বাস কম, ভাড়া বেশি—মহাখালী টার্মিনালে ঘরমুখো যাত্রীদের ভোগান্তি

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা প্রকাশিত: জুন ৬, ২০২৫, ০২:১০ পিএম

ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে রাজধানীর প্রধান বাস টার্মিনালগুলোতে ঘরমুখো মানুষের ভিড় বাড়ছে। ব্যতিক্রম নয় মহাখালী বাস টার্মিনালও। 

শনিবার সকাল থেকেই সেখানে যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে। কিন্তু যাত্রীদের তুলনায় বাসের সংখ্যা কম থাকায় দেখা দিয়েছে চরম ভোগান্তি।

শুক্রবার সকাল ৭টা থেকেই মহাখালী টার্মিনালে আসতে শুরু করেন ঈদে বাড়ি ফেরা যাত্রীরা। কেউ পরিবার নিয়ে, কেউ একা ছুটছেন প্রিয়জনের কাছে ঈদ উদযাপন করতে। তবে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থেকেও অনেকে নির্ধারিত সময়ে বাস পাচ্ছেন না।

ময়মনসিংহগামী যাত্রী মো. নজরুল ইসলাম বলেন, “সকাল ৭টার দিকে এসেছি। আমার বাস ছিল ৯টায়, এখন ১১টা পেরিয়ে গেলেও বাসের দেখা নেই।”

টাঙ্গাইলগামী যাত্রী নুপুর আক্তার বলেন, “বাচ্চা, ব্যাগ সব নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতে পা ব্যথা হয়ে গেছে। ৫ দিন আগে টিকিট কাটলেও এখনো বাস আসেনি।”
ভাড়া বাড়তি, তদারকি কম

একদিকে বাসের সংকট, অন্যদিকে ভাড়া নিয়ে চলছে অতিরিক্ত আদায়ের অভিযোগ। নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে ২০০ থেকে ৩০০ টাকা বেশি নেওয়া হচ্ছে বলে জানাচ্ছেন যাত্রীরা।

আরাফাত হোসেন নামে এক বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মী বলেন, “৩৫০ টাকার ভাড়া ৬০০-৭০০ টাকা নিচ্ছে। প্রতিবার ঈদেই এমন হয়রানির মধ্যে পড়তে হয়। টার্মিনালে তদারকির অভাব আছে। ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান হলেও তার প্রভাব খুবই সামান্য।”

মহাখালী বাস টার্মিনালের এক সুপারভাইজার নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, “বাসের সংখ্যা কম, অনেক বাস রাস্তায় যানজটে আছে বা যান্ত্রিক সমস্যায় ভুগছে। চালকের সংকটও আছে। এছাড়া নানা অজুহাতে ঈদের সময় ভাড়া বাড়ানোর অভিযোগ পুরোপুরি অস্বীকার করা যায় না। তবে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি।”

অভিযান ডিএনসিসির

যাত্রী দুর্ভোগ ও অতিরিক্ত ভাড়া আদায় রোধে ঈদের আগের দিন সকালে অভিযান চালায় ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। অভিযানে নেতৃত্ব দেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। অভিযানকালে বেশ কয়েকটি পরিবহন কোম্পানিকে জরিমানাও করা হয়েছে।

প্রতিবার ঈদের সময় এমন ভোগান্তির চিত্র সামনে এলেও স্থায়ী কোনো সমাধান চোখে পড়ে না—এমনটাই বলছেন যাত্রীরা। তাদের প্রত্যাশা, কর্তৃপক্ষ আগেভাগেই ব্যবস্থা নিলে ঈদের আনন্দের যাত্রাপথটা একটু হলেও স্বস্তির হতো।

ইএইচ