মির্জাগঞ্জে সড়ক সংস্কারের দাবিতে গর্তে মাছ অবমুক্ত করে অভিনব প্রতিবাদ

মির্জাগঞ্জ (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি প্রকাশিত: জুলাই ৩১, ২০২৫, ০৫:৪১ পিএম

ভাঙাচোরা সড়ক সংস্কারের দাবিতে জমে থাকা পানিতে মাছ অবমুক্ত করে অভিনব প্রতিবাদ জানিয়েছেন পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জের কয়েকজন যুবক।

বুধবার “বেকার যুবকদের উদ্যোগে কর্মসংস্থান সৃষ্টি, আমিষের ঘাটতি পূরণ এবং বাংলাদেশের অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করতে - মহাসড়কে মাছ চাষ কর্মসূচি” শিরোনামে ব্যানার টানিয়ে বরিশাল-বাকেরগঞ্জ-কাঠাতলী-সুবিদখালী-চান্দখালী-বরগুনা মহাসড়কের মির্জাগঞ্জ উপজেলার কলেজ রোড এলাকায় এই প্রতীকী কর্মসূচি পালন করেন তারা।

সড়কের গর্তে কার্প জাতীয় মাছ অবমুক্তের মাধ্যমে যুবকরা সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণের প্রয়াস চালান। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকেও অনেকেই এ ঘটনার ছবি ও ভিডিও পোস্ট করে প্রতিবাদ জানান।

উপজেলার সুবিদখালী কলেজ রোড এলাকা থেকে উপজেলা পরিষদ পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার সড়কে বড় বড় গর্ত তৈরি হয়ে পড়েছে পুকুরের মতো। মাঝে মাঝে সড়ক ও জনপদ বিভাগ এসব গর্ত ইট ফেলে ভরাট করলেও টানা বৃষ্টিপাত ও ভারী যানবাহনের কারণে তা অকার্যকর হয়ে পড়ে।

স্থানীয় সূত্র জানায়, কোরবানির ঈদের আগে দায়সারাভাবে কিছুটা সংস্কার কাজ করা হলেও কয়েক মাসের মধ্যেই কার্পেটিং উঠে গিয়ে পুনরায় খানা-খন্দের সৃষ্টি হয়েছে। এতে করে জনদুর্ভোগ আরও বেড়েছে।

রিকশাচালক মো. সত্তার বলেন, “এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন সরকারি কর্মকর্তারা যাতায়াত করলেও সংস্কারের কোনো উদ্যোগ চোখে পড়ে না। বিশেষ করে বেতাগী-সুবিদখালী-পায়রাকুঞ্জ-পটুয়াখালী সড়কের অবস্থা আরও করুণ। মনোহরখালী ফেরিঘাট পর্যন্ত কোনো অটোরিকশা যেতে চায় না, গেলেই দুর্ঘটনার ঝুঁকি। অতিরিক্ত ভাড়াতেও চালকরা যেতে অনিচ্ছুক।”

প্রতিবাদকারী যুবক সাইফুল খান সিয়াম ও মোহাম্মদ জাহিদ হাসান বলেন, “আমাদের এই কর্মসূচির উদ্দেশ্য ছিল একটি জরুরি সমস্যার প্রতি দায়িত্বশীলদের দৃষ্টি আকর্ষণ। দীর্ঘদিন ধরে এই মহাসড়কের করুণ অবস্থা এ অঞ্চলের মানুষের নিত্যদিনের দুর্ভোগের কারণ। খানাখন্দে পানি জমে দুর্ঘটনার আশঙ্কা বাড়িয়ে তুলছে।”

তারা আরও বলেন, “জেলা শহর পটুয়াখালীর সঙ্গে যোগাযোগের একমাত্র এই সড়ক জনগণের জীবনযাত্রা সহজ করার কথা ছিল। কিন্তু এখন সেটি অব্যবস্থাপনার প্রতিচ্ছবি। সড়কে মাছ চাষের প্রতীকী প্রতিবাদের মাধ্যমে আমরা বোঝাতে চেয়েছি—যদি দ্রুত সংস্কার না করা হয়, তবে এই সড়কগুলো যান চলাচলের বদলে মাছ চাষের জমিন হয়ে উঠবে। আশা করি, আমাদের এই ব্যতিক্রমী প্রতিবাদে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সজাগ হবে।”

এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে মির্জাগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. তরিকুল ইসলামের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি সাড়া দেননি। ফলে তার মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

ইএইচ