মুরাদনগরে ভিডিও ছড়ানোর নেপথ্যে ‘দুই ভাইয়ের বিরোধ’

কুমিল্লা প্রতিনিধি প্রকাশিত: জুলাই ৪, ২০২৫, ০২:৪১ পিএম

কুমিল্লার মুরাদনগরে এক নারীকে ‘ধর্ষণ’ ও শারীরিক নিপীড়নের ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার নেপথ্যে ছিল দুই ভাই—শাহ পরান ও ফজর আলীর পারিবারিক বিরোধ। বড় ভাই ফজর আলীর ওপর প্রতিশোধ নিতে পুরো ঘটনা সাজিয়েছিলেন ছোট ভাই শাহ পরান।

শুক্রবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‍্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে র‍্যাব-১১-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এইচ এম সাজ্জাদ হোসেন এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার বাহেরচর গ্রামের শহিদের দুই ছেলে—ফজর আলী ও শাহ পরান—দীর্ঘদিন ধরে একই নারীর প্রতি আগ্রহ প্রকাশ করছিলেন। দুই মাস আগে পারিবারিক বিরোধের জেরে এক সালিশে বড় ভাই ফজর আলী প্রকাশ্যে শাহ পরানকে চড় মারেন। এই অপমানের প্রতিশোধ নিতেই শাহ পরান পরিকল্পিতভাবে ঘটনাটি ঘটান।

র‍্যাব জানায়, সালিশের কিছুদিন পর ভুক্তভোগী নারীর মা ফজর আলীর কাছ থেকে সুদে ৫০ হাজার টাকা ধার নেন। এরপর ২৬ জুন রাতে ওই নারী বাড়িতে একা থাকার সুযোগে সুদের টাকা চাইতে গিয়ে ফজর আলী তার শয়নকক্ষে প্রবেশ করেন। তখন পূর্বপরিকল্পিতভাবে শাহ পরান ও আরও কয়েকজন—আবুল কালাম, অনিক, আরিফ, সুমন, রমজানসহ অজ্ঞাতনামা ৮–১০ জন—ঘরের দরজা ভেঙে প্রবেশ করে ওই নারীকে শারীরিক নির্যাতন, শ্লীলতাহানি ও অশ্লীল ভিডিও ধারণ করে তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়।

সংবাদ ব্রিফিংয়ে র‍্যাব জানায়, ঘটনার পর অভিযুক্তরা আত্মগোপনে চলে যান। পরে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় মূল হোতা শাহ পরানকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি অপরাধ স্বীকার করেছেন। তিনি জানান, প্রতিশোধের অংশ হিসেবে ইমো অ্যাপে বার্তা পাঠিয়ে অন্যদের ডেকে এনে মব তৈরি করেন।

র‍্যাব জানায়, শাহ পরানকে মুরাদনগর থানায় হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্যান্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

উল্লেখ্য, ২৬ জুন দিবাগত রাতে ঘটনার ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে। পরে ২৯ জুন ভুক্তভোগী নারী বাদী হয়ে মুরাদনগর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে এবং পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়ের করেন। ইতোমধ্যে ধর্ষণে অভিযুক্তসহ ৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

ইএইচ