চৌগাছায় সড়কের দুই পাশে মরা গাছের মরণ ফাঁদ

এম এ মান্নান, চৌগাছা (যশোর) প্রকাশিত: অক্টোবর ১৮, ২০২৩, ০৭:১১ পিএম

যশোরের চৌগাছা উপজেলার বিভিন্ন সড়কের দুইপাশে জেলা পরিষদের অসংখ্য মরাগাছ (শুকনা) এখন যেন মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। ফলে পথচারীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন।যে কোন মুহূর্তে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। সামান্য ঝড় বৃষ্টি ও একটুবাতাসে গাছের বড় বড় ডাল এমনকি মরাগাছ ভেঙ্গে পড়ে দুর্ঘটনার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। দেখার যেন কেউ নেই।

উপজেলার বিভিন্ন সড়কেই এসব মরা গাছগুলো ঝুঁকিপুর্ন হয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে। হালকা বাতাস হলেই এ সব সড়কে যানবাহন ও জনসাধারনের চলাচলে ব্যাপক ঝুঁকি হয়ে পড়ে। যশোর জেলা পরিষদ সড়কের গাছ গুলোর মালিকানা দাবী করলেও সড়ক থেকে মরা শুকনা গাছ গুলো অপসারনের কোন উদ্যোগ নিচ্ছেন না তাঁরা।

বুধবার (১৮ অক্টোবর) সরেজমিনে গিয়ে চৌগাছা-যশোর, চৌগাছা-ঝিকরগাছা, চৌগাছা-মহেশপুর, চৌগাছা-কোটচাঁদপুর, চৌগাছা-শর্শা সড়কগুলোর দুইপাশে জেলা পরিষদের মেহগনী, শিশু, কড়াই, বাবলাসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ রয়েছে। বিভিন্ন সময়ে আম্ফান, নার্গিচ, সনামিসহ নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে অনেক গাছ পড়ে বা ভেঙ্গে মারা গেছে। এছাড়া ফসলি জমির পাশে গাছ থাকায় এই সব গাছের ছায়া ও পাতায় নষ্ট হচ্ছে ফসল। তাই জমির মালিকরা নানা কৌশলে সড়কের পাশে থাকা গাছ মেরে ফেলছেন।

পথচারী ভ্যান চালক উপজেলার গরীবপুর গ্রামের আমজাদ হোসেন জানান, বিভিন্ন সড়কের দু ধারে অনেক গাছ মরে রয়েছে। এ ছাড়া গাছ খেকোরা রাতের আঁধারে সরকারিগাছ কেটে সাবাড় করছে। গাছের গোড়া থেকে দেড় থেকে দুই হাত উপরে বাকল কেটে রাখা হয়। কখনো আবার গাছের গোড়ায় অতি মাত্রায় রাসায়নিক সার ব্যাবহার করা হয়।  একই সাথে দেয়া হচ্ছে লবণ। এসব পদ্ধতি ব্যবহারের ফলে গত কয়েক বছর ধরে বিভিন্ন সড়কে শত-শত গাছ মরে বিপদ জনক ভাবে দাড়িয়ে রয়েছে। আমরা জীবনের ঝুঁকিনিয়ে চলাচল করি।

পাশাপোল গ্রামের জামিনুর রহমান পেশাই ইজিবাইক চালক তিনি বলেন, প্রতিদিন চৌগাছা-ঝিকরগাছা, চৌগাছা-মহেশপুর, চৌগাছা-কোটচাঁদপুর, চৌগাছা-শর্শা সড়কগুলোতে ছোট বড় শত-শত  যানবহন চলাচল করে। এছাড়া সড়কের পাশে রয়েছে শতশত বসতবাড়ি। মরা গাছের কারণে স্কুল-কলেজ, মাদ্রাসার শিক্ষার্থী ওপথচারীসহ বসবাসকারীরা রয়েছেন রিতীমত আতঙ্কে।

অতিসম্প্রতি চৌগাছা শহরের মুসলিম জুয়েলার্সের মালিক হায়দার আলী চৌগাছা-যশোর সড়কের কড়ইতলা নামক স্থানে সড়কের পাশের একটি গাছের ভেঙ্গে পড়া ডালের আঘাতে মারাত্মক ভাবে আহত হন। আহতকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে প্রথমে চৌগাছা সরকারি মডেল হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য যশোর পরে খুলনা এবং সর্বশেষ ঢাকাতে নিতে হয়।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইরুফা সুলতানা বলেন, গাছগুলো ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থাতে দাঁড়িয়ে আছে । বিষয়টি আমি নিজে দেখেছি। তবে ঝুঁকিপূর্ণ গাছগুলো অপসরণের জন্য কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি। সড়কের গাছগুলো যশোর জেলা পরিষদের। জেলা পরিষদকে বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

আরএস