লক্ষ্মীপুরে দুই আইনজীবীর বিরুদ্ধে আদালতের স্টেনোটাইপিস্টের মামলা

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি প্রকাশিত: জুন ১৬, ২০২৫, ০৪:৩৩ পিএম

লক্ষ্মীপুরে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-৩-এর স্টেনোটাইপিস্ট মো. আশরাফুজ্জামানকে মারধরের অভিযোগে দুই আইনজীবীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। অভিযুক্তরা হলেন আইনজীবী আশিকুর রহমান ও মিরাজ উদ্দিন। তাদের বিরুদ্ধে আদালত গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন। 
সোমবার দুপুরে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের প্রশাসনিক কর্মকর্তা ইমরান হোসেন গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন। 

এর আগে রোববার (১৫ জুন) রাতে আহত স্টেনোটাইপিস্ট আশরাফুজ্জামান নিজেই মামলাটি দায়ের করেন।

আসামিদের মধ্যে আইনজীবী আশিক লক্ষ্মীপুর পৌর শহরের দক্ষিণ মজুপুর এলাকার আলী আজ্জমের ছেলে এবং সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-২-এর সহকারী সরকারি কৌঁসুলি (এপিপি)। অপর অভিযুক্ত মিরাজ উদ্দিন রামগতি উপজেলার চরসীতা গ্রামের হরমুজুল হকের ছেলে।

মামলার এজাহারে বলা হয়, ঈদের ছুটির পর রোববার ছিল আদালতের প্রথম কার্যদিবস। ওইদিন দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে অভিযুক্ত দুই আইনজীবী সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-৩-এর এজলাসে প্রবেশ করেন। তারা চিৎকার করে বিচারপ্রার্থীদের এজলাস থেকে জোর করে বের করে দেওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু বিচারপ্রার্থীরা বের হতে না চাইলে অভিযুক্তরা দরজা বন্ধ করে দেন এবং একপর্যায়ে লাথি মেরে তা ভাঙার চেষ্টা করেন।

এ সময় স্টেনোটাইপিস্ট আশরাফুজ্জামান ও জারিকারক আনোয়ার হোসেন সুমন বাধা দিলে তারা আশরাফুজ্জামানকে মারধর করেন। এতে তার মাথায় আঘাত লাগে এবং চোখের কোণে রক্তাক্ত জখম হয়। তার জামা ছিঁড়ে যায়। জারিকারক সুমনকেও মারধর করা হয়।

আদালত সূত্র জানায়, ঘটনার পেছনে চলমান একটি চুরি মামলার জের রয়েছে। গত ৬ জুন লক্ষ্মীপুর জজ আদালতের আইনজীবী আবু তৈয়ব সদর মডেল থানায় একটি চুরি মামলা দায়ের করেন। মামলায় প্রিন্সিপাল কাজী ফারুকী স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রভাষক আহমেদ কাউসার উদ্দিন জামান ও ট্রাকচালক রুবেল হোসেন গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে যান। পরে ৯ জুন তারা জামিন আবেদন করলে কোনো আইনজীবী তাদের পক্ষে দাঁড়াননি।

তারা লিগ্যাল এইড অফিসে সহায়তা চাইলে দুজন আইনজীবীকে জামিন শুনানির দায়িত্ব দেওয়া হলেও তারা হেনস্তার আশঙ্কায় আদালতে উপস্থিত হননি। ১০ জুন বিচারক এম সাইফুল ইসলাম আসামিদের জামিন মঞ্জুর করেন। এরই ধারাবাহিকতায় আইনজীবীরা আদালত বর্জনের ঘোষণা দেন এবং রবিবার আদালতে গিয়ে সংঘাত সৃষ্টি করেন বলে অভিযোগ উঠে।

অন্যদিকে অভিযুক্ত আইনজীবী আশিকুর রহমান বলেন, “আমরা কেবল আদালত বর্জনের বিষয়টি জানাতে এজলাসে গিয়েছিলাম। তখন স্টেনোটাইপিস্টসহ কর্মচারীরা আমাদের ওপর হামলা করে। আমি কাউকে আঘাত করিনি।”

লক্ষ্মীপুর জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মো. রফিক উল্যাহ বলেন, “আইনজীবীদের বিরুদ্ধে মামলা হওয়া নিয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। অফিসিয়ালি বসে বিষয়টি নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। আমরা চাই না কোর্টের পরিবেশ উত্তপ্ত হোক, আমাদের কার্যক্রম স্বাভাবিক রয়েছে।”

ইএইচ