ছয় বছর ধরে বিছানায় পিঠ ঠেকাননি, দাঁড়িয়ে-বসে সময় পার

নান্দাইল (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি প্রকাশিত: মে ২, ২০২৩, ০৪:১১ পিএম

জীবন সংগ্রামের পাশাপাশি আরাম-আয়েশ তথা বিশ্রামের প্রয়োজন আছে। বিছানায় পিঠ ঠেকাতে কে না চায় ? সমাজে কথিত আছে গোঁজাও চিৎ হয়ে শুতে চায়। তবে যদি এমন হয় যে, বিছানায় না শুয়েও বছরের পর বছর পার করে দিচ্ছে! হ্যা, বিষয়টি উদ্ভট হলেও এটাই সত্যি। এমনটি ঘটেছে ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার বীরবেতাগৈর ইউনিয়নের চৈতনখালী গ্রামের মো. নুরুল আমিন (৩৮) এর জীবনে। 

বিছানায় না শুয়ে দিনরাত দাঁড়িয়ে ও বসে থেকে ছয়টি বছর পার করে দিয়েছেন। তবে দিনের অধিকাংশ সময়ই কাটে তাঁর দাঁড়িয়ে থেকে। ঠিকমতো  খাওয়া-দাওয়া, গোসল ও নিয়মিত ঘুমান না। তবে সে নিজেকে মানসিক ভারসাম্যহীন পাগল ভাবেন না। নুরুল আমিন জানান, তিনি পাগল না, তবে সবাই তাকে পাগল বলে কেন তা তিনি জানেন না।

স্থানীয় সূত্রে জানাগেছে, নুরুল আমিনের পিতা আবুল হোসেন বেঁচে নেই। তাঁর মা জাহেরা খাতুন একজন মানসিক ভারাসাম্যহীন। পরিবারের ৪ ভাইয়ের মধ্যে সে দ্বিতীয়। তবে তিনি বিয়ে করেন নি। নুরুল আমিন এরকম ছিল না, ভালোই ছিল তার জীবন। ঢাকায় একটি টেক্সটাইল মিলে চাকুরী করতেন। হঠাৎই তার এমন হল যে, কোন কাজে মন বসে না। কোন কিছুই তার ভালোলাগে না। সর্বদা ছটপট করে, ঘুম আসেনা। শুয়ে বিশ্রামের চেষ্টা করলেও পারছে না। তাই দাড়িয়ে ও বসেই কাটছে তার জীবন। প্রতিবেশী ও পথচারীসহ উৎসুক মানুষ তার এই দাঁড়িয়ে থাকাটাকে বুঝতে পারেননা। তবে প্রত্যেকরই তার দাঁড়িয়ে থাকা নিয়ে কৌতুহলবশত আলোচনা করেন। 

বর্তমানে নরুল আমিনের পরনে কালো লুঙ্গী ও খালি গায়ে জড়ানো রয়েছে কালো চাদর। এক পোশাকেই তিনি থাকতে বেশী পছন্দ করেন। নুরুল আমিনের রয়েছে দাড়ি, গোফ ও মাথায় ঝট বাঁধা লম্বা চুল। নুরুল আমিনের ভাতিজা তরিকুুল ইসলাম বলেন, নুরুল আমিন ৬-৭ বছর ধইরা অসুস্থ। সে দিনরাত সবসময় দাঁড়াইয়া থাহে। রাতেও সে দাঁড়াইয়া ঘুমায়। সে ঠিকমত গোসল করেনা, খায়না। 

নুরুল আমিনের মামী মঞ্জিলা খাতুন বলেন, অনেক বছর ধইরা নুরুল আমিন বাইরে থাহে, ঘুমায়না। ঝড়, বৃষ্টি,বাদল শীত সবসময় সে বাইরে থাহে। ঘরে যায়না।দাঁড়াইয়া ঘুমায়। আবার বইসাও ঘুমায়। কোনসময় বইয়া থাহে। এইভাবেই সে বাইরে থাহে। 

স্থানীয় ইউপি সদস্য মো.নয়ন মিয়া বলেন, সমাজের বিত্তশালী মানুষ যদি তার চিকিৎসা করানোর ব্যবস্থা করেন তাহলে হয়তো সে সুস্থ জীবনযাপন করতে পারবে।

এইচআর