Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪,

লোকসান গুনছেন মানিকগঞ্জের ফুলচাষিরা

ফেব্রুয়ারি ১৭, ২০১৫, ১২:৫৪ পিএম


লোকসান গুনছেন মানিকগঞ্জের ফুলচাষিরা

 

বিএনপি জোটের ডাকা টানা অবরোধ ও দফায় দফায় হরতালে বিপাকে পড়েছেন মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার ফুলচাষিরা।

পরিবহন সংকটে বাজারে ক্রেতা কম থাকায় আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন তারা। আগামী দিনগুলোতে এ পরিস্থিতি চলতে থাকলে লোকসানের মুখে বাধ্য হয়ে তাদের ফুল চাষ ছেড়ে দিতে হবে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় চাষিরা।

 স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বেশ কয়েক বছর ধরে বাণিজ্যিকভাবে ফুল চাষ করে সচ্ছলতার মুখ দেখছিলেন সিংগাইরের ফুলচাষিরা। আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ায় ফুল চাষে বেশ আগ্রহও ছিল তাদের মাঝে। তবে বিএনপি জোটের ডাকা অবরোধ আর হরতালে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন এ অঞ্চলের ফুলচাষিরা। দেশের নৈরাজ্যকর পরিস্থিতিতে ফুলের বাজারে ক্রেতা কম থাকায় আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন তারা।

 সিংগাইর উপজেলার জয়মন্টপ ইউনিয়নের দুর্গাপুর গ্রামের ফুলচাষি আবদুর রউফ জানান, চলতি মৌসুমে তিনি প্রায় ৫ বিঘা জমিতে গ্ল্যাডিওলাস ফুলের আবাদ করেছেন। জমি তৈরি, সার, বীজ, সেচ, কীটনাশক ও কৃষি শ্রমিক মিলিয়ে বিঘাপ্রতি তার খরচ হয়েছে ৪৫ থেকে ৫০ হাজার টাকা। এ অবস্থায় দেশের চলমান পরিস্থিতিতে এ বছর তাকে বড় ধরনের লোকসান গুনতে হবে।

 একই গ্রামের আরেক ফুলচাষি আওলাদ হোসেন সবুজ জানান, পরিবহন সংকটের কারণে ঢাকায় ঠিকমতো ফুল নেওয়া যাচ্ছে না। বাড়তি ভাড়া গুনে যেকোনোভাবে সেখানে নেওয়া হলেও ক্রেতা কম থাকায় দাম পাওয়া যাচ্ছে না। এমন পরিস্থিতিতে অনেক ফুল বাজারেই ফেলে আসতে হয়।

 ধল্লা ইউনিয়নের বাস্তা গ্রামের ফুলচাষি চান মিয়া জানান, এ বছর তিনি ৫০ বিঘা জমিতে ফুলের আবাদ করেছেন। তার ফুল বাগানে ২৫ থেকে ৩০ জন শ্রমিক কাজ করেন। এদের বেতন ৫ থেকে ৮ হাজার টাকা। হরতাল অবরোধে ঠিকমতো ফুল বিক্রি করতে না পারায় তিনি শ্রমিকদের ঠিকমতো বেতন দিতে পারছেন না। বর্তমানে তিনি প্রায় ৭ লাখ টাকা ঋণে জড়িয়ে গেছেন।

 জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. আলীমুজ্জামান মিয়া জানান, এ বছর সিংগাইরের প্রায় সাড়ে ৩০০ বিঘা জমিতে বিভিন্ন জাতের ফুলের আবাদ হয়েছে। অনেকটা লাভজনক হলেও বর্তমান পরিস্থিতিতে বাজারে দাম ও ক্রেতা কম থাকায় কৃষকরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। এ ছাড়াও ফুল চাষের সঙ্গে জড়িয়ে আছে এ এলাকার অনেকের জীবন-জীবিকা।

 তাই হরতাল-অবরোধের মতো ধ্বংসাত্মক কর্মসূচির দ্রুত অবসান হবে, এমনটাই দাবি স্থানীয় কৃষকদের।