বাংলাদেশর ঋণ বিষয়ে আইএমএফের সাড়া

মো. মাসুম বিল্লাহ প্রকাশিত: আগস্ট ৪, ২০২২, ০৪:০৫ পিএম

নতুন আইএমএফ রেজিলিয়েন্স অ্যান্ড সাসটেইনেবিলিটি ট্রাস্ট (আরএসটি) থেকে বাংলাদেশের ঋণ চাওয়ার চিঠির ভিত্তিতে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) ইতিবাচক সাড়া দিয়েছে। 

সংস্থাটি জানিয়েছে, নতুন ট্রাস্ট চালু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে একটি আরএসটি ঋণের কাজ এগিয়ে যাবে। আগামী কয়েক মাসের মধ্যে ঋণের জন্য খাত ও অর্থের পরিমাণ চূড়ান্ত করা সম্ভব হবে। খবর রয়টার্স।

বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ঝুঁকি লাঘবে বুধবার (৩ আগস্ট) আইএমএফ অর্থসহায়তা দিতে সম্মত হয়েছে। তবে বাংলাদেশ ৪ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার ঋণসহায়তা চাইলেও আইএমএফ কী পরিমাণ অর্থ দিতে রাজি হয়েছে, তা উল্লেখ করেনি।

সংস্থাটি একটি বিবৃতিতে বলেছে, বাংলাদেশকে কী পরিমাণ সহায়তা প্রদান করা হবে, তা এখনও আলোচনা করা হয়নি।

এক বিবৃতিতে আইমএফ উল্লেখ করেছে, বাংলাদেশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আইএমএফ এই ঋণ দিতে সম্মত হয়েছে। ইতিমধ্যে এই ফান্ড থেকে অর্থ পেতে বাংলাদেশ যোগ্যতা অর্জন করেছে।

আগামী মাসের মধ্যে একটি প্রতিনিধিদল বাংলাদেশ সরকারের উচ্চ পর্যায়ে এ নিয়ে বৈঠক করবে এবং এই ঋণের একটি কাঠামো তৈরি করবে। সে সময় ঋণের আকার চূড়ান্ত হবে।

বিবৃতিতে আইএমএফ উল্লেখ করেছে, ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে বাংলাদেশ উদ্যোগী হয়েছে। ইতিমধ্যে বাংলাদেশ সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি গ্রহণ করেছে। মুদ্রা বিনিময় হারও নমনীয় করেছে।

তাছাড়া বাংলাদেশ অপ্রয়োজনীয় এবং জ্বালানি সংশ্লিষ্ট আমদানি কমাতে সাময়িক বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। বিদ্যুতের চাহিদা কমিয়ে আনার উদ্যোগ নিয়েছে। আর্থিক ঝুঁকিতে থাকা মানুষের জন্য ব্যয় বাড়িয়েছে। 

শুধু বাংলাদেশই নয়, বিশ্বের বহু দেশ এখন অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে যাচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে বাংলাদেশ এমনিতেই দীর্ঘ মেয়াদি চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছে।

সেইসঙ্গে হঠাৎ তৈরি হওয়া এসব নতুন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে সামস্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা হুমকিতে পড়তে পারে। আরএসটি তহবিল এই দীর্ঘ মেয়াদি ঝুঁকি মোকাবিলায় সহায়তা করবে। 

আরএসটি তহবিল থেকে আইএমএফের সদস্য দুই-তৃতীয়াংশ দেশ ঋণ নেওয়ার যোগ্যতা অর্জন করেছে তার মধ্যে বাংলাদেশও রয়েছে।

এদিকে বৃহস্পতিবার (৪ আগস্ট) সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক জানান, সক্ষমতা বিবেচনায় আইএমএফ বাংলাদেশকে ঋণ দিতে রাজি হয়েছে।

উল্লেখ্য, আইএমএফ এই তহবিলটি ২০২১ সালে তৈরি করা হয়। করোনার ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে সদস্য দেশগুলোকে দীর্ঘ মেয়াদে সহায়তা করতে প্রাথমিক ভাবে ৬৫ হাজার কোটি ডলারের তহবিল ঘোষণা করা হয়েছিল। 

নিম্ন-আয়ের দেশগুলোর জন্য শূন্য সুদের এই তহবিল ১০ বছর রেয়াতকাল এবং ২০ বছর মেয়াদে পরিশোধ করার সুযোগ রয়েছে। 

১ হাজার ২০০ ডলারের ওপর মাথাপিছু আয় রয়েছে এমন দেশগুলো ঋণের জন্য আবেদন করতে পারে। তবে অর্থনীতির ঝুঁকি কমাতে উদ্যোগী রয়েছে কি না, সে বিষয়গুলোও ঋণ দেওয়ার আগে নিশ্চিত করতে হবে। অর্থনৈতিক ঝুঁকি হ্রাস করার পাশাপাশি জলবায়ু সংশ্লিষ্ট কর্মসূচি বাস্তবায়নে এই তহবিল থেকে ঋণ দেওয়া হয়।

আইএমএফ উল্লেখ করেছে, বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকটের প্রেক্ষাপটে অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেরও অবস্থার দ্রুত অবনতি হচ্ছে। ফলে অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।

বাংলাদেশের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে এই বাহ্যিক অর্থনৈতিক আঘাত মোকাবিলা করতে এই তহবিল সহায়তা করবে।


আমারসংবাদ/টিএইচ