টুঙ্গিপাড়ায় নদীগর্ভে সড়ক, ঘুরপথে যাতায়াত ১৫ কি.মি.

টুঙ্গিপাড়া (গোপালগঞ্জ) প্রতিনিধি: প্রকাশিত: মে ৪, ২০২৫, ০১:৩৯ পিএম

টুঙ্গিপাড়ার চিতলিয়া গ্রামে এখন দিন কাটে উৎকণ্ঠায়। একদিনে হারিয়ে গেছে মানুষের চলার পথ। গত বুধবার দুপুরে হঠাৎ করেই শৈলদহ নদীর গর্ভে বিলীন হয়ে যায় ডুমরিয়া-সড়াবাড়ি সড়কের একটি বড় অংশ। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে অন্তত ১০টি গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ। কেউ যেতে পারছেন না স্কুলে, কেউ বাজারে—কেউবা প্রিয়জনের বাড়িতে।

চিতলিয়ার মধ্য দিয়েই যাতায়াত করতেন ডুমরিয়া, ভৈরবনগর, তারইল, জামাইবাজার, মামারবাজার, সড়াবাড়ি, পাকুরতিয়া গ্রামের বাসিন্দারা। এখন তাদেরকে পাকুরতিয়া হয়ে বাঁশবাড়িয়া ঘুরে প্রায় ১৫ কিলোমিটার অতিরিক্ত পথ পাড়ি দিতে হচ্ছে। এতে সময় ও খরচ—দুটিই বেড়েছে কয়েকগুণ।

চিতলিয়া গ্রামের কনিকা তালুকদার বললেন, ‘বছরের শেষে সেতু ভাঙে, বছরের শুরুতে সড়ক ভেঙে গেল। ঘরবাড়িও হারিয়েছি। অন্যের ঘরে ঠাঁই নিয়েছি, ইউএনও স্যারের আশ্বাসে একটু সাহস পাচ্ছি।’

স্থানীয় বৈশাখী মণ্ডল জানান, নদীর গর্ভে চলে গেছে অন্তত ২৫টি বসতবাড়ি, গাছপালা আর ফসলি জমি। ঝুঁকিতে রয়েছে ইউনিয়নের পানি সরবরাহ লাইনও। দ্রুত প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা না নিলে পুরো এলাকা বিলীন হওয়ার আশঙ্কা।

এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন স্কুলে যেত ডুমুরিয়া বহুমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জাহানারা খানম। কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলল, ‘সড়কটা আমাদের একমাত্র রাস্তা। এখন স্কুল যাওয়া যেন এক দুঃস্বপ্ন। হাঁটাও যায় না, ভ্যানও চলে না।’

টুঙ্গিপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মঈনুল হক বলেন, ‘নদীভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে খাদ্য সহায়তা দেওয়া হয়েছে। লতা বেগমের জন্য ঘর তৈরি করে দেওয়া হবে। এলজিইডি ও পানি উন্নয়ন বোর্ডকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। দ্রুত সড়ক সংস্কারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

স্থানীয়দের আশঙ্কা, দেরি হলে পুরো চিতলিয়াই মানচিত্র থেকে মুছে যেতে পারে। তাই তাঁরা সরকারের কাছে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।

বিআরইউ