টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার নারান্দিয়া ইউনিয়নের কাচিনা লখাই সামাজিক গোরস্থান থেকে কদমতলীর জিন্নত আলীর বাড়ি পর্যন্ত একটি বহু প্রতীক্ষিত রাস্তা নির্মাণ হওয়ায় বর্ষাকালের দুর্ভোগ থেকে মুক্তি মিলেছে দুই গ্রামের মানুষের। বহু বছর ধরে স্বপ্ন দেখা এই রাস্তাটি আজ যেন তাদের জীবনে নতুন আশার আলো হয়ে এসেছে।
বর্ষাকালে এ পথটি পুরোপুরি পানির নিচে চলে যেত। তখন গামছা গায়ে জড়িয়ে, বাঁশের সাঁকো, কলাগাছের ভেলা কিংবা নৌকায় করে পাড়ি দিতে হতো গ্রামের মানুষকে। মৃত্যুর পর লাশ বহন করতেও হতো দুর্ভোগ পোহাতে। অথচ এই পথে রয়েছে দুটি প্রাথমিক বিদ্যালয়, তিনটি মসজিদ, একটি সামাজিক গোরস্থান ও দুটি বাজার।
দীর্ঘদিনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সম্প্রতি কালিহাতী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে দুই লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। তবে বরাদ্দকৃত টাকায় পুরো রাস্তাটি নির্মাণ সম্ভব না হওয়ায়, নারান্দিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য ও বিএনপি নেতা রেজাউল করিম এবং ধনবাড়ী প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয়ের কর্মচারী মো. জুয়েল রানার উদ্যোগে স্থানীয়দের সঙ্গে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় সিদ্ধান্ত হয়—যতটুকু পথ সরকারি বরাদ্দে হবে, বাকি অংশ স্বেচ্ছাশ্রমে স্থানীয়রাই গড়ে তুলবেন। যার বাড়ির সামনে রাস্তা, সে নিজেই মাটি ভরাট করবে। যার মাটি নেই, সে কিনে এনে দেবে। আর এই উদ্যোগের মাধ্যমেই বাস্তবায়িত হয় বহু বছরের স্বপ্নের সেই কাঙ্ক্ষিত রাস্তা।
সাবেক ইউপি সদস্য রেজাউল করিম বলেন, এই রাস্তাটি শুধু একটি চলাচলের পথ নয়, এটি যেন আমাদের জীবনেরই অংশ। আগে কেউ মারা গেলে লাশ বহন করতে হতো ভীষণ কষ্টে। এখন আর সে কষ্ট নেই।
স্থানীয়দের অর্থায়ন, স্বেচ্ছাশ্রম ও আন্তরিকতায় গড়ে ওঠা এই রাস্তা যেন কাঁদা মাটির পথ থেকে মানবতার আলোয় ওঠে আসা এক দৃঢ় প্রত্যয়ের গল্প।
বিআরইউ