যুক্তরাষ্ট্রের পশ্চিমাঞ্চলীয় অঙ্গরাজ্য ক্যালিফোর্নিয়ার গুরুত্বপূর্ণ শহর লস অ্যাঞ্জেলেসে কারফিউ জারি করা হয়েছে। শহরের কেন্দ্রস্থলে চলমান অভিবাসনবিরোধী অভিযানের প্রতিবাদে সহিংসতা ও ভাঙচুর রুখতেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মেয়র কারেন ব্যাস।
বুধবার এক প্রতিবেদনে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
মেয়র ব্যাস জানিয়েছেন, কারফিউ কার্যকর থাকবে স্থানীয় সময় মঙ্গলবার রাত ৮টা থেকে বুধবার সকাল ৬টা পর্যন্ত। তবে পুরো শহরের বদলে কারফিউয়ের আওতায় আনা হয়েছে মাত্র এক বর্গমাইল (প্রায় ২.৬ বর্গকিলোমিটার) এলাকা।
সংবাদ সম্মেলনে মেয়র বলেন, “এই বিক্ষোভের ফলে অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গত রাতেই ২৩টি দোকান লুটপাট করা হয়েছে। শহরের কেন্দ্রস্থলে সর্বত্রই গ্রাফিতি, যা সম্পত্তির বড় ধরনের ক্ষতি করেছে।”
তিনি আরও বলেন, “আপনি যদি ডাউনটাউন এলএ-তে বসবাস না করেন বা কাজ না করেন, দয়া করে ওই এলাকা এড়িয়ে চলুন। কারফিউ ভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
মেয়র ব্যাস আরও ইঙ্গিত দেন যে, এই কারফিউ কয়েকদিন বহাল থাকতে পারে। তবে তিনি জোর দিয়ে বলেন, “পুরো শহর নয়, কেবল একটি ক্ষুদ্র অংশেই এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। মিডিয়ায় যেভাবে তুলে ধরা হচ্ছে, বাস্তবতা তেমন ভয়াবহ নয়।”
আল জাজিরা বলছে, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অবৈধ অভিবাসন বিরোধী অভিযানের বিরুদ্ধে লস অ্যাঞ্জেলেসে টানা পাঁচদিন ধরে বিক্ষোভ চলছে। বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, এই অভিযান জাতিগত বৈষম্য ও ভয়ভীতি ছড়ানোর কৌশল।
এই পরিস্থিতিতে ক্যালিফোর্নিয়ার গভর্নর গ্যাভিন নিউজম কড়া ভাষায় সমালোচনা করেছেন ট্রাম্প প্রশাসনের। তিনি বলেছেন, “প্রেসিডেন্ট জাতীয় নিরাপত্তা বাহিনীকে ব্যবহার করছেন এমনভাবে, যেন তারা কোনও শত্রু দেশের বিরুদ্ধে অভিযান চালাচ্ছে। এটা শক্তি নয়, দুর্বলতা।”
নিউজম বলেন, “যাদের ট্রাম্প টার্গেট করছেন, তারা সন্ত্রাসী নয়—তারা আমাদের সমাজের অল্প আয়ের সাধারণ মানুষ, যারা দিন আনে দিন খায়।”
অন্যদিকে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তার অবস্থানে অটল রয়েছেন। তিনি বলেন, “আমি একজন কমান্ডার-ইন-চিফ হিসেবে এটা কখনোই হতে দেব না। ক্যালিফোর্নিয়ায় যা ঘটছে, তা তৃতীয় বিশ্বের মতো বিশৃঙ্খলার নমুনা।”
ট্রাম্পের এই বক্তব্য এবং অভিযানের জবাবে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন শহর—নিউ ইয়র্ক, শিকাগো, আটলান্টাসহ বহু স্থানে প্রতিবাদ-বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হওয়ার আশঙ্কা করছে বিশ্লেষক মহল।
ইএইচ