ব্যাহত হতে পারে কাঙ্ক্ষিত উৎপাদন

গাইবান্ধায় পানির অভাবে আমন রোপণ করতে পারছেন না কৃষক

গাইবান্ধা প্রতিনিধি প্রকাশিত: আগস্ট ১৭, ২০২৩, ০৫:৩৩ পিএম

পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হওয়ায় পানির অভাবে আমন ধানের চারা রোপণ করতে পারছে না গাইবান্ধার কৃষকরা। বাধ্য হয়েই সেচের মাধ্যমে জমি তৈরি করে ধান রোপন করতে হচ্ছে তাদের। বৃষ্টি না হওয়ায় সময়মত আমন ধান রোপন করতে না পরায় উৎপাদন ব্যাহত হওয়ার আশংকায় রয়েছে এ অঞ্চলের কৃষকরা।

প্রতি বছর আষাঢ় ও শ্রাবন মাসে বৃষ্টির সময় জমিতে আমন ধান রোপন করে থাকেন এ অঞ্চলের কৃষকরা। শ্রাবনের মাঝামাঝির মধ্যে জমিতে ধান রোপন শেষ হয়ে যায়। তবে এবার পরিস্থিতি ভিন্ন দেশের বিভিন্ন স্থানে অতি বৃষ্টির কারনে বন্যার সৃষ্টি হলেও গাইবান্ধার সদর উপজেলার চিত্র ভিন্ন। এদিকে পানির অভাবে সময়মত ধান রোপন করতে না পেরে ফলন নিয়ে দুচিন্তায় রয়েছে এ অঞ্চলের কৃষক।

গাইবান্ধা সদর উপজেলা কৃষক রামচন্দ্রপুরের কৃষক মঞ্জুর মিয়া (৪৫) বলেন, ‘তিনবিগে জমিত আমন চাষ করি। এব্যারক্যা পানির জন্নে ধান নাগব্যার পাচ্চিনে। এক হাজার ট্যাকা দেনাকরি একবিগেত পানি নিচি। বেশি অদের (রোদ) জন্নে সেই পানিও শুকি গেচে। ট্যাকা খরচ করি ধান নাগব্যার পাচ্চিনে। তিনবিগে জমি পড়ি আচ।’ তিনি বলেন, ’সমায় পালটি গেচে, আষাঢ় মাসোত ঝরি হবি, সাবোন (শ্রাবণ) মাসোত বান হবার কতা। কিনতো জমিতই পানি নাই।’

একই গ্রামের কৃষক আবুতালেব মন্ডল (৩৮) জানান এসময় আমাদের জমিতে অনেক পানি থাকে কিন্তু এবার বৃষ্টি না হওয়ার কারনে জমিতে পানি নেই এর ফলে ধান রোপনের সময় পার হয়ে যাচ্ছে তাই বাধ্য হয়ে আমরা সেচ দিয়ে আমন চাষ শুরু করেছি।

তবে এমনিতে প্রতিবারে ধান চাষ করে আমাদের লোকসান হয় এবার আরো সেচ দিয়ে পানি নিয়ে বাড়তি উৎপাদন খরচ বিঘাপ্রতি তিন থেকে চার হাজার টাকা গত বারের চেয়ে বেশি খরচ করে উৎপাদন খরচ তুলতে পারবো কিনা তা আল্লাহ জানে।

ওই গ্রামের কৃষক সুলতান মিয়া (৪২) বলেন, ’পোত্তেক বচর দুইবিগে জমিত আমনের আবাদ করি। দশ শতক জমিত বেচন (বীজতলা) ফেলাচি। খরাত সেই বেচনের জমি ফাটি গেচে। বেচন নষ্ট হবার নাগচে।’

তবে সদর উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা শাহাদাৎ হোসেন আমার সংবাদকে জানান কৃষকদের যাতে ক্ষতি না হয় সেজন্য প্রতিটি এলাকার সেচ পাম্প মালিকদের সাথে কথা বলে সেচ পাম্প চালু করার ব্যাবস্থা করেছি এবং অসময়ে ধান রোপন করে ক্ষতি পুষিয়ে নিতে ভালো ফলনের জন্য কৃষকদের নানারকম পরামর্শ দিয়ে আচছি।

এ বছর গাইবান্ধায় ১ লাখ ২৭ হাজার ৪৬০ হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা হাতে নেওয়া হয়েছে। তবে পানির অভাবে এ পর্যন্ত মাত্র ৬ হাজার ৭৭৭ হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষ হয়েছে। বাকি রয়েছে আরো ১ লাখ ২০ হাজার ৬৮৩ হেক্টর জমি।

এইচআর