মহেশপুর থানার ওসিকে প্রত্যাহার, তদন্ত কমিটি গঠন

মহেশপুর (ঝিনাইদহ) প্রতিনিধি প্রকাশিত: জুলাই ৭, ২০২৫, ০৪:২৮ পিএম

স্ত্রী পরিচয়ে এক নারীকে সঙ্গে নিয়ে যশোর পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) রেস্ট হাউসে অবস্থান এবং পরে ছাত্রদল নেতাদের হাতে হাতেনাতে ধরা পড়ার ঘটনায় ঝিনাইদহের মহেশপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলামকে প্রত্যাহার করেছে জেলা পুলিশ। একইসঙ্গে ঘটনাটি তদন্তে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত ৩০ জুন সন্ধ্যায় ওসি সাইফুল ইসলাম যশোর পাউবোর পুরাতন রেস্ট হাউসের ‘কপোতাক্ষ’ কক্ষে উঠেছিলেন। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, তিনি সন্ধ্যা ৬টা ১০ মিনিটে এক নারীকে সঙ্গে নিয়ে সেখানে প্রবেশ করেন। খবর পেয়ে জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গোলাম হাসান সনি তার সহযোগীদের নিয়ে রেস্ট হাউসে উপস্থিত হন।

পরে কক্ষের দরজায় ধাক্কাধাক্কির একপর্যায়ে ওসি সাইফুল ইসলাম বাইরে বেরিয়ে এলে তাঁকে টেনেহিঁচড়ে আবার ঘরের ভেতরে নিয়ে যান ছাত্রদল নেতারা। ওই সময় বাকবিতণ্ডা, ধস্তাধস্তি এবং কিছু ভাঙচুরের ঘটনাও ঘটে। ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনা শুরু হয়। এরপরই জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে ওসি সাইফুল ইসলামকে তাৎক্ষণিকভাবে প্রত্যাহার করা হয়।

রেস্ট হাউসের কেয়ারটেকার মিজানুর রহমান জানান, ওসি নিজে এসে স্ত্রী পরিচয়ে এক নারীকে নিয়ে কক্ষটি ভাড়া নেন। কিছুক্ষণ পর স্থানীয় কিছু লোক এসে দরজায় ধাক্কাধাক্কি শুরু করেন। একপর্যায়ে দরজা খোলা হলে ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটে।

পাউবো যশোরের নির্বাহী প্রকৌশলী পলাশ কুমার ব্যানার্জি বলেন, “ঝিনাইদহ পানি উন্নয়ন বোর্ডের চিঠির ভিত্তিতে কক্ষ বরাদ্দ দেওয়া হয়। অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাটি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী খতিয়ে দেখছে।”

ঘটনার বিষয়ে ওসি সাইফুল ইসলাম বলেন, “কোনো অনৈতিক কিছু ঘটেনি। আমি যশোরে ব্যক্তিগত কাজে এসেছিলাম। পরিচিত নারী বন্ধুটিকে সঙ্গে নিয়ে রেস্ট হাউসে উঠেছিলাম। এ সময় কিছু ছাত্রনেতা এসে ‘স্বাভাবিক কথাবার্তা’ বলে চলে যান। আমার ভাবমূর্তি নষ্ট করতে পরিকল্পিতভাবে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।”

অন্যদিকে জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গোলাম হাসান সনি বলেন, “স্থানীয়দের কাছ থেকে ‘অসামাজিক কর্মকাণ্ড’-এর খবর পেয়ে সেখানে যাই। তবে আমি কোনো নারীকে দেখিনি।” যদিও সিসিটিভি ফুটেজে নারীসহ ওসি সাইফুল ইসলামের উপস্থিতি স্পষ্টভাবে দেখা গেছে।

ঘটনার পর মহেশপুরসহ জেলাজুড়ে বিষয়টি নিয়ে নানা গুঞ্জন চলছে।

ঝিনাইদহের পুলিশ সুপার মনজুর মোর্শেদ বলেন, “ঘটনার পরপরই ওসি সাইফুল ইসলামকে প্রত্যাহার করা হয়েছে এবং একটি তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্তে দোষী প্রমাণিত হলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

ইএইচ