টাঙ্গাইলের নাগরপুর সরকারি কলেজের সীমানা ঘেঁষে দীর্ঘদিন ধরে বাজার ও আশপাশ এলাকার কিছু অসচেতন মানুষ নিয়মিতভাবে ময়লা-আবর্জনা ফেলে আসছেন। বিশেষ করে কলেজসংলগ্ন মসজিদের পাশে এবং পুকুর পাড়ে ময়লা ফেলা হয়ে আসছে, যা পরিবেশের জন্য মারাত্মক হুমকির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এতে নষ্ট হচ্ছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিচ্ছন্ন ও শিক্ষাবান্ধব পরিবেশ, বাড়ছে মশা-মাছির উৎপাত, এবং শিক্ষার্থী ও মুসল্লিদের স্বাভাবিক চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি হচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, কলেজের সীমানা প্রাচীর ও পুকুর পাড়জুড়ে ময়লার স্তূপ জমে আছে। কেউ কেউ প্রকাশ্যে ওই এলাকায় মূত্রত্যাগও করছেন। এই পথ দিয়েই শিক্ষার্থীদের কলেজে প্রবেশ করতে হয়। দুর্গন্ধ ও নোংরা পরিবেশে ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থী ও মুসল্লিরা।
কলেজ মসজিদের একজন নিয়মিত মুসল্লি মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, “মসজিদের পাশে ময়লার স্তূপ জমে থাকায় পরিবেশ এতটাই নোংরা হয়ে গেছে যে, নামাজে মনোযোগ দেওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে।”
আরেক মুসল্লি বলেন, “পরিচ্ছন্নতা ঈমানের অঙ্গ। অথচ একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও উপাসনালয়ের পাশে এভাবে ময়লা ফেলা অত্যন্ত দুঃখজনক ও লজ্জাজনক।”
মো. ইমরান হোসেনসহ একাধিক শিক্ষার্থী জানান, “কলেজে প্রবেশের সময় চারপাশের নোংরা পরিবেশ দেখে মানসিকভাবে অস্বস্তি লাগে। এতে মনোযোগ দিয়ে পড়াশোনা করা সম্ভব হচ্ছে না।”
একজন ছাত্রী বলেন, “ময়লার কারণে মশা-মাছির উপদ্রব বেড়েছে। এতে আমরা স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়ছি। দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে সমস্যা আরও বাড়বে।”
স্থানীয়দের অভিযোগ, কলেজের পাশে নির্দিষ্ট কোনো ডাস্টবিন না থাকায় অনেকেই নির্বিঘ্নে ময়লা ফেলছেন। একাধিকবার বিষয়টি সংশ্লিষ্টদের জানানো হলেও কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। বর্ষা মৌসুম ঘনিয়ে আসায় ডেঙ্গু ও অন্যান্য মশাবাহিত রোগের আশঙ্কাও করছেন এলাকাবাসী।
এ বিষয়ে সদর ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসক মো. হাবিবুর রহমান বলেন, “এ বিষয়ে আমাকে আগে কেউ অবগত করেননি। তবে আমি দ্রুত এলাকা পরিদর্শন করবো এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।”
নাগরপুর সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মো. বেলাল হোসেন বলেন, “কলেজের মতো একটি পবিত্র শিক্ষাঙ্গনের পাশে এভাবে ময়লা ফেলা অত্যন্ত দুঃখজনক। আমি আশপাশের দোকানদার ও স্থানীয় বাসিন্দাদের ময়লা না ফেলতে অনুরোধ করেছি, কিন্তু অনুরোধ সত্ত্বেও তারা নিয়মিতভাবে এখানে ময়লা ফেলছেন। আমরা চাই, দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হোক। এ বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করছি।”
ইএইচ