চবিতে ছাত্রী হেনস্তা: ব্যবস্থা নিতে ছাত্র অধিকার পরিষদের আল্টিমেটাম 

ঢাবি প্রতিনিধি প্রকাশিত: জুলাই ২১, ২০২২, ০৬:৪২ পিএম

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রীকে যৌন নিপীড়ন এবং ছাত্রলীগ কর্তৃক নির্যাতিত ছাত্রীকে বাধা দেওয়ার প্রতিবাদ জানিয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ, কেন্দ্রীয় কমিটি।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রীকে যৌন নিপীড়নের ঘটনায় দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছে ছাত্র অধিকার পরিষদের নেতারা।

বৃহস্পতিবার (২১ জুলাই) বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

এ অনুষ্ঠানে ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি বিন ইয়ামীন মোল্লা বলেন, "ছাত্রলীগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে সন্ত্রাস, চাদাবাজী ও ধর্ষণের আখড়া বানিয়েছে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে একজন ছাত্রীকে শ্লীলতাহানি করে ৫ জন মিলে তার ভিডিও ধারণ করেছে। 

চবি শাখা ছাত্রলীগের নেতারা সেই ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করছে। প্রক্টরের কাছে অভিযোগ দিতে গেলে চবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি রুবেল বাধা প্রদান করে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা এই নিপীড়নের বিরুদ্ধে যে আন্দোলন করছে, আমরা তাদের সঙ্গে আছি। 

২৪ ঘণ্টার মধ্যে এই কালপ্রিটদের গ্রেপ্তার করে শাস্তির আওতায় আনা না হলে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রতিবাদের অগ্নিস্ফুলিঙ্গ জ্বলে উঠবে।  

ছাত্রলীগের এক সময়ের গৌরবউজ্বল ইতিহাস থাকলেও আজ তারা সন্ত্রাসী চাঁদাবাজী আর ধর্ষণের যে মহামারী সারা দেশে ছড়িয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ যুদ্ধ গড়ে তোলা এখন সকলের নৈতিক দায়িত্ব হয়ে দাড়িয়েছে।  

প্রধানমন্ত্রীকে বলতে চাই, আমাদের জন্য অত্যন্ত উদ্বেগের একটি হচ্ছে আপনি একজনকে শিক্ষামন্ত্রী বানিয়েছেন যার নামে বিশ্ববিদ্যালয়ের জায়গা নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ উঠে। এমন একজনকে শিক্ষা উপমন্ত্রী বানিয়েছেন যার অনুসারীরা বিশ্ববিদ্যালয়ে চাঁদাবাজী আর মাদকের সিন্ডিকেট চালায় এবং ধর্ষণের চক্র গড়ে তুলে। 

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের নেতারা টাকা নিয়ে শিক্ষার্থীদের হলে তোলে, জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ে সেঞ্চুরি মানিকের কথা এখনো কেউ ভুলে নাই। দুর্নীতির দায়ে শোভন-রাব্বানীর পতনের কথা মনে আছে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা নির্মাণ কাজে চাঁদাবাজী করতেছে। নিজের সহকর্মীদেরকে কু প্রস্তাব দেয়। 

ধৈর্যের একটা সীমা আছে। আমাদের মা-বোনদের গায়ে হাত দিবে, সেটাও আমরা সহ্য করবো এমনটা কখনো সম্ভব নয়। এই জানোয়ারদের জনসমক্ষে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।

কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম আদীব বলেন,"যে কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রী নির্যাতনের সঙ্গে ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীরা জড়িত থাকে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের নেতা মানিক শতাধিক মেয়ে কে ধর্ষণের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। 

সিলেট এমসি কলেজে গৃহবধূকে দলবদ্ধ ধর্ষণের সঙ্গে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা জড়িত ছিলেন । ২০১৫ সালের ঢাবি ও জাবিতে পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠানে মহিলাদেরকে যৌন নিপীড়নের সঙ্গে ছাত্রলীগ জড়িত ছিল। 

এখন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রীকে যৌন নিপীড়নের সঙ্গে জড়িতদের আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তার না করলে সকল ক্যাম্পাস এবং জেলায় আন্দোলনের ডাক দেওয়া হবে।

এ সময় আরো বক্তব্য রাখেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ছাত্র এবং কেন্দ্রীয় কমিটির সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. তরিকুল ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক মো. আকরাম হোসেন, সহ-সভাপতি আসিফ মাহমুদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী নুসরাত জাহান প্রমুখ।

এ সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং কেন্দ্রীয় কমিটির শতাধিক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।


আমারসংবাদ/টিএইচ