Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪,

ইউটিউব দেখে স্কোয়াশ চাষে সফল মতিউল ইসলাম

হরিরামপুর (মানিকগঞ্জ) প্রতিনিধি

ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০২১, ০১:১৫ পিএম


ইউটিউব দেখে স্কোয়াশ চাষে সফল মতিউল ইসলাম

ইউটিউব থেকে ভিডিও দেখে পরীক্ষামূলকভাবে বিদেশী সবজি স্কোয়াশ চাষে ভালো ফলন পেয়েছেন মানিকগঞ্জের হরিরামপুরের মো. মতিউল ইসলাম সিদ্দিক। ২০ শতাংশ জমিতে আখের সাথে পরীক্ষামূলকভাবে স্কোয়াশের চাষ করেছেন তিনি। আশানুরূপ ফল পাওয়ায় তিনি আগামী বছর বাণিজ্যিকভাবে চাষ করারও পরিকল্পনা করছেন। তিনি উপজেলার ২১নং রামকৃষ্ণপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক। 

মো. মতিউল ইসলাম সিদ্দিক জানান, দেশি-বিদেশি বিভিন্ন ধরনের সবজি চাষের ইচ্ছা ছিলো তার। এ কারণে শিক্ষকতার পাশাপাশি পৈতৃক সূত্রে প্রাপ্ত চার একর জমিসহ আরও ১৬ একর জমি লীজ নিয়ে ২০ একর জমিতে তিনি কৃষি ফার্ম গড়ে তুলেছেন। এতে তার ছেলের বন্ধু মো. জাফরও অংশীদার, যিনি ইতালীয়ান প্রবাসী। ইতালিতে তারও কৃষি ফার্ম রয়েছে।

ইউটিউবে ভিডিও দেখে তিনি এবার স্কোয়াশ চাষে আগ্রহী হন। এরপর তিনি তার অংশীদার জাফরকে বললে জাফর ইতালি থেকে ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়ার সবুজ ও হলুদ রঙের স্কোয়াশের প্রায় ২০০ পিস বীজ পাঠিয়ে দেন। এতে প্রতিটি বীজের মূল্য পড়েছে প্রায় ১০ টাকা।

তিনি বলেন, চারা উৎপাদনের জন্য তিনি প্রথমে একদিন বীজগুলো পানিতে ভিজিয়ে রাখেন। তারপর প্লাস্টিকের কৌটায় ভরে, তার ভিতরে বৈদ্যুতিক বাল্ব জ্বালিয়ে বীজে তাপ দিতে হয়। তাহলে বীজে অঙ্কুরোদগম হয়। এরপর প্লাস্টিকের ছোট কাপে মাটিভর্তি করে একটি কাপে একটি করে বীজ বপন করেন। গাছে ৩/৪টি পাতা গজালেই সেখান থেকে নিয়ে ক্ষেতে লাগান। এই পুরো প্রক্রিয়ায়  ২২-২৫ দিন লাগে। চারা রোপনের এক মাসের মধ্যেই গাছে ফল ধরতে শুরু করে। প্রতিটি গাছে ২০-২৫ পিস স্কোয়াশ হয়। গড়ে প্রতিটি স্কোয়াশের ওজন হয় ১-৩ কেজি।

জানতে চাইলে মতিউল ইসলাম বলেন, স্কোয়াশ উপজেলায় প্রথম আমিই পরীক্ষামূলক চাষ করেছি। আগামী বছর আমি ৪০ শতাংশ জমিতে বাণিজ্যিক ভাবে চাষ করবো। সেক্ষেত্রে দূর-দূরান্তের বাজার ধরতে হবে। 

নতুন সবজি হওয়ায় এলাকায় এর খুব বেশি চাহিদা না থাকায় স্থানীয় বাজারে প্রতিকেজি স্কোয়াশ ১০ টাকা কেজি দরে পাইকারি বিক্রি করেন তিনি। বিক্রির পরিমাণ বেশি না হওয়ায় তিনি নিজের বাড়িতে নিয়মিত স্কোয়াশ খান এবং প্রতিবেশি ও পরিচিতিদেরও দেন। 

স্কোয়াশ চাষে পরিচর্যা খরচ খুবই কম উল্লেখ করে মতিউল ইসলাম বলেন, বীজ, সার, পরিচর্যাসহ এ পর্যন্ত তার মোট পাঁচ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। এ পর্যন্ত তিনি এক হাজার টাকার উপরে বিক্রি করেছেন। সবমিলিয়ে কম করে হলেও তার ৫/৬ হাজার টাকা লাভ হবে। তবে, ভোক্তার পরিমাণ বাড়াতে পারলে স্কোয়াশ চাষ যে খুব লাভজনক সেটি আমি বুঝতে পেরেছি।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আব্দুল গফফার বলেন, স্কোয়াশ হরিরামপুরে এবারই প্রথম চাষ হয়েছে। এটি মূলত কুমড়া গোত্রের একটি মজাদার সবজি। যা মূলত সালাদ ও স্যুপ হিসেবে ব্যবহার করা হয়। বাংলাদেশের অভিজাত এবং বিদেশী নাগরিকদের কাছে স্কোয়াশের চাহিদা উল্লেখযোগ্য হারে বেশি। স্থানীয়ভাবে এটি জনপ্রিয় হলে কৃষক অধিক লাভবান হবে বলে মনে করি। কারণ খুবই অল্প পরিসরে অধিক উপাদন হয়ে থাকে। আমরা চাহিদাভিত্তিক সকল ধরনের কৃষককে পরামর্শ দিয়ে আসছি। আশা করি, আগামী রবি মৌসুমে স্কোয়াশ চাষের বিস্তার ঘটানো সম্ভব।

আমারসংবাদ/কেএস