সেই মরিয়ম মান্নানের মাকে ফরিদপুর থেকে উদ্ধার

মো. মাসুম বিল্লাহ প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২৫, ২০২২, ১২:৪১ এএম

গত ২৭ আগস্ট রাত সাড়ে ১০টার দিকে পানি আনতে গিয়ে নিখোঁজ হয় রহিমা খাতুন। তার পর থেকেই মায়ের সন্ধান করছিলেন রহিমার সন্তানেরা। বৃহস্পতিবার (২২ সেপ্টেম্বর)  ২৭ দিন পর ময়মনসিংহে উদ্ধার করা একটি মরদেহকে নিজের মায়ের বলে দাবি করেছিলেন রহিমা বেগমের তিন মেয়ে। তার একদিন পরই তার সন্ধান দিলো প্রশাসন।  

খুলনার দৌলতপুর মহেশ্বরপাশা বণিকপাড়া থেকে নিখোঁজ রহিমা খাতুনের সন্ধান মিলেছে। শনিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ১০টার দিকে ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার সৈয়দপুর গ্রাম থেকে সুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে।

তিনি নিজেই আত্মগোপনে ছিলেন বলে জানিয়েছেন মামলার প্রথম তদন্ত কর্মকর্তা খুলনার দৌলতপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) লুৎফুল হায়দার।

গত বৃহস্পতিবার (২২ সেপ্টেম্বর) মরিয়ম মান্নান তার মায়ের লাশ পাওয়া গেছে এমন একটি স্ট্যাটাস তার ফেসবুকে ছড়িয়ে পরার পর সর্বস্তরের মানুষ দুঃখ প্রকাশ করেন এবং এর সঠিক তদন্ত দাবী করেন।

কি লেখেছিলো মরিয়াম? 
মরিয়মের প্রাথম স্ট্যাটাস ছিলো-  ‍`আমার মায়ের লাশ পেয়েছি আমি এই মাত্র।‍‍`

তারপর রাত ১২ টা ১ মিনিটে মরিয়ম লিখেন,  আর কারো কাছে আমি যাবো নাহ!কেউকে আর বলবো নাহ আমার মা কোথায়!কেউকে বলবো নাহ আমাকে একটু সহোযোগিতা করুন!কেউকে বলবো নাহ আমার মাকে একটু খুঁজে দিবেন!কেউকে আর বিরক্ত করবো নাহ! আমি আমার মা‍‍`কে পেয়ে গেছি!

শুক্রবার সকাল ১১ টায় ফের মরিয়ম একটি কবরের ছবি দিয়ে লিখেন এটাই তার মায়ের কবর।  এবং এটা তার মা নয় তা প্রমাণ করতে বলেন।  

সর্বশেষ শনিবার রাত সাড়ে ১১ টায় তার মাকে জীবিত পাওয়া গেছে এমন একটি স্ট্যাটাস দিয়ে বলেন, ৭১ টিভি এবং প্রথমআলো থেকে আমাকে কল দিয়ে আমাকে জানালো আমার মা‍‍`কে উদ্ধার করেছে পুলিশ।

খুলনার পুলিশ সুপার কল দিয়ে জানালেন আমার ছোট বোনকে আমার মা‍‍`কে পাওয়া গিয়েছে।
আমার থেকে খুশি এই মুহুর্তে কেউ নেই।আমি এই মুহুর্তে খুলনা যাচ্ছি। 
ধন্যবাদ সকলকে।

উল্লেখ্য, গত ২৭ আগস্ট রাত সাড়ে ১০টার দিকে পানি আনতে বাড়ি থেকে নিচে নামেন রহিমা খাতুন। ঘণ্টা পার হলেও তিনি বাসায় ফিরে আসেননি। পরে মায়ের খোঁজে সন্তানরা নিচে নেমে ব্যবহৃত স্যান্ডেল, গায়ের ওড়না ও কলস রাস্তার ওপর পড়ে থাকতে দেখেন। রাতে সম্ভাব্য সব স্থানে খুঁজেও না পেয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। পরে কয়েকজনের নাম উল্লেখ করে দৌলতপুর থানায় মামলা করেন।

এ ঘটনায় করা মামলার বাদীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। গত ১৭ সেপ্টেম্বর দৌলতপুর থানা থেকে মামলাটি পিবিআইতে স্থানান্তর করা হয়।

১৪ সেপ্টেম্বর মামলাটি পিবিআইতে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত। এরপর প্রক্রিয়া মেনে ১৭ সেপ্টেম্বর নথিপত্র বুঝে নেয় পিবিআই। এখন পর্যন্ত পুলিশ ও র‌্যাব যৌথ অভিযান চালিয়ে সন্দেহভাজন কয়েকজনকে গ্রেফতারও করেছে। কিন্তু এর মধ্যে রহিমা বেগমকে খুঁজে পাওয়ার তথ্য জানাল পুলিশ।

ইএফ