ডিসেম্বরেই সরকার পতন; মানববন্ধনে সাংবাদিক নেতারা

মো. মাসুম বিল্লাহ প্রকাশিত: ডিসেম্বর ৮, ২০২২, ০৩:১৪ পিএম

ডিসেম্বরেই এই অবৈধ সরকারের পতন হবে বলে মন্তব্য করেছেন সাংবাদিক নেতারা। বৃহস্প‌তিবার (৮ ডি‌সেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লা‌বের সাম‌নে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন একাংশের আয়োজনে, পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে নয়াপল্টনে সাংবাদিকদের ওপর পুলিশি হামলার প্রতিবাদে এক মানববন্ধনে এ মন্তব্য করেন তারা।

মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি রুহুল আমিন গাজী বলেন, এই ডিসেম্বর মাসে হানাদার পতন করেছিলাম। এই ডিসেম্বর মাসেই স্বৈরাচারী এরশাদকে পতন করেছিলাম। এই ডি‌সেম্ব‌রেই পেশাজীবী পরিষদ এবং সাধারণ জনগণকে নিয়ে এই স্বৈরাচারী সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।

তি‌নি ব‌লেন, বুধবার (৮ ডিসেম্বর) পুলিশ কমিশনার যেভাবে কথা বলেছে ইতিপূর্বে কোন পুলিশকে এভাবে কথা বলতে দেখিনি। সাংবাদিক  পেশাজীবীরা কেউই এই পুলিশের হাত থেকে রেহাই পাচ্ছে না। পুলিশের বাড়াবাড়ি চূড়ান্ত পর্যায়ে চলে গেছে।

বর্তমানে দেশে কোন গণতন্ত্র নেই মন্তব্য ক‌রে তি‌নি ব‌লেন, এই গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করতে হবে। ওবায়দুল কাদের বলেছে খেলা হবে ইতিপূর্বে কোন সরকারি দলের লোক এইভাবে খেলা হবে বলে নাই। বুধবার (৮ ডিসেম্বর) সেই খেলা আপনারা দেখিয়েছেন। এই খেলার জন্য এদেশের মানুষ আপনাদেরকে বিদায় করবে। পেশাজীবী এবং জনগণ একসাথে ঐক্য করে এই সরকারের বিরুদ্ধে মোকাবেলা করতে হবে। সরকারের পতন নিশ্চিত না করা পর্যন্ত আমরা ঘরে ফিরব না।

প্রেস ক্লা‌বের সা‌বেক সভাপ‌তি শওকত মাহমুদ বলেন, এই সরকার সাংবাদিকদের শত্রু , এখন আন্দোলনের চূড়ান্ত সময় এসেছে। এই জালিম সরকারের পতনে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। বুধবার বিএনপির ওপর পুলিশ যে নির্যাতন চালিয়েছে এটা কোন সভ্য দেশে হতে পারে না। সরকারকে বলবো মত প্রকাশের স্বাধীনতা দিন। আমরা জানি এ সরকারের কাছে বলে লাভ নাই। সরকারের পতন ছাড়া সাংবাদিকদের মুক্তি নাই। আপনারা প্রস্তুত হন সরকারের পতনের পরই আমরা আমাদের বিজয় উদযাপন করতে পারবো।

‌বিএন‌পির ভাইস চেয়ারম্যান এ জেট এম জাহিদ হাসান বলেন, সাংবাদিকরা গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে আহত হয়েছেন। পুলিশের নারকীয় তাণ্ডব উপেক্ষা করে দায়িত্ব পালনকালে যারা অসুস্থ হয়েছেন দোয়া করি তারা অচিরেই সুস্থ হয়ে উঠবেন। এই সরকার দাবি মানবে না, দাবি আমাদেরকে আদায় করে নিতে হবে।

তি‌নি ব‌লেন, ইতিপূর্বে মানুষ যেভাবে রাস্তায় নেমে এসেছিল সেইভাবে রাস্তায় নামতে হবে। যারা রক্ত দিয়েছে সেই রক্তের সাথে অঙ্গীকার করে আমরা রাস্তায় নামবো। রাজপথে যে রক্ত ঝরছে তার প্রতিশোধ হল গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার। একসাথে আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে তবেই গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার হবে এবং এই স্বৈরাচার সরকারের পতন ঘটবে।

বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন সভাপ‌তি এম আব্দুল্লাহ বলেন, স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ সরকার গণমাধ্যমের ওপর হামলা করে ক্ষমতা স্থায়ী করার চেষ্টা করছে। গত ১৪ বছরে ৫০ জন সাংবাদিক হত্যা করেছে। সরকার সাংবাদিক নির্যাতনের মধ্যে ক্ষমতাকে চিরস্থায়ী করার চেষ্টা করছে। এই সরকার এখন মরণ কামড় দিচ্ছে। বুধবার সংবাদকর্মীরা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে রক্ষা করেছে। সাংবাদিকদের উপর হাত দিয়ে কেউ টিকে থাকতে পারে নাই। আপনাকে নিকৃষ্ট স্বৈরাচারের পরিণতি বরণ করতে হবে।

ডিইউ‌জের সভাপ‌তি কাদের গনি চৌধুরী বলেন, বর্তমানে দেশে পুলিশ-আওয়ামী-যুবলীগ-ছাত্রলীগ মিলে হাসিনার স্বৈরতন্ত্র কায়েম করছে। হাসিনা বর্তমানে সরাসরি রাষ্ট্রদ্রোহী কাজ করে চলেছে। হাসিনার বিদায় ছাড়া কোন পথ নাই। বর্তমানে সরকারের দালাল হচ্ছে পুলিশ। পুলিশের দালালদের তালিকা তৈরি করতে হবে। পুলিশ এই ফ্যাসিবাদী স্বৈরাচারী হাসিনার পক্ষে কাজ করে চলেছে। পুলিশকে বলবো গুলি চালানো বন্ধ করুন। সাবধান হয়ে যান, আগামীতে জনগণ আপনাদেরকে ছাড়বে না।

মানববন্ধ‌নে আরও বক্তব্য রা‌খেন জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি কামাল উদ্দিন সবুজ, সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি মুরসালীন নোমানী প্রমুখ।

টিএইচ