পদত্যাগের গুঞ্জন নিয়ে মুখ খুললেন প্রধান উপদেষ্টা

নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশিত: মে ২৯, ২০২৫, ০৯:১৬ পিএম

গত সপ্তাহে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পদত্যাগ নিয়ে ছড়িয়ে পড়া গুঞ্জনের বিষয়ে প্রথমবারের মতো মুখ খুললেন তিনি। 

টোকিওভিত্তিক সংবাদমাধ্যম নিক্কেই এশিয়াকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ড. ইউনূস জানান, বাংলাদেশে থাকাকালে এ বিষয়ে তিনি কোনো মন্তব্য করেননি এবং বিদেশে এসে তা করা তাঁর জন্য অস্বস্তিকর হবে।

বলেন, “বাংলাদেশে থাকাকালে আমি এই প্রশ্নের জবাব দিইনি। সেহেতু এখন যদি জাপানে বলি, সেটা আমার জন্য অনেক অস্বস্তি তৈরি করবে।”

সম্প্রতি ড. ইউনূসের পদত্যাগের গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে। এর প্রেক্ষিতে তিনি বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠক করলেও বিষয়টি নিয়ে প্রকাশ্যে কোনো বক্তব্য দেননি।
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে নতুন প্রস্তাব

সাক্ষাৎকারে ড. ইউনূস বাংলাদেশের আমদানি-রপ্তানি সম্পর্কেও কথা বলেন। তিনি জানান, রপ্তানির ওপর ৩৭ শতাংশ শুল্ক আরোপের সম্ভাবনার মুখেও বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রকে তুলা, তেল ও গ্যাস কেনার প্রস্তাব দিয়েছে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর নীতির প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, “আমরা মধ্য এশিয়া, ভারতসহ বিভিন্ন দেশ থেকে তুলা কিনি। তাহলে যুক্তরাষ্ট্র থেকেও কেনা যেতে পারে না? এতে তাদের সঙ্গে আমাদের বাণিজ্য ঘাটতি কমে আসবে।”

নিক্কেই-এর প্রতিবেদনে বলা হয়, গত জুন থেকে চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রে ৬.৮ বিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে এবং আমদানি করেছে ২.৫ বিলিয়ন ডলারের পণ্য। এর মধ্যে ৩৬১ মিলিয়ন ডলার ছিল তুলা। বর্তমানে বাংলাদেশ বছরে ৭.৯ বিলিয়ন ডলারের কাঁচা তুলা আমদানি করে, যার একটি অংশ আসে উজবেকিস্তান ও তুর্কমেনিস্তানসহ মধ্য এশিয়ার দেশগুলো থেকে।

ড. ইউনূস আরও বলেন, বাংলাদেশ জ্বালানি তেল সাধারণত মধ্যপ্রাচ্য থেকে আমদানি করলেও তা যুক্তরাষ্ট্র থেকেও আমদানি করা সম্ভব। যদিও এখনো বাণিজ্য আলোচনার সময়সীমা এবং সম্ভাব্য শুল্ক সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

তিনি জোর দিয়ে বলেন, “আমরা পরিস্থিতিকে কোনো হুমকি হিসেবে দেখছি না, বরং এটিকে একটি সুযোগ হিসেবে দেখছি।”

বিদেশে পাচার হওয়া অর্থ নিয়ে মন্তব্য

সাক্ষাৎকারে দেশের অর্থনীতি নিয়েও গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য করেন ড. ইউনূস। তিনি জানান, পূর্ববর্তী সরকার, শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের সময় বাংলাদেশ থেকে প্রায় ২৩৪ বিলিয়ন ডলার বিদেশে পাচার হয়েছে।

তিনি বলেন, দেশের অভ্যন্তরে ইতোমধ্যে ১১-১২ বিলিয়ন ডলারের সমপরিমাণ অর্থ চিহ্নিত ও জব্দ করা হয়েছে। এই অর্থ থেকে দুটি সম্পদ তহবিল গঠনের পরিকল্পনা করছে বর্তমান সরকার, যা শিক্ষা ও স্বাস্থ্যখাতে ব্যয় করা হবে।

“এই অর্থ দরিদ্র মানুষের জীবন বদলে দেবে এবং তরুণদের উদ্যোক্তা হতে সহায়তা করবে,” বলেন ড. ইউনূস।

ইএইচ