রাস্তার পাশে ময়লার ভাগাড়, ভয়াবহ পরিবেশ দূষণ

মেলান্দহ (জামালপুর) প্রতিনিধি প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১২, ২০২৩, ০৬:৩৬ পিএম

জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলা সদরের মেলান্দহ-জামালপুর সড়কের মলিকাডাঙ্গা জাহানারা লতিফ মহিলা কলেজ ও আল জামিয়াতুল আহলিয়া মহিউসসুন্নাহ মাদ্রাসার সংলগ্ন স্থানে রাস্তার পাশের জায়গাটি এখন ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। পৌরসভার ময়লা-আবর্জনা ফেলার স্থায়ী স্থান (ডাম্পিং স্টেশন) না থাকায় সড়কের পাশ ঘেঁষেই শহরের সব ময়লা-আবর্জনা ফেলা হচ্ছে।

প্রায় তিন মাসের বেশি সময় ধরে সড়কের পাশে ময়লা ফেলতে ফেলতে স্থানটি ময়লার স্তূপে পরিণত হয়েছে। এর দুর্গন্ধে পাশ দিয়ে চলাচল দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। ময়লা ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পুরো এলাকা দূষিত করছে।

এ রাস্তায় প্রতিদিন শত শত মানুষের চলাচল থাকায় প্রতিনিয়ত দুর্ভোগে পড়েন পথচারীরা। এতে পরিবেশ দূষণসহ মানুষের মধ্যে বিভিন্ন রোগ ছড়িয়ে পড়ছে।

স্থানীয়রা জানান, রাস্তার পাশে প্রায় তিন মাসের বেশি সময় ধরে এভাবেই পড়ে রয়েছে পৌরসভার ময়লার স্তুুপ। আবর্জনার স্তূপে দুর্গন্ধের কারণে এই রাস্তা দিয়ে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে উঠেছে। এতে দূষিত হচ্ছে পরিবেশ বাড়ছে রোগ বালাই। দুর্গন্ধের স্থান হিসেবে পরিণত হয়েছে এলাকাটি। মেলান্দহ ‘ক’ (প্রথম) শ্রেণির পৌরসভা হলেও স্থায়ী ময়লা ফেলার ব্যবস্থা না হওয়ার ফলে পৌরবাসীদের অস্বাস্থ্যকর পরিবেশেই থাকতে হচ্ছে। পৌরসভা ও উপজেলা প্রশাসনের কাছে বিষয়টি জানিয়েও কোন কাজে আসেনি। পৌর কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলে অভিযোগ করে এর প্রতিকার চেয়েছেন স্থানীয়রা।

সরেজমিনে দেখা যায়, মেলান্দহ বাজার-বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় সড়কের মলিকাডাঙ্গা এলাকায় রাস্তার পূর্ব উত্তর পাশ ঘেঁষেই ময়লার ভাগাড়। তার পাশেই অবস্থিত একটি মসজিদ ও মাদ্রাসা। চার পাশেই ঘনবসতি। সেই রাস্তায় স্কুল ও কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীরাসহ নাক চেপে চলাচল করতে হচ্ছে পথচারীদের।

দীর্ঘদিন ধরে পৌর শহরের বিভিন্ন ক্লিনিক, হোটেল ও রেস্তোঁরার বর্জ্য ফেলায় এ সড়কের পাশে ময়লা-আবর্জনার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। যার ফলে এখান দিয়ে যাতায়াতকারীদের চলাচলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

ওই রাস্তায় চলাচলকারী মফিজ মিয়া নামে এক ভ্যান চালক বলেন, আমার সবসময় এই সড়ক দিয়ে চলাচল করা লাগে। এই দুর্গন্ধে ভ্যান চালাইতে অনেক সমস্যা হচ্ছে। এক হাত দিয়ে নাক চেপে ধরে এই জায়গাটুকু পার হই। এই ময়লাগুলো যদি এখান থেকে সরানো হতো তাহলে আমাদের চলাচলে আর কষ্ট হতো না।

মাও. আব্দুস সালাম নামে আল জামিয়াতুল আহলিয়া মহিউসসুন্নাহ মাদ্রাসার এক শিক্ষক বলেন, রোদের সময় ময়লার দুর্গন্ধ আরো রেড়ে যায়। সে সময় মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের ক্লাস নেওয়া কস্টকর হয়ে যায়। এছাড়া এ থেকে মশা-মাছির উপদ্রব্য বৃদ্ধি পাচ্ছে এতে মাদ্রাসার আবাসিক শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দা শওকত মিয়া বলেন, আমার বাড়ির পাশেই পৌরসভার ময়লার ভাগাড়।  এটার দুর্গন্ধে আমরা অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছি। স্থানীয়রা প্রতিনিয়তই রোগাক্রান্ত হয়ে পড়ছে। আমরা পৌরসভা এবং ইউএনও অফিসে অভিযোগ দিয়েছি তাতেও কোন লাভ হয়নি। আমরা অতি দ্রুতই এর একটা সমাধান চাই।

মেলান্দহ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার (আবাসিক) সাব্বির আহমেদ বলেন, ‘এসব ময়লা আবর্জনা জনস্বাস্থ্য এর জন্য মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ। এসব থেকে বায়ুদূষণসহ পরিবেশের বিভিন্ন বিপর্যয় নেমে আসতে পারে। জন্ডিস, টাইফয়েড, ডায়রিয়া ইত্যাদি রোগ ছড়াতে পারে। বিশেষ করে শিশুরা শ্বাসকষ্টে দ্রুত আক্রান্ত হতে পারে।

এ বিষয়ে মেলান্দহ পৌরসভার নির্বাহী কর্মকর্তা শরীফুল ইসলাম ভূঞা বলেন, পৌরসভার আধুনিক ডাম্পিং স্টেশনের কাজ চলমান। কাজ প্রায় শেষের দিকে, শেষ হলেই ময়লা সেখানে ফেলা হবে ।

জানতে চাইলে মেলান্দহ পৌরসভার মেয়র শফিক জাহেদী রবিন মুঠোফোনে বলেন, এ বিষয়ে আমার কাছে কেউ অভিযোগ করেনি।

ইমরান/এআরএস