ফরিদপুরে পঞ্চম শ্রেণির এক স্কুলছাত্রকে স্কুলে যাওয়ার পথে পিটিয়ে ও নদীতে চুবিয়ে নির্যাতনের ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তার এবং বিচার দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার দুপুরে সদর উপজেলার কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের চিলারকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে এই মানববন্ধন হয়।
চিলারকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র মোহসিন খান জানান, ৮ মে স্কুলে যাওয়ার পথে দুর্বৃত্তরা তাকে প্রথমে ধরে মারধর করে এবং পাশের নদীতে চুবিয়ে দেয়। এরপর, স্কুলে যাওয়ার পর আবার তাকে জোরপূর্বক ধরে নিয়ে মুখে গামছা বেঁধে টানা হেঁচড়া করে এবং এলোপাতাড়ি চড়-থাপ্পড়, কিল-ঘুষি মারে ও লাঠি দিয়ে পেটায়। হামলাকারীরা তার বাবার দায়ের করা মামলা তুলে নিতে বলে এবং মামলা না তুললে তাকে হত্যার হুমকি দেয়।
মোহসিনের বাবা দেলোয়ার খান (৩৬) জানান, স্থানীয় এক যুবকের পরকিয়া সম্পর্ক নিয়ে বাধা দেওয়ার কারণে গত বছরের ১২ জুন ইউপি মেম্বার মনিরুজ্জামান আবেদের নেতৃত্বে তাকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে নির্যাতন চালানো হয়। হামলাকারীরা তাকে চোর বলে অপবাদ দিয়ে কোমর থেকে পা পর্যন্ত পিটিয়ে আহত করে। তিন মাস ধরে ঢাকা ও ফরিদপুরের ট্রমা সেন্টারে চিকিৎসা নেয়ার পর কিছুটা সুস্থ হন তিনি।
মোহসিনের মা মিরা আক্তার (৩০) জানান, স্বামীর উপর হামলার ঘটনায় তিনি বাদি হয়ে কোতোয়ালি থানায় ৯ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেছেন, যা বর্তমানে আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। মামলাটি তুলে নিতে তার ছেলের উপর নির্যাতন চালানো হয়।
এ ঘটনায় চিলারকান্দি গ্রামের রবিন শেখ (২০), শাহিন মল্লিক (২৫), উজ্জল শেখ (২৫), হাসিব মল্লিক (৪৯), হানিফ শেখ (৪৫) সহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে কোতোয়ালি থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। কোতোয়ালি থানার এএসআই রেজাউলের নেতৃত্বে পুলিশ ঘটনাটি তদন্ত করছে।
মানববন্ধনে অভিযোগ করা হয়, থানায় অভিযোগ দায়ের করা হলেও এখনো পর্যন্ত কোনো মামলা দায়ের হয়নি এবং অভিযুক্তরা প্রকাশ্যে ঘোরাফেরা করছে। এমনকি থানা পুলিশকে হুমকি দেওয়া হচ্ছে যে, তারা আবারো হামলা চালাতে পারে।
এ ব্যাপারে কোতোয়ালি থানার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) রেজাউল জানান, ঘটনার তদন্তে ওই শিশুকে মারধরের সত্যতা পাওয়া গেছে। এব্যাপারে পরবর্তী আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে।
ইএইচ