ইরানে অবস্থানরত শত শত রুশ বিশেষজ্ঞরা দেশটি ছাড়ছেন না বলে জানিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তেহরানে ইসরায়েলি হামলার আশঙ্কার মধ্যেই তিনি এই বক্তব্য দেন।
বৃহস্পতিবার টিআরটি ওয়ার্ল্ডের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
পুতিন বলেন, আমাদের বিশেষজ্ঞরা বুশেহর পারমাণবিক স্থাপনায় কাজ করছেন, সংখ্যায় প্রায় ২৫০ জন। অন্যান্য ব্যবসায়ী ও প্রকৌশলী মিলিয়ে এই সংখ্যা ৬০০ ছাড়িয়ে যেতে পারে। আমরা সেখান থেকে সরছি না। এটিই কি সমর্থন নয়?
রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন সেন্ট পিটার্সবার্গ আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক ফোরামে (এসপিআইইএফ) এক সংবাদ সম্মেলনে ইরানকে রাশিয়ার সমর্থনের বিষয়ে এ মন্তব্য করেন। তিনি ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে কূটনৈতিক প্রচেষ্টার জন্য তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ানকে ধন্যবাদ জানান।
এদিকে ইরানের পরমাণু প্রকল্পকে রক্ষা করার জন্য প্রস্তাব দিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তিনি বলেছেন, ইরানের সঙ্গে রাশিয়ার সম্পর্ক ভালো। তাই আমরা ইরানকে একটি প্রস্তাব দিয়েছি। যদি ইরান চায়, তাহলে রাশিয়া ইরানের পরমাণু প্রকল্পের কাজ নিজের তত্ত্বাবধানে চালাতে পারে। ইরানের ইউরেনিয়াম যাতে শুধু শান্তিপূর্ণ কাজে ব্যবহার করা হয়, সে বিষয়েও রাশিয়া নজর রাখতে চায়। তবে এ সব কিছু হবে যদি ইরান রাজি হয়।
তিনি আরও জানান, ইরানের বুশেহার শহরে দুটি পারমাণবিক চুল্লি তৈরি হচ্ছে। এ কাজের দায়িত্বে আছেন রাশিয়ার বিজ্ঞানীরা। এ নিয়ে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর সঙ্গেওে ফোনে কথা বলেছেন পুতিন। নেতানিয়াহু জানিয়েছেন, বুশেহারের ওই এলাকা তারা আক্রমণ করবে না।
রাশিয়া কি ইরানকে অস্ত্র দেবে এমন প্রশ্নের জবাবে পুতিন বলেন, জানুয়ারিতে রাশিয়া ও ইরান একটি চুক্তি করেছে। তবে সেই চুক্তিতে অস্ত্র দেওয়ার কথা নেই। তাছাড়া ইরান এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে রাশিয়ার কাছে অস্ত্র চায়নি।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট বলেন, ইরানের নিরাপত্তা আর ইসরায়েলের উদ্বেগ, দুটি বিষয়ই গুরুত্ব দিয়ে দেখতে হবে। শান্তিপূর্ণ উপায়ে ইরান যাতে পরমাণু শক্তি ব্যবহার করতে পারে আর ইসরায়েল যেন তাতে ভীত না হয়- এ দুই বিষয় একসঙ্গে সমাধান করা সম্ভব।
পুতিন ইরানে সরকার পরিবর্তনের বিষয়ে বলেন, ইরানে জটিল রাজনৈতিক প্রক্রিয়া চলছে— আমরা সে বিষয়ে সচেতন। কিন্তু এর মাঝেও জনগণ দেশের রাজনৈতিক নেতৃত্বকে ঘিরে একত্রিত হয়েছে। তিনি এও বলেন, আলোচনার পথ খোলা রাখা উচিত এবং দু’পক্ষের স্বার্থ বিবেচনা করেই সমাধান খুঁজতে হবে।
ইসরায়েল যদি ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনিকে হত্যা করে তবে কী হবে— এই প্রশ্নে পুতিন কৌশলী প্রতিক্রিয়ায় বলেন, আমি শুধু শুনছি, কিন্তু এই বিষয়ে কোনো আলোচনা করতে চাই না।
ইএইচ