স্বৈরাচার পতনের স্মরণে জাবিতে গণধিক্কার সমাবেশ

জাবি প্রতিনিধি প্রকাশিত: আগস্ট ১, ২০২৫, ০৭:২০ পিএম

স্বৈরাচার পতনের স্মরণে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে গণধিক্কার সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। 

শুক্রবার বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন কলাভবনের সামনে মহুয়াতলায় এ সমাবেশ আয়োজন করে ‘৩৬ জুলাই স্বৈরাচার হাসিনার পতন দিবস উদযাপন কমিটি–২০২৫’।

সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কামরুল আহসান বলেন, “ফ্যাসিস্ট হাসিনার ছবি নামানোর কাজটি এখন যতটা সহজ মনে হয়, জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থান চলাকালীন সময়ে তা ছিল না। অধ্যাপক শামীমা সুলতানা দেশের ১৮ কোটি মানুষের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটিয়েছেন ছবি নামিয়ে। তার যে স্পিরিট, তা আমাদের ধারণ করতে হবে।”

তিনি আরও বলেন, “মতভিন্নতা থাকতে পারে, কিন্তু বিদ্বেষ চলবে না। যদি থাকে, তবে আমরা পরাজিত শক্তিকে আহ্বান জানাব। আমাদের যেকোনো সমস্যা আলোচনা ও বোঝাপড়ার মাধ্যমে সমাধান করতে হবে।”

সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ভারপ্রাপ্ত ডিন এবং উদযাপন কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. শামছুল আলম। বক্তব্য দেন তুলনামূলক সাহিত্য ও সংস্কৃতি ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ড. শামীমা সুলতানা, শিক্ষার্থী কল্যাণ ও পরামর্শদান কেন্দ্রের পরিচালক অধ্যাপক মো. জামাল উদ্দীন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ. কে. এম. রাশিদুল আলম।

আন্দোলন চলাকালে প্রথম শেখ হাসিনার ছবি নামানোর ঘটনা স্মরণ করে অধ্যাপক শামীমা সুলতানা বলেন, “আমি সবসময় ন্যায়ের পক্ষে কথা বলি। জাহাঙ্গীরনগরে শিক্ষক ও শিক্ষার্থী হিসেবে যেকোনো অন্যায়ের বিরুদ্ধে আমি সোচ্চার থেকেছি। ফ্যাসিস্ট হাসিনা শিক্ষার্থীদের হত্যা করছিলেন। শিক্ষার্থীরা আমার সন্তানের মতো। একজন খুনির ছবি আমি আমার কক্ষে রাখতে পারি না—এই বিবেচনায় আমি সেই ছবি নামিয়েছিলাম। তখন চাকরি বা জীবনের পরোয়া করিনি। আমার বোধ ও সাহস আমাকে সেই সিদ্ধান্ত নিতে সহায়তা করেছে। গত ১৫ বছরে শেখ হাসিনা যা করেছেন, তার প্রতিটি দিনের জন্য আমি তাকে ধিক্কার জানাই।”

অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সভাপতি মেহেদী মামুন। শিক্ষার্থীদের মধ্যে বক্তব্য দেন আব্দুর রশিদ জিতু, তৌহিদ মো. সিয়াম ও মোহাম্মদ সিফাতুল্লাহ। বক্তারা ‘জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থান’ এবং ‘ফ্যাসিবাদবিরোধী চেতনা’কে জাতীয় রাজনীতিতে শক্তভাবে প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানান।

এর আগে সকাল ৭টায় একই স্থানে ‘জুলাই ম্যারাথন’ এবং দিনব্যাপী রক্তের গ্রুপ নির্ণয় কর্মসূচির উদ্বোধন করেন অধ্যাপক ড. মো. শামছুল আলম। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার ড. এ বি এম আজিজুর রহমান, প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. বোরহান উদ্দিনসহ অন্যান্য শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। 

দিনশেষে প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার, মেডেল ও সনদ বিতরণ করেন অধ্যাপক শামছুল আলম।

ইএইচ