তীব্র গরমে দুর্বিষহ চরবাসীর জীবন

দৌলতপুর (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি প্রকাশিত: মে ৫, ২০২৪, ১২:৩৩ পিএম

কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার সীমান্তবর্তী দুটি ইউনিয়ন চিলমারী ও রামকৃষ্ণপুর।

এ দুটি ইউনিয়নের যেদিকে তাকানো যায় শুধু ধু-ধু বালুচর আর সবুজ বৃক্ষহীন বসবাসরত চরবাসীর টিনের ঘর। নেই সবুজ বৃক্ষের ছায়াঘেরা শীতল পরশ যেখানে প্রখর রোদ আর তীব্র গরমে মিলবে একটু শান্তি ও স্বস্তির বিশ্রাম।

ইচ্ছে হলে শহর এলাকায় ছুটে যাবেন সেটাও অনেকটা অসম্ভব। যোগাযোগ ব্যবস্থা আদিকালের গরু-মহিষ বা ঘোড়ার গাড়ি হওয়ায় ধু-ধু বালুচর পাড়ি দিয়ে যাওয়া সেটাও দুষ্কর। যান্ত্রিক যানবাহন থাকলেও সেটাও ধুলোবালির জন্য চলাচলের প্রায় অযোগ্য।

জরুরি চিকিৎসাসেবা প্রয়োজন হলে দুর্গম চর পাড়ি দিয়ে হাসপাতাল বা চিকিৎসা কেন্দ্রে আসতে বিলম্ব হলে অনেকের মৃত্যুও ঘটে।

শীতে হিমেল হাওয়ায় জবুথবু আর বর্ষায় চারদিকে থইথই পানি। তারপরও তাদের চলমান জীবনযাত্রায় তা অনেকটা সহনীয়। কিন্তু বর্তমান তীব্র তাপ প্রবাহ ও বৈরি আবহাওয়ায় অসহনীয় হয়ে পড়েছে তাদের চলমান জীবনমান।

উত্তপ্ত বালুর চরে কোথাও মিলছে না একটু স্বস্তি। এমনটি জানিয়েছেন জিল্লুর রহমান নামে এক চরবাসী।

আবার একটু অসাবধানতায় ঘটে অগ্নিকাণ্ডের মতো দুর্ঘটনা। এই আবহাওয়ায় সে আগুন নেভানো দায়। যোগাযোগ ব্যবস্থা না থাকায় ফায়ার সার্ভিসের সেবা থেকেও বঞ্চিত তারা। চোখের সামনে নিমিষেই নিঃশেষ হয় সবকিছু। এ যেন মরার ওপর খাড়ার ঘা’র মত অবস্থা।

অসুস্থ হলে একমাত্র ভরসা ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রে প্রাথমিক চিকিৎসা ও প্রাথমিক পথ্য নিয়েই চলে চরবাসীর জীবন বলে জানিয়েছেন চিলমারী ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার মো. নাজমুল হুসাইন সাগর।

চরবাসীর জীবন মান উন্নয়নে প্রয়োজন যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন। তাই চরবাসীকে আধুনিক ও স্মার্ট নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে সরকারের কাছে এ ব্যবস্থার উন্নয়ন ঘটানোর দাবি জানিয়েছেন চিলমারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী আব্দুল মান্নান।
বর্তমান বিশ্বায়নের যুগে সবক্ষেত্রেই আধুনিকতার ছোঁয়া। কিন্তু সেই ছোঁয়া এখনও স্পর্শ করতে পারেনি চরবাসীর জীবনযাত্রায়। সেই আদিকালের জীবন মান নিয়ে এখনও তাদের বসবাস। তারপরও প্রকৃতির বিরুপতায় সেই জীবনও হয়ে পড়েছে দুর্বিষহ।

ইএইচ