খুলনায় সুপেয় পানির তীব্র সংকট, দুর্ভোগে নগরবাসী

খুলনা ব্যুরো প্রকাশিত: জুন ৩, ২০২৫, ০৬:১৬ পিএম

শিল্পনগরী খুলনায় গ্রীষ্ম মৌসুমে তীব্র আকার ধারণ করেছে সুপেয় পানির সংকট। 

অনুসন্ধানে জানা গেছে, গত এক দশকে নগরীর ১৪টি ওয়ার্ডে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর ১ দশমিক ৯৮ থেকে ৪ দশমিক ৪ মিটার পর্যন্ত নিচে নেমে গেছে। 

এর ফলে বন্ধ হয়ে গেছে অনেক টিউবওয়েল ও গভীর নলকূপ। এখন ট্যাংকির পানি কিংবা বোতলজাত পানিই ভরসা নগরবাসীর, যা নিম্নবিত্ত মানুষের নাগালের বাইরে।

নগরীর শ্মশান ঘাট এলাকার বাসিন্দা চম্পা বলেন, “অনেক দূর থেকে পানি আনতে হয়, ঠিকমতো গোসলও করা যায় না।”

আরেক বাসিন্দা দেলোয়ার জানান, “আগে টিউবওয়েল থেকে সহজেই পানি পাওয়া যেত, এখন বাড়ি বাড়ি গিয়ে পানি চাইতে হয়।”

খুলনা ওয়াসার তথ্য অনুযায়ী, তারা দৈনিক গড়ে মাত্র ৮ কোটি ৫০ লাখ লিটার পানি সরবরাহ করতে পারছে, অথচ নগরীর ১৫ লক্ষাধিক বাসিন্দার জন্য প্রয়োজন ২৪ কোটি লিটার। অর্থাৎ, প্রতিদিন গড়ে ১৫ কোটি ৫০ লাখ লিটার পানির ঘাটতি রয়েছে। সেই সরবরাহকৃত পানির মান নিয়েও রয়েছে নগরবাসীর অভিযোগ।

নগরীর রায়েরমহল এলাকার বাসিন্দা মিলন বলেন, “ওয়াসার পানি অনেক সময়ই নোংরা ও দুর্গন্ধযুক্ত থাকে। তা খাওয়ার তো উপযোগী নয়ই, গোসল করাও কষ্টকর।”

খুলনা নাগরিক সমাজের সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট বাবুল হাওলাদার বলেন, “অপরিকল্পিতভাবে সাবমারসিবল পাম্প বসানো এবং অতিরিক্ত পানি উত্তোলনের কারণে পানির স্তর দিন দিন নিচে নামছে। টেকসই সমাধান ছাড়া এই সংকট নিরসন সম্ভব নয়।”

এ বিষয়ে খুলনা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. হুসাইন শওকত বলেন, “আমরা সমস্যা সমাধানে কাজ করছি। কোথাও পানির মান নিয়ে অভিযোগ পেলে তাৎক্ষণিক টিম পাঠিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হয়। বর্তমানে যে পাইপলাইন ব্যবস্থায় পানি সরবরাহ করা হচ্ছে, তা পুরনো ডিজাইনের। নতুন প্রযুক্তি অনুযায়ী বড় ব্যাসার্ধের পাইপ স্থাপন করা হচ্ছে।”

তিনি আরও জানান, “নগরীর প্রতিটি পরিবারকে ওয়াসার আওতায় আনতে ‘ফেইজ টু’ নামে একটি নতুন প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। এটি বাস্তবায়ন হলে প্রত্যেকে নিরবচ্ছিন্নভাবে সুপেয় পানি পাবে।”

ইএইচ