নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘অঞ্জলি লহ মোর’ ভাস্কর্য ভাঙার প্রতিবাদে শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন

জাককানইবি প্রতিনিধি প্রকাশিত: জুন ১৮, ২০২৫, ১০:০৩ পিএম

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘সংস্কার’–এর নামে বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ শিল্পকর্ম ‘অঞ্জলি লহ মোর’ ভাস্কর্য ভেঙে ফেলার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থীরা। 

এর প্রতিবাদে বুধবার ক্যাম্পাসে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান ও প্রকৌশল অনুষদ এবং পুরাতন কলা অনুষদ ভবনের মাঝামাঝি পুকুরপাড়ে স্থাপিত ভাস্কর্যটি একজন নারীর ‘অঞ্জলি’ দানের ভঙ্গিমায় নির্মিত হয়। খ্যাতনামা নৃত্যশিল্পী, অভিনেত্রী ও শিক্ষক মুনমুন আহমেদের হাতের ভঙ্গিমা থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে ভাস্কর্যটি নির্মাণ করেন শিল্পী মনিন্দ্র পাল। ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে উদ্বোধনের পর এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক পরিচয়ের প্রতীকে পরিণত হয়।

মানববন্ধনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা ভাস্কর্যের পাশেই রঙিন কাগজে নানা স্লোগান লিখে প্রতিবাদ জানান। তাদের দাবির মধ্যে ছিল— ‘শিল্পের উপর আঘাত বন্ধ করতে হবে’, ‘সংস্কৃতির উপর আঘাত বন্ধ করতে হবে’, ‘মূল নকশা অনুযায়ী ভাস্কর্যটি পুনঃনির্মাণ করতে হবে’ ইত্যাদি।

ফোকলোর বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ঐশ্বর্য সরকার বলেন, “এই ভাস্কর্য ভেঙে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শিক্ষার্থীদের মধ্যে দ্বন্দ্ব সৃষ্টি করেছে। একটি শিল্প-সংস্কৃতির উপাদান হিসেবে এর প্রতি আমাদের আবেগ জড়িত। এটি ভেঙে আমাদের সাংস্কৃতিক চেতনায় আঘাত করা হয়েছে। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।”

তিনি আরও বলেন, “ভবিষ্যতে আর কোনো আঘাত এলে অথবা এটি পুনঃনির্মাণ না হলে আমরা বৃহত্তর ছাত্র আন্দোলনের দিকে যাব। জুলাই বিপ্লবের প্রেক্ষাপটেও প্রশাসনের উচিত ছিল শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া। কিন্তু তারা একতরফাভাবে ও স্বৈরাচারী মনোভাব নিয়ে কাজ করেছে।”

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার অধ্যাপক ড. মো. জয়নুল আবেদীন সিদ্দিকী সাংবাদিকদের জানান, “ভাস্কর্যটি যতটুকু ভাঙা হয়েছে, আপাতত ততটুকুই থাকবে। এর থেকে বেশি ভাঙা হবে না। আগামী ২২ জুন আমাদের একটি মিটিং রয়েছে, সেখানে ভাস্কর্যের পুনঃনির্মাণ বা সংস্কার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”

শিক্ষার্থীরা প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন, দ্রুত সময়ের মধ্যে শিল্প ও সংস্কৃতির প্রতি সম্মান জানিয়ে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হোক এবং মূল নকশা অনুযায়ী ভাস্কর্যটি পুনঃনির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হোক। অন্যথায়, তারা আরও জোরালো আন্দোলনের ঘোষণা দেন।

ইএইচ