জাবিতে জুবায়ের হত্যাকাণ্ডের এক দশক উপলক্ষ্যে আলোচনা সভা

জাবি প্রতিনিধি প্রকাশিত: জানুয়ারি ৯, ২০২৩, ০৯:১৮ পিএম

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) ইংরেজী বিভাগের ছাত্র জুবায়ের হোসেনের হত্যার এক দশক উপলক্ষ্যে তার স্মরণে এক আলোচনা সভার আয়োজন করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রগতিশীল ছাত্রসংগঠনগুলো।

সোমবার (৯ জানুয়ারি) সন্ধ্যা ৬ টায় ‍‍`সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর‍‍` ব্যানারে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন চত্বরে এই সভার আয়োজন করা হয়।  

এসময়ই বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক রায়হান রাইন বলেন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে যে হত্যাকাণ্ডগুলো হয়েছে সেগুলোর কোন বিচার আজ পর্যন্ত হয়নি। পাশাপাশি দেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে ও এক ই পরিস্থিতি। হত্যাকাণ্ডের কোন বিচার হয় নি। জুবায়ের হত্যাকাণ্ডের পর আমরা আন্দোলন করেছি। সেখানেও রক্তপাতের স্বীকার হয়েছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এই অপ্রত্যাশিত ঘটনার পেছনে একটি বেপরোয়া প্রশাসনের হাত ছিল। তখন ক্ষমতাসীন ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের কর্মীদের মধ্য থেকে ভিসি তার পছন্দের কর্মীদের নিয়ে একটি পেটোয়া বাহিনী গড়ে তুলেছিলেন। যাকে আমরা বলতাম ‍‍`ভিসি লীগ‍‍`। এই বাহিনীর নির্যাতনের স্বীকার হয়েছেন ক্যাম্পাসের বহু শিক্ষার্থী।

তিনি আরও বলেন, জুবায়ের হত্যার পর আমাদের করা আন্দোলন যে শিক্ষা দেয় তা যদি আমরা গ্রহণ করে প্রতিবাদের সংস্কৃতি বজায় রাখিবতাহলে আমরা একটি সুস্থ, একাডেমিক ও প্রাকৃতিক ক্যম্পাস আমরা বজায় রাহতে পারব বলে আমার বিশ্বাস।

জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি সৌমিক বাগচী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া অবস্থায় এরকম সন্ত্রাসী বিরোধী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে চিৎকার চেচামেচি করতে হয় তাহলে আমরা কেমন শিক্ষা গ্রহণ করছি তা নিয়ে সন্দিহান। মানুষের মূল্য কথা কখনো পাখির সমান হতে পারে? তা না হলে কিভাবে এই হত্যাকাণ্ডের বিচার পাখি মারার শাস্তির চেয়ে দিগুন হতে পারে? গত এক যুগে দেসের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ৩৯ জন শিক্ষার্থীর জীবন কেড়ে নেয়া হয়েছে। সাধারণ শিক্ষার্থীরা আজ তাদের জীবন নিয়ে শঙ্কিত।

সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট জাবি শাখার সাধারণ সম্পাদক কনোজ কান্তি রায় বলেন, আমরা এমন একটি সমাজ ব্যাবস্থায় বাস করছি যেখানে আমাদের সহজাত বৈশিষ্ট্য ই হয়ে দাঁড়িয়েছে অন্যায় কে প্রশ্রয় দেয়া। যেই সিস্টেম আমাদেরকে ভুলিয়ে দিয়েছে আমাদের অধিকার আদায়ে আমাদেরকে একসাথে লড়তে হবে। অথচ সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষে যারা প্রাণ দিয়েছে তাদেরকে ই আমরা ভুলে গিয়েছি।জুবায়ের সনের ১১ বছরে আমরা তাকে আজ স্মরণ পর্যন্ত করছি না।

উল্লেখ্য, ২০১২ সালের ৮ জানুয়ারি জুবায়েরকে ছাত্রলীগের প্রতিপক্ষের নেতাকর্মীরা ক্যাম্পাসে কুপিয়ে জখম করেন। পর দিন ভোরে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। ২০১৫ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি ঢাকার ৪ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল এ মামলার রায়ে পাঁচ আসামিকে মৃত্যুদন্ড এবং ছয়জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। তবে রায় কার্যকর এর আগে দণ্ডপ্রাপ্ত ৪ আসামি কাঠগড়া থেকে পালিয়ে যায়।

কেএস