রাজবাড়ীর কৃষি বিপণন অফিসে অনৈতিক লেনদেন

রাজবাড়ী প্রতিনিধি প্রকাশিত: জুন ২১, ২০২৫, ০৭:০৭ পিএম

রাজবাড়ী জেলা কৃষি বিপণন অধিদপ্তর কার্যালয়ে পেঁয়াজ সংরক্ষণ ঘরের জন্য আবেদনপত্র জমা দিতে আসা কৃষকদের কাছ থেকে অনৈতিকভাবে টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। 

ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেছেন, নিজ হাতে আবেদনপত্র জমা দিতে হলেও অফিসে আসা কৃষকদের বাধ্য করা হচ্ছে টাকা দিতে; টাকা না দিলে আবেদনপত্র গ্রহণ করা হয় না।

বৃহস্পতিবার আবেদনপত্র জমাদানের শেষ দিন ছিল। আবেদন বাতিলের ভয়ে অনেক কৃষক বাধ্য হয়ে ২০০ থেকে ৩০০ টাকা পর্যন্ত জমা দিয়েছেন। 

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে কৃষি বিপণন কর্মকর্তা নাঈম আহমেদ ক্যামেরার সামনে বক্তব্য দিতে অস্বীকৃতি জানান।

কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের গণবিজ্ঞপ্তি অনুসারে, গত ২২ মে ২০২৫ কৃষক পর্যায়ে পেঁয়াজ ও রসুন সংরক্ষণের আধুনিকায়ন এবং বিপণন কার্যক্রম উন্নয়ন প্রকল্প (১ম সংশোধিত) এর আওতায় ২০২৫-২০২৬ অর্থ বছরে রাজবাড়ীর কালুখালী ও বালিয়াকান্দি উপজেলায় কয়েকটি মডেল ঘর নির্মাণ করা হবে। কাঠ, বাঁশ, টিন ও আরসিসি পিলার দিয়ে তৈরি এই মডেল ঘরের জন্য আগ্রহী চাষীদের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র, ২ কপি ছবি ও জমির পর্চা সহ নিজ হাতে লিখিত আবেদনপত্র ১৯ জুনের মধ্যে জেলা কৃষি বিপণন কার্যালয়ে জমা দিতে বলা হয়।

গণবিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী বালিয়াকান্দি ও কালুখালী উপজেলার শতাধিক কৃষক মডেল ঘরের জন্য আবেদন জমা দিয়েছেন। কিন্তু অভিযোগ উঠেছে, আবেদন জমার সময় ২০০ থেকে ৩০০ টাকা অনৈতিকভাবে নেওয়া হচ্ছে।

অভিযোগের সত্যতা যাচাই করতে জেলা বিপণন অফিসে একটি আবেদনপত্র জমা দিতে গেলে ২০০ টাকা নেওয়া হয়। পরে প্রতিবেদনকালে অফিস ও আশপাশের এলাকায় থাকা কৃষকদের সঙ্গে কথা বললে তারা এ টাকা দিতে বাধ্য হয়েছেন বলে জানায়। 

বালিয়াকান্দি উপজেলার সোনাপুর গ্রামের এক কৃষক জানান, আবেদনপত্র জমা দিতে অফিস সহকারী মো. এনামুল হক তার কাছে ৩০০ টাকা দাবি করেন। 

কৃষক বলেন, “আমি প্রথমে আবেদন জমা না দিয়ে নীচে এসে ছেলের সঙ্গে কথা বলে এরপর আবেদন জমা দিয়েছি, সঙ্গে ২০০ টাকা দিতে হয়েছে। রশিদ পায়নি। টাকা নেওয়ার কথা বলে ফটোকপি করানোর জন্য বলে।”

নাম প্রকাশ না করার শর্তে আরও কয়েকজন কৃষক অভিযোগ করেন, আবেদনপত্র জমা নিতে ২০০ থেকে ৩০০ টাকা নেওয়া হচ্ছে। তারা বলেন, “আমরা কৃষক, বিষয়টা ভালো বুঝি না, টাকা দিতে বাধ্য হয়েছি।”

একটি ভিডিওতে দেখা যায়, এক কৃষক তার আবেদনপত্র অফিস সহকারী এনামুল হকের কাছে জমা দিচ্ছেন। এনামুল হক রেজিস্ট্রি খাতায় তথ্য লিখছেন এবং কৃষক হাত থেকে টাকা নিচ্ছেন। আরেকটি ভিডিওতেও একই ধরনের দৃশ্য ধারণ হয়েছে।

রাজবাড়ী কৃষি বিপণন কর্মকর্তা নাঈম আহমেদ বলেন, “অনেকেই আবেদনপত্র জমা দিতে আসেন। অনেকেই অফিসের লোকজন দিয়ে আবেদনপত্র লেখাচ্ছেন। তাই হয়তো দু’একশ টাকা দিচ্ছে। বিষয়টি আমার জানা ছিল না। যদি কেউ এমন কাজ করে থাকে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

ইএইচ