সরিষাবাড়ীতে চিরকুট লিখে এসএসসি পরীক্ষার্থীর আত্মহত্যা

সরিষাবাড়ী (জামালপুর) প্রতিনিধি প্রকাশিত: মে ১৬, ২০২৫, ০৩:৫৩ পিএম

জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে পরিবারের সঙ্গে অভিমান করে চিরকুট লিখে আত্মহত্যা করেছে আপন মিয়া (১৬) নামে এক এসএসসি পরীক্ষার্থী। 

বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে উপজেলার পোগলদিঘা ইউনিয়নের বয়ড়া সরকার বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত আপন মিয়া ওই এলাকার শিপন মিয়ার ছেলে ও বয়ড়া ইসরাইল আহমেদ উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিল। মৃত্যুর আগে সে দুই পৃষ্ঠার একটি চিরকুট লিখে গেছে।

চিরকুটে আপন মিয়া লিখেছে, “আমি আপনাদের অনেক কষ্ট দিয়েছি, অনেক ক্ষতি করেছি। ছোটবেলা থেকেই খারাপ ছিলাম, নিজেকে কখনো ভালো করতে পারিনি। বাবার কথা রাখতে পারিনি, তার মনে কষ্ট দিয়েছি। বাবা, আপনার পা ধরে মাফ চাইতে পারলাম না—মাফ করে দিয়েন। মা, তুমি আমার জন্য অনেক কষ্ট করেছো, অনেক বুঝিয়েছো, তবু ভালো হতে পারলাম না। দাদার কথা কী বলবো, উনিও আমার জন্য অনেক সম্মান হারিয়েছেন, অনেক করেছেন, তবু আমি কেন ভালো হতে পারলাম না! আমি সবাইকে কষ্ট দিয়েছি, সবাই আমাকে মাফ করে দিয়েন। বন্ধুদের বলবো—তোদের সঙ্গে অনেক মজা করেছি, কেউ আমার কথায় কষ্ট পেয়ে থাকলে মাফ করে দিস। আমার কবরে মাটি দিতে আসিস, আর কেউ আমার কাছে টাকা পেয়ে থাকলে মাফ করে দিয়েন। আমি ভালো হতে পারিনি, তাই নিজেই চলে যাচ্ছি। তোমাদের খারাপ সন্তান আর নেই।” —ইতি, আপনদের খারাপ ছেলে 'আপন'।

নিহতের দাদা, বীর মুক্তিযোদ্ধা শামসুল হক জানান, “আমার ছেলে (আপনের বাবা) ইটভাটায় কাজ করে আর আপনের মা বাড়ির পাশে কাজ করেন। বৃহস্পতিবার রাতে খেয়ে নিজের ঘরের দরজা বন্ধ করে ঘুমাতে যায় আপন। কিছুক্ষণ পর তার মা ডাকাডাকি করলেও কোনো সাড়া না পেয়ে দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকলে তাকে ফাঁসিতে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান। পাশে ওই চিরকুটটি পাওয়া যায়।”

এ বিষয়ে সরিষাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাশেদ হাসান বলেন, “আত্মহত্যার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করেছে। পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ না থাকায় ও তাদের আবেদনের প্রেক্ষিতে ময়নাতদন্ত ছাড়াই মরদেহ দাফনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।”

ইএইচ