৪৮০ মিটারের সেতু যখন বিদ্যুতের খুঁটি!

আবু হানিফ রানা, মুন্সিগঞ্জ প্রকাশিত: নভেম্বর ২২, ২০২২, ০২:১৫ পিএম

মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানে ৪৮০ মিটারের দীর্ঘ এক সেতুকে যখন বিদ্যুতিক খুঁটি হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। উপজেলার বালুচর গ্রামে ধলেশ্বরী নদীতে নির্মিত এই সেতুর রেলিং ব্যবহার করে বৈদ্যুতিক সঞ্চালন লাইন টানা হয়েছে।

বিদ্যুত সঞ্চালন লাইন টানতে গিয়ে সেতুর পুরো অংশেরই রেলিংকে খুঁটি হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। এ অবস্থায় ৪৮০ মিটার দৈর্ঘ্য এ সেতুই এখন বৈদ্যুতিক খুঁটিতে পরিণত হয়েছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মুন্সীগঞ্জের টঙ্গীবাড়ি উপজেলার বেতকা চৌরাস্তা হতে বালুচর বাজার হয়ে যাওয়ার রাস্তর উপর নির্মিত এই বিশাল সেতুটির পূর্ব পাশের রেলিং দিয়ে টানা হয়েছে বিদ্যুৎ লাইন। ওই সেতুর  এক প্রান্তে সিরাজদিখান উপজেলার বালুচর গ্রাম ও অপরপ্রান্তে রয়েছে চর বালুচর গ্রাম।

ব্যয়বহুল দীর্ঘ এবং গুরুত্বপূর্ণ এই সেতু দিয়ে প্রতিনিয়ত চলে অসংখ্য যানবাহন। সেতুর উপর দিয়ে পন্যবাহী যানবাহন ছাড়াও সিএনজি ও ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা, ইজিবাইক ও ভ্যান গাড়ী চলাচল করছে। সেতুতে পায়ে হেঁটে পারাপার হতে দেখা গেছে অসংখ্য পথচারীকে। বৈদ্যুতিক সঞ্চালন টানার কারনে দুর্ঘটনার আশংকা প্রকাশ করেছেন চর বালুচর গ্রামের মনিরুল ইসলাম।

তিনি জানান, উপজেলার বালুচর ইউনিয়নসহ আশপাশের বেশ কয়েকটি গ্রামের মানুষ এ সেতুর উপর দিয়ে ঢাকায় যাতায়াত করে থাকেন। অথচ সেতুর রেলিংয়ে লোহার ক্যাপ লাগিয়ে বিদ্যুতের লাইন টানা হয়েছে। এতে পুরো সেতুই এখন বৈদ্যুতিক খুঁটিতে পরিণত হয়েছে।

অটোরকিশা চালক সোহেল বলেন, সেতুর  রেলিং এর সাথে বিদ্যুতের তার লোহা দিয়ে বেঁধে  দেওয়া হয়েছে। সেতুতে যেকোনো মুহূর্তে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বৈদ্যুতিক সঞ্চালন লাইন টানায় কারনে তা ভয়াবহ রূপ নিতে পারে। তাছাড়া রেলিংয়ে হাত রেখেই অনেকে শিশু-কিশোর চলাফেরা করে থাকে। সেই ক্ষেত্রে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে যে কোনো সময়।

এদিকে, ধলেশ্বরী নদীর উপর ওই সেতু নির্মাণ কাজ বাস্তবায়ন করেছে এলজিইডি। ২০১০-১১ অর্থ-বছরে ৩ কোটি ২ লাখ টাকা ব্যয়ে এ সেতু নির্মাণ করা হয়। অথচ খোদ এলজিইডি কর্তৃপক্ষের জানা নেই সেতুতে চলে যাওয়া বৈদ্যুতিক সঞ্চালন টানার খবর।

সিরাজদীখান উপজেলা এলজিইডির প্রকৌশলী মো. রেজাউল ইসলাম আমার সংবাদকে বলেন, সেতুতে পল্লী বিদ্যুতের সঞ্চালন লাইন রয়েছে তা আমার জানা নেই। আপনার কাছেই প্রথম শোনলাম। যদি সেতুর উপর দিয়ে বৈদ্যুতিক লাইন টানা হয়ে থাকে, তবে তা দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সিরাজদিখান পল্লী বিদ্যুত জোনাল অফিসের ডিজিএম খন্দকার মাহমুদুল হাসান বলেন, শিগগিরই আমরা বিদ্যুতর লাইন সরিয়ে ফেলবো। বিকল্প সঞ্চালন লাইন করা হয়েছে।

মুন্সীগঞ্জ পল্লী বিদ্যুতের ডিজিএম (কারিগরি) মোহাম্মদ হারুন-অর-রশীদ বলেন, সেখানে বিকল্প বৈদ্যুতিক সঞ্চালন লাইন টানা হয়েছে। খুব শিগগিরই সেতু থেকে বিদ্যুতের সঞ্চালন লাইন সরিয়ে নেওয়া হবে।

এআই