‘সফট ড্রিংকস’ বোতলে কল্পনার জুস!

সাইফুল ইসলাম, মহেশপুর (ঝিনাইদহ) প্রকাশিত: জুন ২৭, ২০২৫, ১২:০২ পিএম

নব্বইয়ের দশকের সেই পরিচিত দৃশ্য যেন ফিরে এল ঝিনাইদহের মহেশপুরে। মাটির উঠোনে শিশুরা গড়ে তুলেছে খেলাঘর নয়, বরং ছোট্ট এক ‘বাজার’। শুকনো পাতা, কঞ্চির ছাউনি আর পুরনো বোতলে সাজানো ‘সফট ড্রিংকস’—সব মিলিয়ে তাদের কল্পনার দোকানে জমজমাট কেনাবেচা।

মাটির ঘরের পাশে কাঠি গেড়ে, তার ওপর শুকনো পাতা বিছিয়ে তৈরি হয়েছে ছাউনি। দোকানের বেঞ্চিতে রাখা রয়েছে পুরোনো প্যাকেটের খোসা, কয়েকটি কাঁচা লেবু, কিছু ফল আর পানির বোতল—যা তারা ‘জুস’ বলে বিক্রি করছে। কেউ হিসেব কষছে, কেউ দরদাম করছে, আবার কেউ খরিদ্দার সেজে পণ্য পছন্দ করছে। আচরণ আর আত্মবিশ্বাসে যেন তারা পুরোদস্তুর ব্যবসায়ী।

স্থানীয় প্রবীণরা বলেন, ‘আমাদের ছোটবেলাতেও এমনই খেলায় দিন কেটে যেত। আজকের শিশুদের মধ্যে সেই ঐতিহ্য আবার দেখে ভালো লাগছে।’ প্রযুক্তির আগ্রাসনের এই সময়ে এমন দৃশ্য এখন অনেকটাই বিরল।

বিশেষজ্ঞদের মতে, শিশুদের এমন খেলায় অংশগ্রহণ কেবল তাদের কল্পনাশক্তিই বাড়ায় না, বরং জীবনের প্রাথমিক বাস্তবতাগুলো শেখার ক্ষেত্র তৈরি করে। সামাজিক মিথস্ক্রিয়া, দরদাম, ভূমিকা ভাগাভাগি—সবই চলে আসে খেলার ভেতর দিয়েই।

আজকের অনেক গ্রামে যখন মোবাইল ফোন, টিভি আর ইউটিউব শিশুদের সময় গ্রাস করে নিচ্ছে, ঠিক তখন মহেশপুরের এই মাটির দোকান মনে করিয়ে দেয়—শিশুদের মনোজগতে এখনও আছে সরলতা, সৃষ্টিশীলতা আর স্বপ্ন দেখার সাহস।

বিআরইউ