বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের আয়োজনে মাগুরায় অনুষ্ঠিত হলো “গণমাধ্যমের অপ-সাংবাদিকতা ও ইহার প্রতিরোধ এবং বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন” শীর্ষক একদিনব্যাপী সাংবাদিকতা প্রশিক্ষণ কর্মশালা।
শনিবার মাগুরা সার্কিট হাউজ কনফারেন্স রুমে দিনব্যাপী এ কর্মশালায় জেলার প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার অর্ধশতাধিক সাংবাদিক অংশ নেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান বিচারপতি এ কে এম আব্দুল হাকিম।
পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয়। এরপর রিপোর্টিং ও রেজিস্ট্রেশন পর্ব শেষে বিচারপতি হাকিম কর্মশালার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘোষণা করেন। স্বাগত বক্তব্য দেন মাগুরা জেলা তথ্য অফিসার।
প্রথম সেশনে রিসোর্স পারসন হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের সচিব (উপসচিব) মো. আব্দুস সবুর। তিনি “বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রচারে প্রেস কাউন্সিল প্রণীত আচরণবিধি প্রতিপালনের গুরুত্ব” শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, “গণমাধ্যমে অপ-সাংবাদিকতা একটি উদ্বেগজনক বিষয়। ভুল ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত সংবাদ সমাজে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে এবং গণমাধ্যমের প্রতি আস্থা কমিয়ে দেয়। প্রেস কাউন্সিল একটি স্বাধীন, দায়িত্বশীল ও বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতা চায়। এই কর্মশালার মাধ্যমে সাংবাদিকরা আরও সচেতন ও পেশাদার হবেন—এটাই প্রত্যাশা।”
প্রথম সেশনের শেষে বক্তব্য রাখেন মাগুরা জেলার পুলিশ সুপার মোছা. মিনা মাহমুদ (বিপিএম)।
তিনি বলেন, “সাংবাদিকতা একটি মহান পেশা। জনগণের কাছে সঠিক তথ্য পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে সাংবাদিকদের ভূমিকা অনস্বীকার্য। প্রেস কাউন্সিলের এই প্রশিক্ষণ সময়োপযোগী উদ্যোগ, যা সাংবাদিকদের নৈতিকতা ও দায়বদ্ধতা জোরদার করবে।”
দ্বিতীয় সেশনে প্রধান অতিথি বিচারপতি হাকিম “অপসাংবাদিকতা পরিহার করে দায়িত্বশীল সাংবাদিকতা চর্চায় প্রেস কাউন্সিল অ্যাক্ট, ১৯৭৪-এর প্রয়োগ” বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা তুলে ধরেন। এরপর অনুষ্ঠিত হয় এক প্রাণবন্ত প্রশ্নোত্তর পর্ব।
অনুষ্ঠানের সভাপতির বক্তব্যে মাগুরা জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. আহিদুল ইসলাম বলেন, “গণমাধ্যম সমাজের দর্পণ। অপসাংবাদিকতা বর্তমানে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রেস কাউন্সিলের এ ধরনের প্রশিক্ষণ কর্মশালা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অর্জিত জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা সাংবাদিকদের পেশাগত দায়িত্ব পালনে সহায়ক হবে।”
মাগুরা প্রেস ক্লাবের সভাপতি প্রফেসর সাঈদুর রহমান বলেন, “গুজব ও পক্ষপাতদুষ্ট সংবাদের ঝুঁকি বেড়েছে। এই প্রশিক্ষণ সাংবাদিকদের পেশাগত মানোন্নয়নে সহায়ক হবে।”
সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম শফিক বলেন, “এই ধরনের প্রশিক্ষণ আমাদের সহকর্মীদের নৈতিক সাংবাদিকতা চর্চায় অনুপ্রাণিত করবে। এর ধারাবাহিকতা থাকলে সাংবাদিকতা পেশায় গুণগত পরিবর্তন আসবে।”
দিনব্যাপী কর্মশালার শেষে অংশগ্রহণকারী সাংবাদিকদের মাঝে সনদপত্র বিতরণ করা হয়। আয়োজক ও অংশগ্রহণকারীরা আশা প্রকাশ করেন, এ ধরনের প্রশিক্ষণ সাংবাদিকতার মানোন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে এবং অপসাংবাদিকতা প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা পালন করবে।
ইএইচ