নড়াইলের লোহাগড়ায় কৃষক খাজা মোল্যা হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় প্রধান আসামি ইতনা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি পলাশ শেখসহ সকল আসামির গ্রেপ্তার ও দল থেকে বহিষ্কারের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছেন বিএনপির স্থানীয় নেতাকর্মীরা।
রোববার বিকেলে লোহাগড়া উপজেলার ইতনা বাজারে আঞ্চলিক বিএনপি অফিসের সামনে সড়কে ইতনা ইউনিয়ন বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের ব্যানারে এই কর্মসূচি পালন করা হয়। একইসঙ্গে এলাকাবাসীর আয়োজনে একটি ঝাড়ু মিছিলও অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে ১ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের সভাপতি হাবিবুর রহমানের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন লোহাগড়া উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি রইচ উদ্দিন পলু, ইতনা ইউনিয়ন বিএনপির সহ-সভাপতি পান্নু মুন্সি, সদস্য মো. রাকিব হোসেন, যুবদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মোল্যা আব্দুর রহমান, স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা হিরোসহ অন্য নেতারা।
বক্তারা বলেন, খাজা মোল্যা একজন নিরীহ কৃষক ছিলেন। তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে পলাশ শেখ ও তার বাহিনী। এ হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে তারা এলাকায় সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করতে চেয়েছিল। তারা দাবি জানান, পলাশ শেখ ও তাঁর অনুসারীদের দল থেকে বহিষ্কার করতে হবে এবং দ্রুত সকল আসামিকে গ্রেফতার করতে হবে।
বক্তারা আরও অভিযোগ করেন, পলাশ শেখ ইউনিয়ন বিএনপির নেতা হলেও তার কার্যক্রম আওয়ামী লীগপন্থী। তার নেতৃত্বে বিএনপির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হচ্ছে। চাঁদাবাজি, জমি দখল ও সন্ত্রাসী কার্যক্রমের মাধ্যমে তিনি স্থানীয় নেতা-কর্মীদের আতঙ্কিত করে তুলেছেন। তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে বিএনপির সাংগঠনিক ভিত্তি দুর্বল হবে বলে তারা আশঙ্কা প্রকাশ করেন।
এর আগে বিকেল সাড়ে ৪টায় পার-ইছাখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে এলাকাবাসীর উদ্যোগে ঝাড়ু মিছিল ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে শতাধিক নারী-পুরুষ অংশ নেন।
স্থানীয় সূত্র জানায়, ইতনা ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য শাহাদুল শেখ ও বিএনপি নেতা পলাশ শেখের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিক বিরোধ চলছিল। গত ১৪ মে সকালে পার-ইছাখালী থেকে কুমারডাঙ্গা বাজারে চা খেতে যান শাহাদুল সমর্থিত খাজা মোল্যা। সেখানেই ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা করে প্রতিপক্ষের লোকজন। পরে তারাই খাজার মরদেহ লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রেখে পালিয়ে যায়। নিহতের ছোট বোন সুমি হাসপাতালেই ছিলেন এবং তিনিই মরদেহ শনাক্ত করেন।
ঘটনার পরদিন নিহতের ভাই আলী হায়দার মোল্যা বাদী হয়ে লোহাগড়া থানায় ৩৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। মামলায় পলাশ শেখকে প্রধান আসামি করা হয়। পুলিশ এ পর্যন্ত শেখ নিয়ামুল ইসলাম ও হোসাইন শেখ নামে দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে।
নিহত খাজার পরিবার অভিযোগ করে বলেন, খাজা কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। হত্যাকাণ্ডের ১০ দিন পার হলেও প্রধান আসামিরা ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছে। তারা দ্রুত আসামিদের গ্রেপ্তার ও বিচার দাবি করেন।
এ বিষয়ে লোহাগড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শরিফুল ইসলাম বলেন, “মামলার দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকি আসামিদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।”
ইএইচ