ব্যাংকের অবস্থা কোথায় খারাপ লিখিত দিন, খতিয়ে দেখবো: অর্থমন্ত্রী

মো. মাসুম বিল্লাহ প্রকাশিত: নভেম্বর ৩০, ২০২২, ০২:৪৪ পিএম

অর্থমন্ত্রী আ হ মুস্তাফা কামাল বলেছেন, ব্যাংকের খারাপ অবস্থা চিহ্নিত করে লিখিত আকারে জানালে তা খতিয়ে দেখবো। আমরা সব কিছুতেই পরিবর্তন এনেছি। এমনকি আগে যেভাবে বাজেট পেশ করতাম সেখানেও পরিবর্তন আনা হয়েছে। সব কিছু ডিজিটাল করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৯ নভেম্বর) দুপুরে সচিবালয়ের অর্থ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে সচিবালয়ে গৃহ নির্মাণ ঋণ ব্যবস্থাপনা মডিউলেল শুভ উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিব ফাতিমা ইয়াসমিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব শেখ মোহাম্মদ সলীম উল্লাহ, হিসাব মহানিয়ন্ত্রক মো. নুরুল ইসলাম এবং অগ্রণী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুরশেদুল কবীর।

ইসলামী ব্যাংকসহ কয়েকটি ব্যাংকের ঋণ জালিয়াতি নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, ব্যাংকের অবস্থা কোথায় খারাপ লিখিত দিয়ে যান, আমরা খতিয়ে দেখব। এছাড়া সরকার সার্বজনীন পেনশন স্কিম করেছে তা দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে।

আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, আমি নিজেও একজন অডিটর ছিলাম। তখন আমরা একটাই অভিযোগ পেতাম। সেটা হলো সরকার থেকে আমরা যে সব টাকা পয়সা পাই। বিশেষ করে পেনশনের টাকার জন্য মাস শেষে লাইন ধরে বসে থাকতেন সারা দিন। তারপরও পেনশন পাওয়া যেতে না। তখন আমি ভাবতাম এটা কি করে সম্ভব। কেন পেনশন পাওয়া যাবে না। কারণ তখন সব কিছু ছিল ম্যানুয়াল। অটোমেশন না থাকায় এটা হতো আমরা পেনশনের বিল পেতাম না। এখন সেটা হচ্ছে না। এজন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানাই।

তিনি বলেন, আমরা সবাই জানি ম্যানুয়াল ও ডিজিটাল সিস্টেমের মধ্যে পার্থক্য কি। ডিজিটাল সিস্টেমে কিছু সুবিধা থাকে সেগুলো সবাই পাবে। মোটা দাগে বলতে পারি ডিজিটাল সিস্টেম হলে আমরা যে আবেদন করি সেগুলো দ্রুত নিষ্পত্তি হবে। আগে যদি লাগতো এক মাস এখন সেটা হবে ১৫ দিনে। আবেদনকারীরা স্বল্প সময়ের মধ্যে ঋণ ও সুদে ভর্তুকি পাবেন। যেখানে ঋণ পাওয়ার পাবেন যেখানে সুদে ভর্তুকি পাওয়ার কথা সেটা সেখানে পাবেন। আবেদনগুলো ট্র্যাকিং করতে পারবো এছাড়া আবেদন কোথায় কোথায় আছে সেটা জানা যাবে। সবচেয়ে বড় কথা স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা হবে। যেহেতু আমরা পুরোপুরি অটোমেশন হয়ে যাচ্ছি ফলে আমরা সহজেই বুঝতে পারবো কোথায় কি করণীয়।

তিনি বলেন, গৃহ নির্মাণ ঋণের জন্য এখন যে ব্যবস্থা চালু রয়েছে তাতে দেখা যায় অধিকাংশ সময়ে একজন আবেদনকারীর আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন বেশ সময় লেগে যায়। আবেদনের অবস্থা কি বা কোন পর্যায়ে আছে সেটা জানারও কোনো সুযোগ আবেদনকারীর থাকে না। ঋণ আবেদন প্রক্রিয়া ডিজিটাইজ করা হলে এ ধরনের সমস্যা দূর হবে বলে আশা করা যায়। ঋণ আবেদন প্রক্রিয়া ডিজিটাইজ করা হলে, আবেদনকারী সরাসরি অনলাইনে অর্থ বিভাগে আবেদন করতে পারবেন। ব্যাংক ও মন্ত্রণালয় মিলে খুব অল্প সময়ের মধ্যে অর্থ বিভাগ থেকে সুদ ভর্তুকির মঞ্জুরি আদেশ জারি করা সম্ভব হবে।

অর্থমন্ত্রী বলেন, আমি বর্তমান গভর্নরের সঙ্গে আলোচনা করেছি যেভাবেই হোক আমরা অটোমেশন করবো। আমরা সব কিছুতেই পরিবর্তন নিয়ে এসেছি। এমনকি আমরা আগে যেভাবে বাজেট পেশ করতাম সেখানেও পরিবর্তন আনা হয়েছে। সব কিছুতে ডিজিটাল করা হচ্ছে। এটা সম্ভব হয়েছে অর্থ বিভাগের কারণে অর্থ মন্ত্রণালয় ও অর্থ বিভাগসহ সংশ্লিষ্ট সবাই মিলে এ কাজটি করেছেন, এজন্য তাদের ধন্যবাদ জানাই।

অর্থমন্ত্রী মুস্তফা কামাল বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুসারে সরকারি কর্মচারীদের জন্য আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ৩০ জুলাই ২০১৮ তারিখে ‘সরকারি কর্মচারীদের জন্য ব্যাংকিং ব্যবস্থার মাধ্যমে গৃহনির্মাণ ঋণ প্রদান নীতিমালা’ প্রণয়ন করা হয়। বর্তমানে সরকারি কর্মচারী, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের শিক্ষক/কর্মচারী এবং প্রধান বিচারপতি ও সুপ্রিম কোর্টের বিজ্ঞ বিচারকদের জন্য গৃহ নির্মাণ ঋণ কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

এবি