আসন্ন কোরবানির ঈদকে ঘিরে চুয়াডাঙ্গায় গড়ে উঠেছে প্রায় হাজার কোটি টাকার পশুর বাজার। জেলার অভ্যন্তরীণ চাহিদার তুলনায় ৭৪ হাজার ৫৮১টি অতিরিক্ত কোরবানির পশু প্রস্তুত করেছেন প্রান্তিক কৃষক ও খামারিরা। এসব পশু দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হবে।
জেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, চুয়াডাঙ্গায় এ বছর কোরবানির জন্য প্রস্তুত রয়েছে ১ লাখ ৯৯ হাজার ৪৩৬টি গরু, মহিষ, ছাগল ও ভেড়া। জেলার অভ্যন্তরীণ চাহিদা ১ লাখ ২৪ হাজার ৮৫৫টি। ফলে চাহিদার চেয়ে প্রায় ৬০ শতাংশ বেশি পশু উৎপাদন হয়েছে।
দামুড়হুদার কৃষক মোতালেব হোসেন বললেন, ‘গতবারের তুলনায় গরু বড় হয়েছে, খরচও বেশি। কিন্তু দাম এখনো নিশ্চিত না। কিছুটা দুশ্চিন্তায় আছি।’ তবে অনেক খামারি জানাচ্ছেন, মাঝারি ও ছোট সাইজের গরুর চাহিদা ভালো, বিক্রিও হচ্ছে আগেভাগেই।
জীবননগরের খামারি লাল বলেন, আমার ১৫টি গরুর মধ্যে ৮টি এরই মধ্যে বিক্রি হয়েছে। লাভ মোটামুটি ভালোই।
প্রথমবার খামার করছেন এমন অনেকে আশাবাদী। নবীন খামারি জাহিদুল বলেন, এবার ৪টি গরু হাটে তুলছি। ভালো সাড়া পাচ্ছি।
জেলার অন্যতম বৃহৎ খামার ‘আস্থা এগ্রো অ্যান্ড ডেইরি ফার্ম’-এর মালিক অনিক বিশ্বাস জানান, আমরা আড়াইশ গরু প্রস্তুত করেছি, এর মধ্যে ২০০টি বিক্রি হয়ে গেছে। ঢাকায় গাবতলী হাটে কিছু বড় গরু পাঠানো হবে। আমাদের খামারে ১০-১২ লাখ টাকার গরুও রয়েছে।
চুয়াডাঙ্গায় ৮টি কোরবানির পশুর হাটের পাশাপাশি অনলাইনেও পশু বিক্রি হচ্ছে। জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. সাহাবুদ্দিন বলেন, ‘এবার বিদেশি পশু না থাকায় দেশীয় খামারিরা ন্যায্য দাম পাচ্ছেন। অনলাইন বিক্রিতেও সাড়া ভালো।’
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ডা. শামীমুজ্জামান বলেন, ‘নতুন কেনা গরুকে হঠাৎ দানাদার খাবার না দিয়ে কাঁচা ঘাস, বিচালি ও স্যালাইন খাওয়ানো উচিত। ঠান্ডা স্থানে রাখতে হবে, নিয়মিত গোসল করাতে হবে।’
অর্থনীতিবিদদের মতে, চুয়াডাঙ্গার এই বিপুল পশু উৎপাদন ও বেচাকেনা গ্রামীণ অর্থনীতিকে চাঙ্গা করছে। প্রাণিসম্পদ, খামার উপকরণ, পরিবহন, পশুর খাদ্যসহ নানা খাতে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।
বিআরইউ