টাঙ্গাইলের নাগরপুর থেকে রাজধানী ঢাকাগামী রুটে চলছে চরম পরিবহন নৈরাজ্য। কোনো নিয়মনীতি না মেনে রাস্তায় চলছে মেয়াদোত্তীর্ণ ও ফিটনেসবিহীন বাস। অধিকাংশ বাসের বডি জীর্ণ, রঙচটা, সংকেত বাতি ও লুকিং গ্লাস নেই, এমনকি অনেক বাসের পেছনের কাচও ভাঙা। যাত্রী আসনগুলো ধুলা-ময়লায় পরিপূর্ণ, প্রতিদিন যাত্রীদের এর মধ্যেই যাতায়াত করতে হচ্ছে।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, নাগরপুর থেকে মামুদনগর-কালামপুর ও ধুবড়িয়া-মানিকগঞ্জ হয়ে ঢাকাগামী ‘এসবি লিংক’ ও ‘ভিলেজ লাইন’ নামের বাসগুলোই চলাচল করছে। যাত্রীদের অভিযোগ—এসব বাস যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনার কারণ হয়ে উঠতে পারে।
নিয়মিত যাত্রী শরিফুল ইসলাম বলেন, “প্রতিদিন এই রুটে যাতায়াত করি। কিন্তু বাসের অবস্থা এতটাই খারাপ—ভাঙা কাচ, নষ্ট ব্রেক—সবসময় আতঙ্কে থাকতে হয়।”
আরেক যাত্রী বলেন, “আমরা পূর্ণ ভাড়া দিই, কিন্তু সেবার বালাই নেই। সরকার যদি নজর দিত, তাহলে এত দুর্ভোগ হতো না। ঢাকাগামী ভালো মানের বাস খুব প্রয়োজন আমাদের।”
ভৌগোলিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ নাগরপুর উপজেলা আশপাশের ছয়টি উপজেলার সঙ্গে সংযুক্ত এবং ঢাকার সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ রয়েছে। প্রতিদিন প্রায় ১০ হাজার যাত্রী এই রুটে যাতায়াত করেন শতাধিক বাসে।
যদিও সড়কের অবকাঠামো উন্নয়ন হয়েছে, কিন্তু বাসের মান না বাড়ায় যাত্রী ভোগান্তি বেড়েছে। ৩ ঘণ্টার পথ পাড়ি দিতে সময় লাগছে ৪ থেকে ৫ ঘণ্টা।
বিআরটিএ’র নিয়ম অনুযায়ী, কোনো বাস রাস্তায় নামানোর আগে ৩২টি মানদণ্ড পর্যালোচনা করে ফিটনেস সনদ ও রুট পারমিট দেওয়া হয়।
কিন্তু প্রশ্ন হলো—এত নষ্ট ও অযোগ্য বাস কিভাবে ফিটনেস সনদ পাচ্ছে? স্থানীয়দের অভিযোগ, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের গাফিলতি ও নজরদারির অভাবেই এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
নাগরপুরবাসী এখন সময়ের দাবি হিসেবে নিরাপদ, আধুনিক ও বিলাসবহুল বাস সার্ভিস চালুর আহ্বান জানাচ্ছেন। একই সঙ্গে সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে নাগরপুর বাস মালিক সমিতির সুপারভাইজার মো. রাসেল মিয়া বলেন, “নাগরপুরে বর্তমানে কোনো বাস মালিক সমিতির স্থায়ী কমিটি নেই। আমরা ঢাকা কমিটির তত্ত্বাবধানে কাজ করছি। পরিবহন সমস্যা নিরসনে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ফিটনেসবিহীন বাস অপসারণ এবং যাত্রীসেবার মান উন্নয়নে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি।”
ইএইচ