নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে নিয়মবহির্ভূতভাবে কলতাপাড়া ফাজিল ডিগ্রি মাদ্রাসার সভাপতি হওয়ার অভিযোগ উঠেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ড. ইকবাল হোসেন ভূইয়ার বিরুদ্ধে।
এ ঘটনার প্রতিবাদে স্থানীয় এলাকাবাসী, শিক্ষার্থী ও নির্বাচিত ম্যানেজিং কমিটির সদস্যরা বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছেন।
মঙ্গলবার বিকেলে জামপুর ইউনিয়নের কলতাপাড়া এলাকায় এ কর্মসূচি পালন করা হয়।
অভিযোগে জানা গেছে, মাদ্রাসাটিতে গত ১০ এপ্রিল নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা করা হলে ১২ এপ্রিল নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এতে দাতা, প্রতিষ্ঠাতা ও অভিভাবক সদস্যসহ ৯ সদস্যের একটি নির্বাহী কমিটি গঠিত হয়। নিয়ম অনুযায়ী কমিটির সমর্থন বা গোপন ভোটের মাধ্যমে সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ড. ইকবাল হোসেন ভূইয়া নির্বাহী কমিটির কোনো আলোচনা ছাড়াই ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদনে রেজিস্ট্রার আইউব হোসেন স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে গত ২৪ মে সভাপতি পদে দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
অভিযোগকারীরা আরও জানান, এর আগে ১৫ মে মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল আব্দুল আউয়াল প্রতিষ্ঠানটির প্যাডে নারায়ণগঞ্জ জেলার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) কে সভাপতি করার প্রস্তাব দিয়ে ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বরাবর আবেদন করেন। এ তথ্য জানার পর ড. ইকবাল রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে প্রস্তাব ব্যতিরেকেই সভাপতি পদে নিযুক্ত হন। বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ২৬ মে প্রিন্সিপাল পুনরায় ড. ইকবালের সভাপতি পদ বাতিলের আবেদন করেন।
নির্বাচিত সদস্য মনির হোসেন, সানাউল্লাহ ও নজরুল ইসলাম বলেন, "ড. ইকবাল আমাদের সঙ্গে কোনো আলোচনা ছাড়াই রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে রাতের আঁধারে সভাপতি হয়েছেন। আমরা এই অনিয়মের তীব্র প্রতিবাদ জানাই এবং তার পদ বাতিলের দাবি জানাচ্ছি।"
মাদ্রাসার প্রভাষক ইব্রাহিম মিয়া বলেন, "জামায়াত নেতা ড. ইকবাল দীর্ঘদিন ধরে এই মাদ্রাসা দখলের চেষ্টা করে আসছেন। আমরা চাই না এখানে কোনো রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ থাকুক।"
এ বিষয়ে ড. ইকবাল হোসেন ভূইয়া বলেন, "জামায়াত কখনো রাজনৈতিক প্রভাব খাটায় না। আমি কাউকে ব্যবহার করে সভাপতি হইনি। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নিয়ম মেনেই আমাকে মনোনীত করেছে। নির্বাচনটি ছিল প্রহসনমূলক—অনেককে ভয়ভীতি দেখানো হয়েছিল।"
সোনারগাঁ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেন বলেন, "প্রিন্সিপাল সভাপতি মনোনয়নের প্রস্তাব দিতে পারেন, তবে নিয়োগের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের। কীভাবে তিনি সভাপতি হলেন, সে বিষয়ে আমার জানা নেই।"
ইএইচ