অভয়নগরের চাঁইয়ের হাটে বর্ষার আমেজ

অভয়নগর (যশোর) প্রতিনিধি: প্রকাশিত: জুলাই ৫, ২০২৫, ০৩:১০ পিএম

বর্ষা মানেই মাছের মৌসুম। আর মাছ ধরার জন্য চাই ফাঁদ। যশোরের অভয়নগরের নওয়াপাড়া বাজারে সেই ফাঁদ—চাঁই—নিয়ে বসেছে জমজমাট হাট। প্রতি সপ্তাহে শনিবার ও মঙ্গলবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে চাঁই বিক্রির ধুম। গ্রামীণ জীবনের একটুকরো ঐতিহ্য ধরে রাখা এই হাট ঘিরে সরগরম হয়ে উঠেছে স্থানীয় জনপদ।

শনিবার (৫ জুলাই) সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, হাটজুড়ে অর্ধশতাধিক বিক্রেতা বাঁশ, নারকেলের কাতা ও প্লাস্টিক দড়ি দিয়ে তৈরি নানা আকৃতির চাঁই নিয়ে বসেছেন। কেউ বসেছেন খড়ের ওপর, কেউ বাঁশের চাঁই সাজিয়ে রেখেছেন ট্রলির পাশে। হালকা বৃষ্টি আর কাদামাটি মেখেই জমে উঠেছে হাট।

চাঁই বিক্রেতা রমেশ দাস বলেন, এই বছরই প্রথম চাঁই বিক্রি করতে এসেছি। এক কুড়ি চাঁই বিক্রি করছি সাড়ে তিন হাজার টাকায়। বানাতে খরচ পড়ে প্রায় এক হাজার টাকা।

ফুলতলা উপজেলার জামিরাগ্রাম থেকে আসা পাইকারি বিক্রেতা আজাহার গাজী জানান, চাঁইয়ের চাহিদা এখন বেশি। এখানে হাটের খাজনাও তুলনামূলক কম। শনিবার-মঙ্গলবার এখানে, রোববার-বুধবার ফুলতলায় হাটে বসি।

নওয়াপাড়া বাজারের ধানহাটের ইজারাদার কামাল হোসেন বলেন, প্রায় একশ বছর ধরে এখানে চাঁইয়ের হাট বসে আসছে। আশপাশের জেলা থেকেও অনেকে এখানে আসেন। এটা আমাদের ঐতিহ্য।

চাঁইয়ের মতো পরিবেশবান্ধব ফাঁদের ব্যবহার বাড়াতে উৎসাহিত করছেন মৎস্য কর্মকর্তারাও। অভয়নগর উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মো. আমিনুল হক বলেন, ‘চাঁই আমাদের দেশি ঐতিহ্যের অংশ। বাঁশ আর দড়ি দিয়ে তৈরি এসব ফাঁদ প্রাকৃতিক পরিবেশেরও ক্ষতি করে না। তবে চায়না দুয়ারী বা চায়না জালের মতো অবৈধ ফাঁদ ব্যবহার করলে অভিযান চালিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

বিআরইউ