বাংলাদেশের ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং ডিজিটাল পেমেন্ট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর বড় ধরনের সাইবার হামলার আশঙ্কায় সতর্কতা জারি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংকের ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশনস টেকনোলজি (আইসিটি) বিভাগ থেকে এক চিঠির মাধ্যমে এ সতর্কতা জারি করা হয়।
চিঠিতে জানানো হয়েছে, দেশের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরিকাঠামো (CII), ব্যাংক, আর্থিক খাত, স্বাস্থ্যসেবা, সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো সম্ভাব্য সাইবার হামলার ঝুঁকিতে রয়েছে। বিভিন্ন উৎস থেকে এমন আশঙ্কার তথ্য পাওয়ায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক তাৎক্ষণিকভাবে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে।
চিঠিতে দেশের সব তফসিলি ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং পেমেন্ট সার্ভিস প্রোভাইডারদের উদ্দেশ্যে মোট ১৪টি নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, যা দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য বলা হয়েছে।
নির্দেশনাগুলোর মধ্যে রয়েছে
এছাড়া, ডেটা স্থানান্তর, সংরক্ষণ ও প্রক্রিয়াকরণে এনক্রিপশন বাধ্যতামূলক করার পাশাপাশি, গুরুত্বপূর্ণ সব সিস্টেমে মাল্টি-ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন (MFA) চালুর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আধুনিক সাইবার সিকিউরিটি টুলস ব্যবহার, এন্ডপয়েন্ট ডিটেকশন অ্যান্ড রেসপন্স (EDR), এবং অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যারের হালনাগাদ ও কার্যকারিতা নিশ্চিত করার দিকেও গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, যেকোনও সম্ভাব্য হামলা দ্রুত মোকাবিলায় ইনসিডেন্ট রেসপন্স প্ল্যান এবং বিশেষায়িত টিম প্রস্তুত রাখতে হবে। সন্দেহজনক লগইন, ফাইল পরিবর্তন বা এক্সটারনাল সংযোগ মনিটর করে প্রয়োজন হলে তা কর্তৃপক্ষকে অবহিত করতে হবে।
রিমোট এক্সেস, VPN এবং প্রিভিলেজড অ্যাকাউন্ট ব্যবস্থাপনায় বাড়তি সতর্কতা অবলম্বনের পাশাপাশি নিয়মিত পর্যালোচনা করার নির্দেশনাও রয়েছে। একই সঙ্গে ২৪ ঘণ্টা নিরাপত্তা মনিটরিং সেন্টার পরিচালনার জন্য পর্যাপ্ত জনবল নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।
সিস্টেমের স্থায়িত্ব ও নিরবচ্ছিন্নতা বজায় রাখতে লোড ব্যালান্সার স্থাপন এবং বিকল্প পরিকল্পনা প্রস্তুতের পাশাপাশি বিজনেস কনটিনিউটি প্ল্যান (BCP) ও ডিজাস্টার রিকভারি প্ল্যান (DRP) হালনাগাদ করে তা বাস্তবায়নের ওপরও জোর দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, এসব পদক্ষেপের মূল লক্ষ্য হলো—সম্ভাব্য সাইবার হামলা প্রতিরোধ, ক্ষয়ক্ষতি সীমিত করা এবং ঝুঁকি মোকাবেলায় তাৎক্ষণিক ও কার্যকর ব্যবস্থা নিশ্চিত করা। এখনই যথাযথ পদক্ষেপ না নিলে দেশের আর্থিক খাতে বড় ধরনের বিঘ্ন দেখা দিতে পারে। তাই সময়ক্ষেপণ না করে অবিলম্বে প্রয়োজনীয় সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট সব প্রতিষ্ঠানের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।
ইএইচ