যত্রতত্র অবৈধ হাটবাজার

মাদারীপুর প্রশাসনের অবহেলায় লাখ লাখ টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার

জাহিদ হাসান, মাদারীপুর প্রকাশিত: মে ১৪, ২০২৫, ০৮:৪৯ পিএম


মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলায় যত্রতত্র বসে যাচ্ছে অবৈধ হাট-বাজার, যা সরকার অনুমোদিত বাজারগুলোকে প্রাণহীন করে ফেলছে। অধিকাংশ অবৈধ বাজারে ইজারা তোলা হলেও, সরকার অনুমোদিত বাজারগুলোর ইজারা মূল্য কমে গেছে এবং এসব অবৈধ বাজারে বেআইনীভাবে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে দৈনিক খাজনা সংগ্রহ করে স্থানীয় প্রভাবশালীরা লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। যদিও এসব বাজারের কার্যক্রম প্রকাশ্যে চলে, তবুও জেলা ও উপজেলা প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, রাজৈর উপজেলার খালিয়া ইউনিয়নের উল্লাবাড়ি এলাকায় ২০/২৫ বছর ধরে বাজার বসাচ্ছে স্থানীয় ইউপি সদস্য সুখ বাড়ৈ ও তার বড় ভাই সুরেষ বাড়ৈ। মাছ, সবজি, মুদিসামগ্রীসহ অন্যান্য দোকান এখানে রয়েছে এবং প্রতিদিন সকাল ৬টা থেকে ৯টা পর্যন্ত চলে এই বাজার। রাস্তার এক পাশে ইউপি সদস্যের পৈত্রিক জমিতে ২০/২৫টি দোকান তোলা হয়েছে এবং খালের পাশে আরও ২০/২৫টি দোকান বসানো হয়েছে, যা ভাড়া দিয়ে প্রতি মাসে প্রায় লাখ টাকা আয় করছেন তারা।

এই বাজারের বিষয়ে স্থানীয় ভূমি অফিসের কর্মকর্তাদের কাছে জানতে চাইলে তারা দাবি করেন, তারা কিছুই জানেন না। খালিয়ার টেকেরহাটের কাছে সেনদিয়া এলাকাতেও অবৈধভাবে বাজার বসানো হয়েছে, যেখানে স্থানীয় এক স্কুল শিক্ষক তপন চক্রবর্তী খাজনা নিচ্ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। যদিও শিক্ষক নিজে দাবি করেন, বাজারে কোনো খাজনা নেয়া হয় না, কিন্তু নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক দোকানদার জানিয়েছেন যে, প্রতিদিন খাজনা দিতে হয়, যা শিক্ষক তপন চক্রবর্তীই সংগ্রহ করেন।

এ বিষয়ে খালিয়া ইউনিয়নের ভূমি কর্মকর্তা হাফিজুর রহমান বলেন, "এই বাজার সম্পর্কে আমার কোনো ধারণা নেই। আমি এসব বাজারের সাথে যোগাযোগ করিনি, তাই কোনো মন্তব্য করতে পারব না।"

রাজৈর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জানান, "আমি রাজৈর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে এই ধরনের ছোট বাজার বসার কথা শুনেছি। তবে খাজনা তোলার বিষয়টি আমার জানা নেই। জেলা প্রশাসনের অনুমতি ছাড়া কোনো বাজার বসানো হলে তা অবৈধ হবে। বাজার বসানোর জন্য প্রথমে জেলা প্রশাসনের অনুমতি নিতে হবে, এরপর বাজারের জমি দান করা হবে এবং পেরিফেরি অনুযায়ী দোকান বরাদ্দ দেওয়া হবে। এসব বাজার প্রতি বছর ইজারা দেওয়া হবে, আর সেই ইজারার টাকা সরকারী কোষাগারে জমা হবে। আমি দ্রুত রাজৈর উপজেলার অবৈধ বাজারগুলোর বিষয়ে ব্যবস্থা নেব।"

ইএইচ