ফরিদপুরে স্প্রিডবোট-লঞ্চ পারাপারে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়

চরভদ্রাসন (ফরিদপুর) প্রতিনিধি: প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০২৪, ০১:২২ পিএম

ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলার পদ্মা নদীর গোপালপুর ঘাটে হঠাৎ যাত্রীদের কাছ থেকে স্প্রিডবোট ও লঞ্চ পারাপারে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগ উঠেছে।

যাত্রীদের অভিযোগ যেখানে দু’দিন আগেও জনপ্রতি স্প্রিডবোটের রেগুলার ভাড়া ছিল মাত্র ১৫০ টাকা ও লঞ্চের ভাড়া ৭০ টাকা করে, সেখানে হঠাৎ করেই আজ যাত্রীদের কাছ থেকে জনপ্রতি স্প্রিডবোটের ভাড়া নেয়া হচ্ছে ২০০ টাকা ও লঞ্চের ভাড়া ১০০ টাকা করে।

সরেজমিনে গত শুক্রবার বিকালে উপজেলার পদ্মা নদীর গোপালপুর ঘাট ঘুরে দেখা যায়, স্প্রিডবোটের যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ৫০ টাকাসহ ২০০ টাকা করে ভাড়া নেয়া হচ্ছে, আর লঞ্চের যাত্রীদের কাছে অতিরিক্ত ৩০ টাকাসহ ১০০ টাকা করে ভাড়া আদায় করা হচ্ছে।

অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের বিষয়ে জানতে চাইলে স্থানীয় এবং পার্শ্ববর্তী নগরকান্দা ও ভাঙ্গা উপজেলার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক স্প্রিডবোট যাত্রী জানান, আমরা এ ঘাট দিয়ে যেখানে আজকে সকালেও ১৫০ টাকা করে স্প্রিডবোট ভাড়া দিয়ে পার হয়েছি। আর একই ঘাটে বিকালে এখানে ২০০ টাকা করে আমাদের বেশি ভাড়া গুনতে হচ্ছে।

তারা বলেন, এটি ঘাট কর্তৃপক্ষের অনিয়ম, স্বেচ্ছাচারিতা ও দুর্নীতি। তারা যাত্রীদেরকে এক পর্যায় জিম্মি করেই বেশি ভাড়া আদায় করছে। আমরা ঘাট মালিকদেরকে অতিরিক্ত ভাড়া নেয়ার বিষয়ে প্রতিবাদ করলেও তারা তা শুনছেনা। তারা আমাদের কথা কোন মূল্যায়নই করছেনা। তারা তাদের মনমত করে যাত্রীদের কাছ থেকে ভাড়া আদায় করে চলেছে।

সংশ্লিষ্ট ঘাট কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে জানা যায়, এপার-ওপার গোপালপুর-মৈনটঘাট পদ্মা পারাপারের জন্য প্রতিদিন সন্ধ্যা ৬ পর্যন্ত স্প্রিডবোট চালানোর সময় নির্ধারণ থাকলেও ঘাট মালিকরা নিয়মের কোন তোয়াক্কা না করেই ঢাকা জেলার দোহার থানার সানাল ফকিরের মেলা কেন্দ্র করে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের লক্ষ্যে রাত ৯ টা পর্যন্ত যাত্রীদেরকে পারাপার করে চলেছে। ফলে এভাবে পদ্মা পারাপারে যাত্রীদের একদিকে যেমন জীবন ঝুঁকি রয়েছে পাশাপাশি তাদের অতিরিক্ত অর্থও গুনতে হচ্ছে।

পার্শ্ববর্তী সদরপুর উপজেলার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক স্প্রীডবোট যাত্রী জানান, গত শুক্রবার রাত ৯ ঘটিকার সময় গোপালপুর ঘাট থেকে ২৫০ টাকা ভাড়া দিয়ে আমি ওপার মৈনটঘাটে গিয়েছি। যেখানে রেগুলার ভাড়া থাকে ১৫০ টাকা সেখানে আমাকে নিরুপায় হয়ে ১০০ টাকা অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে পদ্মা পার হতে হয়েছে।

স্প্রীডবোট যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ৫০ টাকা করে ভাড়া নেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে, ঘাটের দায়িত্বে থাকা উপজেলা প্রশাসনের কর্মচারী মো. সোহেল জানান, আমাদের কাছে আজকের দিনের জন্য উপজেলা প্রশাসনের থেকে ২০০ টাকা করে ভাড়া আদায়ের নির্দেশ আছে। 

এ ছাড়া তিনি আরো জানান, যাত্রীদের অতিরিক্ত চাপ সামলাতে ওপার থেকে খালী স্প্রীডবোট আনতে হচ্ছে। ফলে বোটের তেলের খরচ মেটাতে যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ৫০ টাকাসহ ২০০ টাকা করে ভাড়া আদায় করা হচ্ছে।

তবে, এসময় তার কাছে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের আদেশের কপি দেখতে চাইলে তিনি তা সাংবাদিকদের দেখাতে পারেন নাই।

এদিকে, ঘাটে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের বিষয়ে জানতে চাইলে, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মেহেদি মোর্সেদ জানান, ঘাটে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের বিষয়টি আমার জানা নেই। এ বিষয়টি আমি আপনার কাছ থেকেই জানলাম। আমি এ ব্যাপারে খোঁজ নিচ্ছি বলে তিনি জানান।

এদিকে, একই ঘটনা ঘটছে গোপালপুর ঘাটের লঞ্চ পারাপারেও। সেখানে রেগুলার জনপ্রতি ৭০ টাকার পরিবর্তে যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ৩০ টাকাসহ ১০০ টাকা করে বেশি ভাড়া আদায় করা হচ্ছে বলে যাত্রীদের অভিযোগ।

বিআরইউ