কুষ্টিয়ায় ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে প্রতিবন্ধীকে ধর্ষণ চেষ্টা অভিযোগ

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি প্রকাশিত: অক্টোবর ১৩, ২০২২, ০৪:৩১ পিএম

কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার পোড়াদহ ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য ঝন্টু’র বিরুদ্ধে প্রতিবন্ধী নারীকে ধর্ষণ চেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে মারধোরের অভিযোগ উঠেছে। মারধোরের শিকার ঔই প্রতিবন্ধী নারী ঘটনার ৩দিন অতিবাহিত হলেও গুরুতর আহত অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

এই ঘটনায় ভুক্তভোগীর ভাই আব্দুস সালাম বাদী হয়ে মিরপুর থানায় একটি এজাহার দায়ের করেছেন।

এজাহার সূত্রে জানা যায়, পোড়াদহ ইউনিয়নের স্বরূপদহ জয়নাল মোড় গ্রামের আমির আলী ডাক্তারের ছেলে বর্তমান ইউপি সদস্য ঝন্টু (৪০)। তিনি বর্তমানে স্বরুপদহ চকপাড়া আখের মোড় এলাকায় শ্বশুর বাড়িতে থাকেন। আসামি ঝন্টু একজন মাদক সেবনকারী লম্পট প্রকৃতির মানুষ। তিনি ঘটনার পূর্ব হতে বাদী ঐ গ্রামের আব্দুস সালামের বুদ্ধি প্রতিবন্ধী বোনকে কু-প্রস্তাবসহ বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে আসতেছিল। বিষয়টি বাদীর বোন তাকেসহ তার পরিবারের লোকজনদের অবগত করেন। বাদী বিষয়টি জানার পর আসামিকে এমন কর্মকাণ্ড হতে বিরত থাকার জন্য বললে সে তার কথায় কোন কর্ণপাত করে না।

আরো জানা যায়, সর্বশেষ গত ৯ অক্টোবর সকাল আনুমানিক ১০টার সময় আসামি ঝন্টু সরূপদহ গ্রামের জনৈক আতিয়ারের বাড়ির সামনে রাস্তার উপর বাদীর বোনকে পেয়ে তার বোনের কাছে থাকা একটি বাটন মোবাইল ফোন চেয়ে নিয়ে বলে যে, তোর সাথে বহু কথা আছে। তুই পরিষদে আমার সাথে এসে দেখা কর। তোকে তোর মোবাইল ফোনসহ আরো অনেক কিছু দেবো বলে আসামি তার ফোনটি নিয়ে চলে আসে। পরে এদিন বেলা আনুমানিক ১১টার সময় ভুক্তভোগী তার ফোনটি নেওয়ার জন্য পোড়াদহ ইউনিয়ন পরিষদে যান। ঐ সময় পরিষদে কোন লোকজন না থাকা সদস্য ঝন্টু পরিষদের একটি কক্ষের মধ্যে তাকে নিয়ে দরজার ছিটকিনি লাগিয়ে দেয়। এ সময় আসামি ভুক্তভোগীর ইচ্ছার বিরুদ্ধে তাকে জোর পূর্বক ধর্ষণের চেষ্টা করে। চেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে আসামি ক্ষিপ্ত হয়ে ভুক্তভোগীর গায়ে থাকা জামা পায়জামা ছিঁড়ে ফেলে চৌকিদারের ব্যবহারিত লাঠি দ্বারা তাকে এলোপাতাড়িভাবে মারপিট করে।

ভুক্তভোগীর আত্মচিৎকারে লোকজন ছুটে আসলে ঝন্টু তাকে ছেড়ে দিয়ে দৌড়ায়ে পালিয়ে যায়। পরে তাকে গত ১০ অক্টোবর মিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।

এ বিষয়ে ঝন্টুর মোবাইল ফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মেয়েটি আমার ওয়ার্ডের এক বাড়িতে চুরি করে ধরা পড়ে। তাই তারা তাকে মারধোর করে। পরে আমি খবর পেয়ে মেয়েটিকে চড়থাপ্পর মেরে উদ্ধার করে পরিষদে নিয়ে আসি। আমার যারা এন্টি পক্ষ তারা ঐ মেয়েকে দিয়ে থানায় অভিযোগ দিয়েছে। তাই অভিযোগের বিষয়টি সত্য নয়।

এ ব্যাপারে পোড়াদহ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফারুকুজ্জামান জন বলেন, আমি দেশের বাইরে ছিলাম। বিষয়টি ততটা জানিনা। তবে শুনেছি ইউনিয়ন পরিষদে এ ঘটনা ঘটেছে। থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে। পুলিশ প্রশাসনের বিরুদ্ধে যদি ব্যবস্থা গ্রহণ করে তবে ভালো। আর যদি প্রশাসন স্থানীয়ভাবে বিচার করার জন্য আমার উপর ছেড়ে দেন, তাহলে আমি এর বিচার করতে পারি।

তিনি বলেন, ইউপি সদস্য ঝন্টুর বিরুদ্ধে এলাকার অনেক অভিযোগ আছে। তাছাড়া যে মেয়েটি নিয়ে ঘটনা, সে একজন প্রতিবন্ধী। মেয়েটি আমার বাড়িসহ অনেকের বাড়িতে কাজ করে খায়। কোনদিন চুরির কোন ঘটনার কথা শুনি নাই।

এই ব্যপারে মিরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ রাশেদুল আলম জানান, এই সংক্রান্ত একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। ঘটনাটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এসএম