বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের আল্টিমেটাম দিলো কুবিসাস

মো. মাসুম বিল্লাহ প্রকাশিত: আগস্ট ৩, ২০২৩, ০৮:১৩ পিএম

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির (কুবিসাস) দৈনিক যায়যায়দিন পত্রিকার বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি ইকবাল মনোয়ারের আইনবহির্ভূত বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের আল্টিমেটাম দিয়ে মানববন্ধন করেছে ক্যাম্পাসে কর্মরত সাংবাদিকরা।

বৃহস্পতিবার (৩ আগস্ট) বেলা সাড়ে ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের গোল চত্বরে বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির ব্যানারে এই মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়।

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আহমেদ ইউসুফ আকাশের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন সভাপতি মুহা. মহিউদ্দিন মাহি, দৈনিক সময়ের আলোর প্রতিনিধি এবিএস ফরহাদ, দৈনিক জনবাণীর প্রতিনিধি আনোয়ার আজম, দৈনিক আলোকিত সকালের প্রতিনিধি গোলাম কিবরিয়া, দৈনিক প্রতিদিনের সংবাদের প্রতিনিধি মঈনুদ্দিন ইরফান, দৈনিক মানবকন্ঠের প্রতিনিধি জুবায়ের রহমান, দৈনিক যুগান্তরের প্রতিনিধি সাঈদ হাসান, শেয়ার বীজের প্রতিনিধি শাহীন আলম, দৈনিক দেশ রূপান্তরের প্রতিনিধি নাঈমুর রহমান রিজভী, দৈনিক আমাদের অর্থনীতির প্রতিনিধি চৌধুরী মাসাবীহ, দৈনিক আমাদের নতুন সময়ের প্রতিনিধি হাসান আল মাহমুদ, দৈনিক স্বদেশ প্রতিদিনের প্রতিনিধি মোহাম্মদ রাজীব, আজকের দৈনিকের প্রতিনিধি তুষার ইমরান, দৈনিক ভোরের ডাকের প্রতিনিধি রকিবুল হাসান, দৈনিক খোলা কাগজের প্রতিনিধি হাসিবুল ইসলাম সবুজ, দৈনিক আনন্দবাজারের প্রতিনিধি চাঁদনী আক্তার, অধিকার পত্রের প্রতিনিধি জাহিদুল ইসলাম, রাইজিং বিডির প্রতিনিধি হেদায়াতুল ইসলাম নাবিদ, আজকের শতাব্দীর প্রতিনিধি হোসাইন মোহাম্মদ, ডাকঘরের প্রতিনিধি শাহীন ইয়াসার।

এসময় আহমেদ ইউসুফ আকাশ বলেন, ইকবালকে বহিষ্কারের আগের দিন উপাচার্য আমাকে তাঁর রুমে ডেকে নিয়ে তাকে সমিতি থেকে বহিষ্কার করার নির্দেশ দেন। এরপর বলেন আমি যদি তাকে সমিতি থেকে বহিষ্কার না করি তাহলে ইকবালকে তিনি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করবেন এবং তাঁকে আইসিটি আইনে মামলা দিবেন। পরেরদিন তিনি ইকবালকে বহিষ্কার করে তাঁর কথার প্রতিফলন ঘটিয়েছেন। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই এবং আইনবহির্ভূত এই বহিষ্কারাদেশ নিঃশর্ত প্রত্যাহারের দাবি জানাই।

দৈনিক সমকালের প্রতিনিধি মুহা. মহিউদ্দিন মাহি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কোনরকম আইনের তোয়াক্কা না করে এবং কোন বিধি না মেনে ইকবালকে বহিষ্কার করেছে। সাংবাদিক সমিতি মনে করে সংবাদ প্রকাশ কোন অপরাধ নয়। যে সংবাদের জন্য ইকবালকে বহিষ্কার করা হয়েছে সে সংবাদের সব তথ্য প্রমাণ আমাদের কাছে রয়েছে। প্রশাসন বলেছে উচ্চপর্যায়ের সভার সিদ্ধান্তের মাধ্যমে তাকে বহিষ্কার করা হয়েছে। কিন্তু কারা আছেন এই উচ্চপর্যায়ের সভায় এবং কোন শৃঙ্খলা ভঙ্গের কারণে ইকবালকে বহিষ্কার করেছেন তার কিছুই উল্লেখ করেননি প্রশাসন। আমরা আজকের মধ্যে এই বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার চাই অন্যথায় আগামী রোববার পুরো বাংলাদেশের সাংবাদিকদের নিয়ে কঠোর আন্দোলন করতে বাধ্য হবো।

মানববন্ধনের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, উপ-উপাচার্য ও কোষাধ্যক্ষ বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।

ইকবালকে বহিষ্কারের নিন্দা জানিয়ে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, তথ্য প্রকাশের কারণে একজন শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা ‘শ্যুট দ্য মেসেঞ্জার’ বা বার্তাবাহককে স্তব্ধ করার চর্চার উদাহরণ। একই সাথে এটি ক্ষমতার অপব্যবহারের পরিচায়ক। যা সম্পুর্ণ  অযৌক্তিক ও অনাকাঙ্খিত। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের উচিত এই প্রতিশোধমূলক ও অগণতান্ত্রিক সিদ্ধান্ত নিঃশর্ত প্রত্যাহার করা।

এদিকো বিষয়টি নিয়ে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় এবং পেশাজীবি সাংবাদিক গঠনের নেতৃত্ব বিবৃতি দিয়েছেন। উপাচার্য অধ্যাপক ড. এএফএম আবদুল মঈনকে আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি (ডুজা)। এছাড়াও জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি, জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাব, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি, শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাব, ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি, ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাব, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি, বাংলাদেশ জার্নালিস্ট ইন ইন্টারন্যাশনাল মিডিয়াসহ বিভিন্ন সংগঠন নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে অনতিবিলম্বে নিঃশর্ত বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের দাবি জানায়।

এইচআর