রূপগঞ্জে ভূয়া দলিলের মাধ্যমে জমি দখলের চেষ্টা

রূপগঞ্জ প্রতিনিধি প্রকাশিত: আগস্ট ৮, ২০২২, ০৭:৫২ পিএম

রূপগঞ্জে ভূয়া দলিলের মাধ্যমে একটি প্রচারক চক্র দুই সংখ্যালগু পরিবারের ৮২ শতাংশ জমি দখলের চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রতারক চক্রের হুতা নাটোর জেলার শের মোহাম্মদ সরকার। সে তার নিজ নামে চার চারটি ভুয়া দলিল করে জমি দখলের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ঘটনাটি ঘটেছে রূপগঞ্জ উপজেলার গোলাকান্দাইল ইউনিয়ন আমলাব মৌজার কালী এলাকায়। এ ঘটনায় রূপগঞ্জ থানায় একটি সাধারণ ডাইরি করেছে অমল চন্দ্র দাস।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার গোলাকান্দাইল ইউনিয়ন আমলাব মৌজার কালী এলাকায় মৃত শরৎ চন্দ্র দাসের ছেলে অমল চন্দ্র দাস ও বলরাম চন্দ্র দাসের ছেলে শ্রী বিমল চন্দ্র দাসের সি এস ও এসএ ৩০৯, ৪৭৩, ৫০৫,  আর এস ৩৮৪, ৬৮৬, ৭৪০ দাগে মোট ৮২ শতাংশ জমির ওয়ারিশ সূত্রে মালিক হয়ে ভোগ দখলে আছেন। এমন কি তাদের নামে খাজনা খারিজ করা রয়েছে।

এমতাবস্থায় একটি জালিয়াতি চক্র তাদের পৈতৃক সম্পত্তি ৮২ শতক জমির জ্বাল দলিল করে বেদখল নিতে অমল চন্দ্র ও শ্রী বিমল চন্দ্র দাস পরিবারকে বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি করে আসছে। জানা যায় প্রতারক চক্রের হুতা শের মোহাম্মদ সরকার (৮২) নাটোর জেলার গুরুদাসপুর থানা ধারাবারিয়া ইউনিয়নের শিধুলী এলাকার মৃত হায়তুল্লা সরকারের ছেলে।

অমল চন্দ্র দাস আরো বলেন, আমার বাব দাদার সম্পত্তি আমাদের খাজনা খারিজ করা রয়েছে। আমার জানা মতে আমাদের সম্পত্তির আজ পর্যন্ত কোন ঝামেলা নেই। কয়েক দিন আগে রূপগঞ্জ মটেরঘাট এলাকার মেহেদী হাসান রিপন শের মোহাম্মদ সরকার নামিও একটি দলিল দিয়ে নাম জারি করতে গোলাকান্দাইল ইউনিয়ন ভূমি অফিসে পাঠায়। ভুমি অফিসের নায়েব হাবিবুর রহমান সরেজমিনে তদন্ত করতে আসলে বেরিয়ে আসে তাদের জাল-জালিয়াতির সকল তথ্য।

জানা যায়, শের মোহাম্মদ সরকার অমল ও বিমলদের জমির নামজারি করতে দিয়েছে। তার দলিলের সূত্র মতে জানা যায় ১৯৬৩ সালে ১৪৫২০ নাম্বার সাব কবলা দলিলে রাজশাহীর সদর সাব রেজিস্ট্রার অফিসে দলিল করা হয়েছে। অমল চন্দ্র দাসের অভিযোগের ভিত্তিতে নায়েব হাবিবুর রহমান রাজশাহী সদর সাব রেজিস্ট্রার অফিসে তদন্ত রিপোর্ট চেয়ে চিঠি দেন। বালাব বইয়ের সঠিক তথ্য গোপন রেখে শরৎচন্দ্র ও বলরাম চন্দ্র দাসের নাম বসিয়ে এই প্রতারক চক্র সাব রেজিস্ট্রার স্বাক্ষরিত একটি প্রতিবেদন ডাকযোগে রূপগঞ্জ ভূমি অফিসে পাঠিয়ে দেন। তদন্ত প্রতিবেদটি যাচাই করতে অমল ও বিমল রাজশাহী সদর সাব রেজিস্ট্রার অফিসে যান এবং সরকারী নিয়ম অনুযায়ী তদন্ত করতে ১৪৫২০ দলিলের ভলিওম নং ১৫১, পাতা নং-১৬২-১৬৮ গ্রহিতা আব্দুর রহমান, পিতা- সেলি শেখ, সাং আয়শাবাদ, থানা মুর্শিদাবাদ, হাল সাং কর্ণাহার, পবা, জেলা রাজশাহী ও দাতা ১। নরেন্দ্র নাথ, পিতা-রাম চন্দ্র, ২। নিমাই, পিতা গিরিশ। নাবালকের পক্ষে ৩। নারায়ণ, ৪। নিলবড় শিনা, ৫। শুবাশিনী দাশ, ৬। ললিত মোহন, ৭। লিলুরাম বালা দাশী অত্র অফিসে রক্ষিত বালাম বইয়ে শরৎ চন্দ্র দাস গং ও বলরাম চন্দ্র দাস গং কারোই নাম পাওয়া যায়নি।

উল্লেখ্য, তপসীলি পরিচয় জেলা রাজশাহী, থানা গোদাগাড়ী, মৌজা -ভাগাইল, সাবেক দাগ ১৮৫৪, ৫৮৫, ৫৬৮, ৫৬৯সহ আরো দাগ আছে, জমির পরিমাণ ৮.২৯৫০ শতক।

সাব-রেজিস্ট্রার অফিসের ৫০৭ নং লাইসেন্স প্রাপ্ত দলিল লেখক মোঃ রুহুল আমিনের স্বাক্ষরিত প্রতিবেদনে অন্য দাতাদের নাম ও গ্রহীতাদের নাম ঠিকানা উল্লেখ করে প্রত্যয়ণ পত্র প্রদান করে।

অমল চন্দ্র দাস বলেন, আমরা সংখ্যালঘু তাই আমাদের সম্পত্তি আত্মসাৎ করতে প্রতারক চক্র তৎপর হয়ে উঠেছে, আমরা রাজশাহী সদর সাব রেজিস্ট্রার অফিসের দলিলের বালাম বইয়ের সঠিক তথ্য গোপন করার সাথে জড়িত প্রতারক চক্রের বিচার দাবি করছি।

কেএস