জলাবদ্ধতার জন্য সাবেক মেয়র ও সিডিএ চেয়ারম্যানদের দুষলেন উপদেষ্টা

মামুনুর রশিদ, চট্টগ্রাম ব্যুরো প্রকাশিত: মে ১৩, ২০২৫, ০৮:১১ পিএম

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ, সেতু, সড়ক ও পরিবহনবিষয়ক উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান চট্টগ্রাম নগরীর জলাবদ্ধতার জন্য সরাসরি দোষারোপ করেছেন সাবেক মেয়র ও সিডিএ চেয়ারম্যানদের। তিনি বলেন, "নগরের জলাবদ্ধতা সম্পূর্ণভাবে মানুষের সৃষ্টি। আমি যখন চট্টগ্রামে পড়াশোনা করতাম, তখন এ ধরনের জলাবদ্ধতা ছিল না। এর মূল কারণ হলো খাল ও নালার দখল। অথচ দখল উচ্ছেদের পরিবর্তে মেয়র ও সিডিএ চেয়ারম্যানরা দখলকারীদের সঙ্গে সখ্যতা গড়েছেন।"

মঙ্গলবার দুপুরে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর চট্টগ্রাম মহানগর শাখার নিজস্ব অর্থায়নে পরিচালিত বির্জাখাল খনন ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রমের অগ্রগতি পরিদর্শন শেষে আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

উপদেষ্টা বলেন, “খননের পর সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো, খাল পরিষ্কারের পর আবারও তাতে ময়লা ফেলা হচ্ছে। এতে খাল পরিষ্কার করে কোনো লাভ হয় না। আমরা ইতোমধ্যে ১০ হাজারের মতো ডাস্টবিন সরবরাহ করেছি। এখন থেকে সেসব ডাস্টবিনেই ময়লা ফেলতে হবে। বিভাগীয় কমিশনারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে— কেউ যদি বিনের বাইরে ময়লা ফেলেন, তাহলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে। পাশাপাশি এলাকাবাসীকেও ডাস্টবিনের যত্ন নিতে হবে। কোনো বিন হারিয়ে গেলে যেই এলাকায় তা ঘটবে, সেই এলাকার বাসিন্দাকে জরিমানা দিতে হবে।”

তিনি আরও বলেন, “চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা নিরসনে যা যা করা প্রয়োজন, আমরা সব করব। যাঁরা কাজ করতে চান, তাদের আমরা সুযোগ দিচ্ছি। এখন নাগরিকদের পালা— খাল পরিষ্কার রাখার দায়িত্ব তাঁদেরই। একদিকে খাল খনন করে আর অন্যদিকে ময়লা ফেলা হলে সব প্রচেষ্টা ব্যর্থ হবে। এ বিষয়ে নগরবাসীর সহযোগিতা প্রয়োজন।”

সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন জামায়াতে ইসলামীর চট্টগ্রাম মহানগর আমির ও সাবেক এমপি শাহজাহান চৌধুরী। তিনি বলেন, “২৪ দিনের মাথায় উপদেষ্টা মহোদয় আমাদের কার্যক্রম পরিদর্শনে এসেছেন— এতে আমাদের নেতাকর্মীরা অত্যন্ত উৎসাহিত হয়েছেন। তিন হাজার ফুটের খালটির মধ্যে আমরা প্রায় ১৮ শ’ ফুট অংশের কাজ শেষ করেছি। অবশিষ্ট অংশ ইনশাআল্লাহ ঈদুল আজহার আগেই শেষ করব।”

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা হিসেবে বলেন, “নগরকে একটি গ্রিন ও হেলদি সিটিতে পরিণত করতে দলমত নির্বিশেষে সবাইকে নিয়ে একসাথে কাজ করতে চাই। তাহলেই আমরা একটি সুন্দর নগর গড়ে তুলতে পারব। বির্জাখালের খনন ও পরিষ্কার কার্যক্রম পরিচালনার জন্য আমি জামায়াতে ইসলামীকে ধন্যবাদ জানাই।”

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন— সিডিএ চেয়ারম্যান প্রকৌশলী নুরুল করিম, সিডিএর প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামস, বোর্ড সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মানজারে খোরশেদ, প্রকৌশলী মোমিনুল হক, নগর সহকারী সেক্রেটারি খায়রুল বাশার ও মোহাম্মদ উল্লাহ, সাবেক ওয়ার্ড কাউন্সিলর অধ্যক্ষ শামসুজ্জামান হেলালী, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের নগর সভাপতি এস. এম. লুৎফুর রহমান, জামায়াত নেতা ডা. আবু নাছের, নগর কর্মপরিষদ সদস্য ডা. মো. সিদ্দিকুর রহমান, আবু হেনা মোস্তফা কামাল, হামেদ হাসান ইলাহী, আমির হোছাইন, বাকলিয়া থানা আমির সুলতান আহমদ, পাঁচলাইশ থানা আমির ইঞ্জিনিয়ার মাহবুবুর হাসান রুমী, বাকলিয়া থানা নায়েবে আমির আবুল মনসুর, চকবাজার থানা নায়েবে আমির আবদুল হান্নান, থানা সেক্রেটারি সা’দুর রশিদ চৌধুরী এবং বাকলিয়া থানা সেক্রেটারি নুর আহমদ প্রমুখ।

এর আগে উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান বির্জাখালের খনন ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম পরিদর্শন করেন।

ইএইচ