বিশ্বের ১০০ শীর্ষ সমুদ্রবন্দরের তালিকায় ৬৪তম চট্টগ্রাম বন্দর

মো. মাসুম বিল্লাহ প্রকাশিত: আগস্ট ১৯, ২০২২, ১০:৫০ এএম

দেশের অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি চট্টগ্রাম বন্দর বৈশ্বিক কন্টেনার হ্যান্ডলিংকারী বন্দরের তালিকায় ৩ ধাপ এগিয়ে ৬৪তম স্থান অর্জন করেছে। ২০২১ সালে বার্ষিক কন্টেনার হ্যান্ডলিংয়ের পরিপ্রেক্ষিতে করা লয়েড’স লিস্টে ৩ ধাপ অগ্রসর হয় চট্টগ্রাম বন্দর।

বিশ্বের বন্দর এবং শিপিং সংক্রান্ত প্রাচীনতম জার্নাল লয়েড’স প্রতিবছর বিশ্বের কন্টেনার হ্যান্ডলিংকারী বন্দরগুলোর কার্যক্রমের হিসেব থেকে ১০০ বন্দরের একটি তালিকা প্রকাশ করে। ২০২১ সালের কার্যক্রমের উপর প্রণীত তালিকা বৃহস্পতিবার (১৮ আগস্ট) প্রকাশ করে লন্ডনভিত্তিক অভিজাত এই ম্যাগাজিন।

২০২০ সালে প্রকাশিত তালিকায়ও চট্টগ্রাম বন্দর ৬ ধাপ উপড়ে ওঠে। কিন্তু করোনা মহামারির ধাক্কায় ১০ বছরের মধ্যে ২০২১ সালে প্রথমবার পিছিয়ে ৬৭তম স্থানে নেমেছিল দেশের প্রধান সমুদ্রবন্দর।

চট্টগ্রাম বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল এম. শাহজাহান বলছেন, করোনা মহামারির ধাক্কা কাটিয়ে চট্টগ্রাম বন্দর যে মুল ধারায় ফিরেছে এই অর্জন তারই প্রমাণ। 

তিনধাপ এগিয়ে ৬৪তম অবস্থানে পৌঁছেছে এই বন্দর। করোনা সময়ে চট্টগ্রাম বন্দর, বন্দর ব্যবহারকারীদের নিরবচ্ছিন্ন প্রচেষ্টায় এই বিশাল অর্জন সম্ভব হয়েছে।

লয়েডস রিপোর্টে, ২০২১ সালে বিশ্বের সমুদ্রবন্দরগুলোতে কন্টেইনার পণ্য ওঠানামার তথ্য বিবেচনায় নিয়েই এরমধ্যে সেরা ১০০ বন্দরের তালিকা প্রকাশিত হয়েছে। তালিকায় চট্টগ্রাম বন্দর ২০২১ সালে কন্টেইনার উঠানামা করেছে ৩২ লাখ ১৪ হাজার একক আর ২০২০ সালের তুলনায় প্রবৃদ্ধি হয়েছিল ১৩ শতাংশ।

মূলত করোনা মহামারির ধাক্কায় চট্টগ্রাম বন্দরে পণ্য ওঠানামা অনেক কমেছিল ২০২০ সালে। সেই বছর পণ্য উঠানামা হয়েছিল ২৮ লাখ ৩৯ হাজার একক; সেই বছর নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি হয়েছে এই বন্দরে।

কিন্তু করোনা শুরুর আগে ২০১৯ সালে এই বন্দরে পণ্য ওঠানামা রেকর্ড ছুঁয়েছিল; যার পরিমান ৩০ লাখ ৮৫ হাজার একক কন্টেইনার। আর ২০২১ সালে পণ্য উঠানামার সর্বকালের রেকর্ড ছুঁয়েছে; যার পরিমান ৩২ লাখ ১৪ হাজার একক। ২০১৯ সালের তুলনায় ২০২১ সালে প্রবৃদ্ধি হয়েছে প্রায় ৪ শতাংশ।

চট্টগ্রাম চেম্বারের সিনিয়র সহসভাপতি তরফদার রুহুল আমিন বলেন, করোনা মহামারির মধ্যে কারখানা সচলের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাহসী-চ্যালেঞ্জিং সিদ্ধান্তের ফলেই দেশের অর্থনীতি সচল ছিল। 

আর এই অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড সচল রাখতে পুরোদমে ২৪ ঘণ্টা চালু ছিল চট্টগ্রাম বন্দর। বিশ্বের শীর্ষ বন্দর তালিকার ৬৪তম স্থানে এগিয়ে যায়া এর বড় প্রমাণ।  

চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে পণ্য পরিবহনের চিত্র থেকে দেশের মোট আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যের সার্বিক প্রমাণ মেলে। অর্থনীতির লাইফলাইন চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর দিয়ে দেশের মোট আমদানির ৮২ শতাংশ আসে; আর রপ্তানি পণ্যের ৯১ শতাংশই যায় এই বন্দর দিয়ে।

১৯৭৭ সালে চট্টগ্রাম বন্দরে কনটেইনার পরিবহন শুরু হয়। কনটেইনারে তৈরি পোশাক, ওষুধ, ইস্পাতসহ বিভিন্ন শিল্পপণ্য ও ভোগ্যপণ্য আমদানি করা হয়। আর বাংলাদেশ যেসব পণ্য রফতানি করে তার পুরোটাই কনটেইনারের মাধ্যমে।

 

আমারসংবাদ/টিএইচ