৫ লাখের বেশি কিনতে লাগবে আয়করের তথ্য

নয়া শর্তে ক্রেতাবিমুখ সঞ্চয়পত্র

অর্থনৈতিক প্রতিবেদক প্রকাশিত: আগস্ট ১, ২০২২, ০৭:২২ পিএম

সঞ্চয়পত্র কিনতে আয়কর দাখিলের তথ্য বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। পাঁচ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগে এখন থেকে এ তথ্য লাগবে। এ ছাড়া ঘোষণার বাইরে সঞ্চয়পত্র থাকলে রয়েছে জেল-জরিমানার বিধান। অতিমাত্রায় সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ নিরুৎসাহিত করতে এমনসব শর্ত দিয়েছে সরকার। এতে করে সঞ্চয়পত্র বিক্রির পরিমাণ কমে গেছে। আগের তুনলায় ঋণও নেমে এসেছে প্রায় অর্ধেকে।

জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের সর্বশেষ হালনাগাদ প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী সদ্য সমাপ্ত ২০২১-২২ অর্থবছরের (জুলাই-জুন) জাতীয় সঞ্চয় স্কিমগুলোতে এক লাখ ৮ হাজার ৭০ কোটি টাকার সঞ্চয়পত্র জমা বা বিক্রি হয়েছে। এর মধ্যে মূল টাকা ও মুনাফা পরিশোধ করা হয়েছে ৮৮ হাজার ১৫৫ কোটি টাকা। এ সময়ে রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে সঞ্চয়পত্রের গ্রাহকদের ৪০ হাজার ২ কোটি ৬৯ লাখ টাকা মুনাফা বা সুদ পরিশোধ করা হয়েছে। এ অর্থ জনগণের করের টাকা।

তথ্য অনুযায়ী, সঞ্চয়পত্রের মূল টাকা ও মুনাফা পরিশোধের পর এ খাতে সরকারের নিট ঋণ দাঁড়িয়েছে ১৯ হাজার ৯১৫ কোটি ৭৫ লাখ টাকা। যা বাজেট ঘাটতি মেটাতে এখাতের জন্য নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার ৬২ দশমিক ২৩ শতাংশ। গেল ২০২১-২২ অর্থবছরে এ খাত থেকে সরকার নিট ঋণের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩২ হাজার কোটি টাকা।

খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অতিমাত্রায় সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ নিরুৎসাহিত করতে নানা শর্ত জুড়ে দিয়েছে সরকার। সবশেষ পাঁচ লাখ টাকার বেশি সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ থাকলে আয়কর রিটার্নের সনদ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এর আগে গত বছরের সেপ্টেম্বরে ১৫ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগে সুদহার কমানো হয়। আবার ঘোষণার বাইরে সঞ্চয়পত্র থাকলে জেল-জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে। এসব কারণে অনেকে সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ কমিয়েছেন।

একক মাস হিসেবে চলতি বছরের জুন মাসে ১০ হাজার ৭১১ কোটি ৮২ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র জমা হয়েছে। এ সময় মূল অর্থ ও মুনাফা পরিশোধ হয়েছে ৮ হাজার ৯৬২ কোটি ১৯ লাখ টাকা; যার মধ্যে গ্রাহকদের মুনাফা পরিশোধ করা হয়েছে ৩ হাজার ৯৮০ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। ফলে জুন মাসে নিট বিক্রির পরিমাণ দাঁড়ায় এক হাজার ৭৮৯ কোটি ৬৩ লাখ টাকা। চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরে বাজেটে ঘাটতি মেটাতে সঞ্চয়পত্র থেকে ৩৫ হাজার কোটি টাকার ঋণ নেবে বলে ঠিক করেছে সরকার।

পরিসংখ্যানের তথ্য বলছে, গত ২০২০-২১ অর্থবছরে সঞ্চয়পত্র বিক্রি করে ৪২ হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়েছিল সরকার। যা ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে ছিল ১৪ হাজার ৪২৮ কোটি টাকা। এর আগে ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ছিল ৪৯ হাজার ৩৯৩ কোটি টাকা, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ঋণ নেয় ৪৬ হাজার ৫৩০ কোটি টাকা এবং ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ঋণ নিয়েছিল ৫২ হাজার ৪১৭ কোটি টাকা।

সম্প্রতি সঞ্চয়পত্র বিক্রিতে ব্যাংকের মাধ্যমে গ্রাহক যাতে ভোগান্তিতে না পড়ে সে বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ৯ দফা নির্দেশনা দিয়েছে। তাছাড়া শুধুমাত্র প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের ক্ষেত্রে আয়কর রিটার্ন দাখিলের ক্ষেত্রে অব্যাহতি দেওয়া হয়।

 

আরএ/ইএফ