পাকুন্দিয়ার এসিল্যান্ড মামুন সরকারের বিদায়

এম এ হান্নান, পাকুন্দিয়া (কিশোরগঞ্জ) প্রকাশিত: আগস্ট ২১, ২০২৫, ০২:৫২ পিএম

কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ার জনবান্ধব এসিল্যান্ড মামুন সরকার বদলি জনিত কারণে বিদায় নিয়েছেন। 

বুধবার রাতে তিনি নতুন কর্মস্থলের উদ্দেশ্যে রওনা হন।

জানা গেছে, তিনি ফরিদপুর জেলার সালথা উপজেলায় সহকারী কমিশনার (ভূমি) হিসেবে যোগদান করবেন।

এর আগে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত পাকুন্দিয়া উপজেলা প্রশাসন, অফিসার্স ক্লাব, উপজেলা ভূমি অফিস, পাকুন্দিয়া পৌরসভা ও পাকুন্দিয়া থানা আয়োজিত পৃথক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তাকে বিদায় জানানো হয়। তাঁর চলে যাওয়ার খবরে দিনভর স্থানীয়রা তাকে বিদায় জানাতে ভিড় করেন।

মামুন সরকার পাকুন্দিয়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। পাশাপাশি তিনি পাকুন্দিয়া পৌর প্রশাসকের দায়িত্বও সামলান। গত ১০ আগস্ট তার বদলির আদেশ দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি হয়। তিনি টাঙ্গাইলের ভুয়াপুর উপজেলার বাসিন্দা। এর আগে পাবনা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে কর্মরত ছিলেন।

গত বছরের ১১ জুন তিনি পাকুন্দিয়ায় এসিল্যান্ড হিসেবে যোগ দেন। অল্প সময়ের মধ্যেই সাধারণ মানুষের আস্থা অর্জন করেন তিনি। উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড ও সেবামূলক কার্যক্রমে রেখে গেছেন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা।

উপজেলা ভূমি অফিস সূত্রে জানা যায়, আইনশৃঙ্খলা রক্ষা, মাদকবিরোধী অভিযান, ব্রহ্মপুত্র নদ থেকে অবৈধ বালু উত্তোলন রোধ, বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ, সড়ক পরিবহন ও পরিবেশ রক্ষাসহ বিভিন্ন বিষয়ে তিনি প্রায় ৭০টির বেশি মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেছেন। মাত্র ১৪ মাসে প্রায় ৯ হাজার ৫০০ নামজারি মামলা নিষ্পত্তি করেন, যা গড়ে প্রতি মামলার নিষ্পত্তি সময় ১৪ দিন। এছাড়া ৭০০-এর বেশি মিস মোকদ্দমা নিষ্পত্তি, সরকারি খাস জমি উদ্ধার ও অবৈধ দখল উচ্ছেদে কার্যকর ভূমিকা রাখেন তিনি।

পৌর প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে নাগরিক সেবা নিশ্চিত করতে তিনি ছিলেন বিশেষভাবে সক্রিয়। নাগরিকত্ব সনদ, জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন, ওয়ারিশ সনদসহ সেবাগুলো হয়রানি ছাড়া নাগরিকদের হাতে পৌঁছে দেন।

পৌরসভার নাগরিক দুলাল মিয়া বলেন, “এসিল্যান্ড মহোদয় পৌর প্রশাসক হিসেবে যোগদানের পর পৌরসভার উন্নয়নে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এনেছেন। বাজারের ড্রেন ও রাস্তাঘাট সংস্কারসহ নতুন রাস্তা নির্মাণের মাধ্যমে পৌরবাসীকে উল্লেখযোগ্য সেবা দিয়েছেন।”

বিদায়ী এসিল্যান্ড মো. মামুন সরকার বলেন, “পাকুন্দিয়ায় যোগদানের পর চেষ্টা করেছি মানুষ যাতে হয়রানি ছাড়াই ভূমি সেবা পায়। হয়তো সবসময় প্রত্যাশামতো সেবা দিতে পারিনি, তবে কোনো ধরনের গাফিলতি করিনি। পাকুন্দিয়ার মানুষের ভালোবাসা আমাকে আজীবন ঋণী করে রাখল। এসিল্যান্ড ও পৌর প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব পালনে যদি কারও কষ্ট দিয়ে থাকি, ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। পাকুন্দিয়ার উত্তরোত্তর সাফল্য কামনা করছি।”

ইএইচ