সাদা পাথর লুটের ঘটনায় দেশজুড়ে আলোচনার মধ্যে সিলেটের নতুন জেলা প্রশাসক হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেছেন মো. সারোয়ার আলম।
বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টায় তিনি জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে পৌঁছালে ফুল দিয়ে বরণ করে নেন জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা।
পরে তিনি পাবলিক প্রকিউরমেন্ট বিধিমালা বিষয়ক কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন। এ সময় সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার খান মো. রেজা উন নবীসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
ভেজালবিরোধী অভিযানে দেশব্যাপী আলোচিত প্রশাসনিক কর্মকর্তা সারোয়ার আলমকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে সিলেটের জেলা প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। এর মধ্য দিয়েই সিলেটে তার জেলা প্রশাসক হিসেবে প্রশাসনিক যাত্রার সূচনা হলো।
২৭তম বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তা সারোয়ার আলম ২০০৮ সালে সরকারি চাকরিতে যোগ দেন। র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে ভেজালবিরোধী অভিযানে দেশব্যাপী খ্যাতি অর্জন করেন তিনি। সাধারণ মানুষের আস্থা ও প্রশংসা কুড়িয়ে হয়ে ওঠেন পরিচ্ছন্ন প্রশাসনের প্রতীক। সর্বশেষ তিনি প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপসচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন।
তবে সিলেটে যোগদানের পর তার সামনে রয়েছে নানা চ্যালেঞ্জ।
সম্প্রতি পাথর লুট ও অবৈধ খনন নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক তৈরি হয়েছে। বিভিন্ন সময়ে অভিযান হলেও মূল হোতাদের বিচারের মুখোমুখি করা যায়নি বলে প্রশ্ন উঠেছে। এছাড়া সিলেটের অন্যতম প্রাণকেন্দ্র পর্যটন খাত দীর্ঘদিন ধরেই অনিয়ম, দখল ও পরিবেশ ধ্বংসের অভিযোগে জর্জরিত। টিলাগড়া থেকে জাফলং কিংবা সাদা পাথর—প্রকৃতির অপার সৌন্দর্যের এই এলাকাগুলোতে শৃঙ্খলা ফেরানোও বড় চ্যালেঞ্জ।
অন্যদিকে দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক সংকটের প্রভাব সিলেটের বাজারেও পড়েছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য ও সবজির দামে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। সাধারণ মানুষ ভোগান্তিতে থাকলেও কার্যকর মনিটরিং ও টেকসই সমাধান এখনো অধরা।
এসব সংকট মোকাবিলা করেই সারোয়ার আলম তার প্রশাসনিক জীবনের নতুন অধ্যায় শুরু করতে যাচ্ছেন। তাকে ঘিরে সিলেটবাসীর প্রত্যাশা—ভেজালবিরোধী অভিযানের মতো এবারও দৃঢ় পদক্ষেপ দেখা যাবে পাথর লুট রোধ, পর্যটন খাতের শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা এবং বাজার ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা আনতে।
এদিকে উপসচিব পদে পদোন্নতি পাওয়ার পর গত ১৩ আগস্ট রাতে নিজের ফেসবুক আইডিতে দেওয়া এক পোস্টে সারোয়ার আলম লিখেন—“আলহামদুলিল্লাহ্। সকল প্রশংসা মহান আল্লাহর, যিনি সর্বোত্তম ফয়সালাকারী। তিনবার বঞ্চিত হওয়ার পর আজ উপসচিব পদে পদোন্নতি পেলাম।”
প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের ৭ মার্চ প্রশাসনের ৩৩৭ জন সিনিয়র সহকারী সচিবকে উপসচিব পদে পদোন্নতি দেয় সরকার। তবে আলোচিত এ কর্মকর্তা সারোয়ার আলম সে সময় পদোন্নতিবঞ্চিত হয়েছিলেন।
ইএইচ