না।
অনেক পেশাদার মানুষজন এবং নিয়োগকর্তারাও সিজিপিএ মাধ্যমে একজন শিক্ষার্থী তার শিক্ষাজীবনে পড়াশোনার প্রতি কতটা আন্তরিক ছিল তার মাপ নির্ধারণ করে থাকেন।
তাই সব শিক্ষার্থীদের উচিত পড়াশোনার পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ডে নিজেকে নিয়োজিত করে অভিজ্ঞতা অর্জন করে যুগের সাথে তাল মিলিয়ে এগিয়ে চলা।
লেখক: আবুল বাশার, শিক্ষার্থী, হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।
আমারসংবাদ/এআই